সাফ অনূর্ধ্ব–২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম ম্যাচেই শ্রীলঙ্কাকে ৯–১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। আজ ঢাকার কিংস অ্যারেনায় ম্যাচের প্রথম মিনিট থেকে দাপট দেখিয়ে গোল উৎসব করে মেয়েরা।

মোসাম্মৎ সাগরিকা করেছেন হ্যাটট্রিক, মুনকি আক্তার দুই গোল। এ ছাড়া একটি করে গোল করেছেন স্বপ্না রানী, সিনহা জাহান শিখা, রুপা আক্তার ও শান্তি মার্ডি। বাংলাদেশ ৯ গোলের ছয়টিই করেছে দ্বিতীয়ার্ধে।

এ দিন এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ২৩ জনের আটজনকেই শুরুর একাদশে রাখেন বাংলাদেশ কোচ। যার ছাপ প্রথম মিনিট থেকেই টের পায় শ্রীলঙ্কা। খেলার সময় মিনিট পার হতেই স্বপ্না রানীর গোলে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। সরাসরি ফ্রি–কিক থেকে স্বাগতিকদের উদযাপনের প্রথম উপলক্ষ্য হন ১৯ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার। এর ঠিক তিন মিনিট যেতেই দ্বিতীয় গোলও পেয়ে যায় আফঈদারা। এবার একাই প্রতিপক্ষের রক্ষণ চুরমার করে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মুনকি আক্তার।

প্রথমার্ধের ৩০ মিনিটে আরও কয়েকটি আশা জাগানিয়া আক্রমণ করে বাংলাদেশ। যার মধ্যে ১৫ মিনিটে মোসাম্মাৎ সাগরিকার শট রুখে দেয় বেরসিক গোলপোস্ট। ১৯ মিনিটে পোস্টের একেবারে সামনে বল পেয়েও নিশানা ভেদ করতে পারেননি মুনকি। তাতে অবশ্য বাংলাদেশের আক্রমণের গতিতে একটুও ভাটা পড়েনি। শেষমেশ ৩৭ মিনিটে আসে তৃতীয় গোল। ডান প্রান্ত দিয়ে আক্রমণে উঠা বাংলাদেশের সিনহা জাহানের ক্রস থেকে আলতো শটে বল জালে জড়ান সাগরিকা। এরপর ৩৮ ও ৪৫ মিনিটে দুই –দুবার প্রতিপক্ষের জালে বল পাঠালেও অফসাইডের কারণে সেগুলো আর গোলের খাতায় উঠেনি।  

বিরতির পর গুনে গুনে আরও ছয়বার গোল উদযাপন করে বাংলাদেশ। ৪৮ মিনিটে বাঁ প্রান্ত ধরে আক্রমণে উঠা সাগরিকার পাস থেকে নিজের দ্বিতীয় ও দলের চতুর্থ গোল করেন মুনকি। ৪৯ মিনিটে শান্তি মার্ডির লম্বা ক্রসে পা ছুঁয়ে বল জালে পাঠান সিনহা। এরপর ৫২ মিনিটে বন্যা খাতুনের পাস ধরে দারুণভাবে প্রতিপক্ষের বক্সে ঢুকে দলের ষষ্ঠ গোল আদায় করে নেন সেই সাগরিকা। এর ছয় মিনিট পর আবারও সাগরিকা; এবার নিজের হ্যাটট্রিক করার আনন্দে মাতেন। পোস্টের ডান পাশ থেকে তাকে গোলমুখে বল বাড়িয়ে দেন পুজা দাস। সেই বল মুহূর্তের মধ্যে জালে জড়ান ১৭ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড। ৮৫ মিনিটে স্কোরলাইন ৮–০ করেন রুপা আক্তার। বন্যার কর্নার থেকে প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদের চোখ ফাঁকি দেন রুপা। ৯০ মিনিটের পর সান্ত্বনার গোলের দেখা পায় শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের রক্ষণের দূর্বলতার সুযোগ কাজে লাগান প্রতিপক্ষ ফুটবলার লাইয়ানশিকা। এর পর পরই শান্তি মার্ডি বাংলাদেশকে উপহার দেন নয় নম্বর গোল।    

পাঁচটি দেশ এই টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত ভারত নাম প্রত্যাহার করে নেয়। সে জন্য বাংলাদেশ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও ভুটান—এই চার দেশ নিয়ে শুরু হয়েছে সাফের এই আসর। টুর্নামেন্টের ফরম্যাটেও এসেছে পরিবর্তন। এখন চার দল রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতিতে একে অন্যের সঙ্গে দুবার করে খেলবে। একটি দল ছয়টি করে ম্যাচ পাবে। আর শীর্ষ পয়েন্টধারী দলের হাতে উঠবে কাঙ্খিত ট্রফি।
১৩ জুলাই নেপালের বিপক্ষে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলার পর ১৫ ও ১৭ জুলাই টানা দুই ম্যাচে বাংলাদেশের মেয়েদের প্রতিপক্ষ ভুটান। ১৯ জুলাই আবার লঙ্কানদের সামনে পড়বেন স্বপ্না–সাগরিকারা। আর ২১ জুলাই নিজেদের শেষ ম্যাচে নেপালকে মোকাবিলা করবে বাংলাদেশ।
বয়সভিত্তিক সাফে বাংলাদেশের প্রাপ্তির ঝুলি বেশ ভারি। সর্বশেষ ২০২৪ সালে এই প্রতিযোগিতায় ভারতের সঙ্গে যৌথভাবে চ্যাম্পিয়ন হয় তাঁরা। সেই হিসেবে এখন পর্যন্ত পাঁচ আসরে চারবারই শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রথম ম র প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

ফ্রিল্যান্সিং করে ২২ বছরের তানিয়ার মাসে আয় লাখ টাকা

অল্প বয়সে বিয়ে হয়েছিল তানিয়া খলিলের (২২)। বিয়ের বছরখানেক পরই মা হন তিনি। এরই মধ্যে সংসার আর শিশুসন্তান সামলিয়েই তিনি হয়ে ওঠেন ফ্রিল্যান্সার। নিজে ফ্রিল্যান্সিং শিখে অন্যদেরও এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। এখন তাঁর মাসে আয় প্রায় এক লাখ টাকা।

তানিয়ার বাড়ি খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা পৌরসভার বাজারপাড়া এলাকায়। ২০২১ সালে মাটিরাঙ্গা কলেজে দ্বিতীয় বর্ষে পড়ার সময় তাঁর বিয়ে হয়। স্বামী ইব্রাহিম খলিল পেশায় ফ্রিল্যান্সার। সেই সুবাদে তানিয়ারও এ জগতে চলা শুরু। ২০২৩ সালের শুরুতে স্বামী-স্ত্রী দুজনেই খাগড়াছড়ি সদরে চলে আসেন। সেখানেই এখন দুজন ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণকেন্দ্র চালান।

তানিয়া জানান, বিয়ের পর পড়াশোনার পাশাপাশি সংসারের দায়িত্বে ব্যস্ত হয়ে ওঠেন তিনি। এর মধ্যেও ঘরে বসে কিছু করতে চাইতেন। এরপর স্বামী ইব্রাহিম খলিল তাঁকে ফ্রিলান্সিং শেখার জন্য উৎসাহ দিতে থাকেন। তিনিও সে সুযোগ হাতছাড়া করেননি।

প্রথম আয় আমাকে অসম্ভব আত্মবিশ্বাসী করে তোলে। মনে হয়েছিল, সত্যিই কিছু করার সামর্থ্য আছে আমার।—তানিয়া খলিল, ফ্রিল্যান্সার

তানিয়া খলিল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি প্রথমে গ্রাফিক ডিজাইনের কাজ শেখা শুরু করি। রং, লে আউট, টাইপোগ্রাফি—সবই আমার কাছে নতুন ছিল। নিজের আগ্রহ থাকায় দ্রুত শিখে ফেলি। কয়েক মাসের মধ্যেই নিজেকে ফ্রিল্যান্সিং বাজারের জন্য তৈরি করে ফেলতে সক্ষম হয়েছি।’

ফ্রিল্যান্সিং শেখার মধ্যেই ২০২১ সালের ডিসেম্বরে প্রথম কাজ পেয়েছেন তানিয়া। লোগো ডিজাইন করে সে মাসে তিনি ১৩ ডলার আয় করেছিলেন। এর পর থেকে আর থেমে থাকতে হয়নি তাঁকে। সেই স্মৃতি মনে করে তানিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রথম আয় আমাকে অসম্ভব আত্মবিশ্বাসী করে তোলে। মনে হয়েছিল সত্যিই কিছু করার সামর্থ্য আছে আমার।’

তানিয়া বলেন, লোগো ডিজাইনের পর ব্র্যান্ড আইডেনটিটি, বিজনেস কার্ড, লেটারহেড তৈরিসহ নানান ধরনের কাজে দক্ষ হয়ে ওঠেন তিনি। গ্রাহকদের খুশি করতে পারায় দ্রুতই আন্তর্জাতিক বাজারে সুনাম বাড়ে তাঁর। এরপর একের পর এক কাজ আসতে থাকে। আয়ও সমানতালেই বাড়তে থাকে। বর্তমানে তিনি ফাইভারের পাশাপাশি আপ ওয়ার্কে ফ্রিল্যান্সের কাজ করেন।

সম্প্রতি প্রশিক্ষণকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, তিনতলা ভবনের দোতলায় প্রায় ৩০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৫ ফুট প্রস্থের বিশাল কক্ষে সারিবদ্ধভাবে ল্যাপটপ নিয়ে বসে রয়েছেন কয়েকজন তরুণী। তানিয়া তাঁদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। একটু শুনতেই বোঝা গেল তানিয়া তরুণীদের গ্রাফিক ডিজাইন কীভাবে করতে হয়, তা নিয়ে বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছেন।

তানিয়ার জন্য এসব কাজ অবশ্য খুব একটা সহজ ছিল না। সময়মতো কাজ জমা দেওয়া, গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগ, সন্তানকে দেখাশোনা—সব মিলিয়ে প্রতিদিনই ছিল চ্যালেঞ্জের। তানিয়া বলেন, ‘পরিবারের সাপোর্ট না থাকলে এটা সম্ভব হতো না। আমার স্বামী এখনো আমার সবচেয়ে বড় সহযোগী।’

খাগড়াছড়ি শহরে নারীদের ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন তানিয়া খলিল। সম্প্রতি তোলা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মুক্তিপণ আদায়ে ফেসবুকে বন্ধুত্ব, ব্যর্থ হয়ে হত্যার ঘটনায় দুজনের মৃত্যুদণ্ড
  • কোহলির ৫২তম সেঞ্চুরিতে ভারতের রান পাহাড়
  • জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শীতকালীন ছুটি স্থগিত
  • রেলক্রসিংয়ে উঠতেই বন্ধ হয়ে যায় মোটরসাইকেল, অতপর...
  • মাছ শিকারের সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট ইগল, পাঠানো হলো হাসপাতালে
  • বিপিএল নিলাম আজ, যা যা জানা প্রয়োজন
  • চন্দ্র কেন কম আলো দেয়
  • খালেদা জিয়ার অবস্থা সংকটাপন্ন হলেও স্থিতিশীল, চিকিৎসকদের নির্দেশনা অনুসরণ করতে পারছেন: নাসীরুদ্দীন
  • ফ্রিল্যান্সিং করে ২২ বছরের তানিয়ার মাসে আয় লাখ টাকা
  • সাড়ে ৩ কেজি সোনা পরেন রাজস্থানের ফল ব্যবসায়ী, এখন চাঁদা দাবি করছে সন্ত্রাসীরা