মানুষের মুখে মুখে ফেরা ‘আয়নাঘর’খ্যাত শেখ হাসিনার শাসনামলের গোপন বন্দিশালা অবশেষে প্রকাশ্যে এসেছে। গুম অবস্থা থেকে ফিরে আসা মানুষের জবানীতে রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলোর পরিচালিত অবৈধ বন্দিশালায় নৃশংস বর্বরতার কথা আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালেই জানা গিয়েছিল। এসবের সত্যতা মিলেছে ভুক্তভোগীদের নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড.

মুহাম্মদ ইউনূসের পরিদর্শনে। 

মুরগির খাঁচার মতো ছোট্ট কুঠুরিতে বন্দি করে রাখা হতো আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার বিরোধিতাকারীদের। কোনো কোনো কুঠুরি দৈর্ঘ্যে ও প্রস্থে তিন ফুট করে। পাশেই শৌচকর্মের জন্য বড়জোর এক ফুট জায়গা। এর মধ্যে একজন মানুষকে দিনের পর দিন, মাসের পর মাস থাকতে হতো। মাটিতে শুয়ে ঘুমানোর মতো জায়গা পর্যন্ত নেই এসসব কুঠুরিতে। 

মাসের পর মাস হাত-চোখ বেঁধে রাখা হতো কুঠুরিতে। জিজ্ঞাসাবাদের সময় চলত বর্বর শারীরিক নির্যাতন।  বন্দিশালায় পাওয়া গেছে স্টিলের তৈরি চেয়ার। এতে বসিয়ে বন্দিদের বৈদ্যুতিক শক দেওয়া হতো। দেয়ালে লেখা রয়েছে বন্দিদের আর্তনাদের কথা। দেয়ালে দাগ কেটে বন্দিরা হিসাব রাখত কতদিন কেটে যাচ্ছে আয়নাঘরে। পরিবারের কাছে ফেরার আকুতি জানিয়ে দেয়ালে ‘আই লাভ মাই ফ্যামিলি’ লেখেন ইব্রাহিম নামের এক বন্দি। বাহিনীগুলোর প্রতি ইঙ্গিত করে লেখেন, ‘ওরা মিথ্যাই বলবে’। ইব্রাহিমের ভাগ্যে কী ঘটেছে, তা জানা যায়নি।

২০১৫ সালের ২২ সেপ্টেম্বর কক্সবাজার থেকে অন্তঃসত্ত্বা রেজিয়া বেগম রেবিকে তুলে নেয় র‌্যাব-২।  সঙ্গে তাঁর ১১ বছর বয়সী মেয়ে নূরি আলী আফসানাকেও নেওয়া হয়। আফসানা পরে মুক্তি পেলেও তার মায়ের সন্ধান মেলেনি আজও। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে আফসানার আকুতি– ‘মার সন্ধান ছাড়া কিছুই চাই না।’ 

গতকাল বুধবার ছয় উপদেষ্টা এবং আট ভুক্তভোগীকে নিয়ে রাজধানীর কচুক্ষেতে ডিজিএফআইর এবং উত্তরা ও আগারগাঁওয়ে র‍্যাবের আয়নাঘর পরিদর্শন করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী শাসনের পতন ঘটানো অভ্যুত্থানের সময়ে গুম হওয়া বর্তমান দুই উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এবং আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াও চিহ্নিত করেন, গোপন বন্দিশালায় তাদের কোথায় রাখা হয়েছিল। 

ভুক্তভোগীরা একে একে সরকারপ্রধান, উপদেষ্টাদের সামনে বন্দিশালার দুঃসহ নিপীড়নের কথা তুলে ধরেন। আট বছর গুম থাকা ব্রিগেডিয়ার (অব.) আবদুল্লাহ হিল আমান আযমী, ব্যারিস্টার মীর আহমদ বিন কাশেম আরমান দীর্ঘ বন্দিজীবনের লোমহর্ষক বর্ণনা দেন। তাঁরা দু’জনই শেখ হাসিনা পালানোর পর ৭ আগস্ট মুক্তি পান। ১১ মাস গুম থাকা হুম্মাম কাদের চৌধুরীও প্রধান উপদেষ্টার সামনে বন্দিজীবনের নিপীড়নের কথা বলেন।

গুমের শিকার ব্যক্তিদের সন্ধানের দাবিতে এক দশক ধরে আন্দোলন করা ‘মায়ের ডাক’-এর প্রতিনিধিরা ছিলেন পরিদর্শনে। এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারা। পাঁচ বছর গুম থাকা মাইকেল চাকমাও ছিলেন পরিদর্শনে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নেওয়ার পর আর কখনোই ফিরে না আসা বহু ব্যক্তি বাবা-মা, স্ত্রী, সন্তানদের আকুতি ছিল, তাদের যেন অন্তত একবার ‘আয়নাঘর’ দেখতে দেওয়া হয়। তারা জানতে চান, স্বজন শেষ সময়ে কোথায়, কীভাবে ছিল।

অনুশোচনা নেই, উল্টো প্রশ্ন তুলল হাসিনার সমর্থকরা

মুখে মুখে ফেরা গোপন বন্দিশালা প্রকাশ্যে এলেও ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সমর্থকরা এ নিয়ে অনুশোচনা না জানিয়ে উল্টো প্রশ্ন তুলে সামাজিক মাধ্যমে গতকাল দিনভর ‘ট্রল’ করে।  পালিয়ে থাকা জ্যেষ্ঠ নেতারা প্রতিক্রিয়া না জানালেও আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে গোপন বন্দিশালার অস্তিত্ব অস্বীকার করা হয়। তাদের ভাষ্য, অন্তর্বর্তী সরকার ছয় মাসে বন্দিশালা তৈরি করে পরিদর্শনের নামে নাটক করেছে।

তবে সমকাল গত আগস্টেই গুমের শিকার ছয়জন ব্যক্তির বিস্তারিত সাক্ষাৎকারে গোপন বন্দিশালার অস্তিত্বের তথ্য জানিয়েছিল। র‌্যাব-১ কার্যালয়ে গোপন বন্দিশালা চিহ্নিত হয় ভুক্তভোগীদের তথ্যে। এর আগে ২০২২ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালেই আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে প্রামাণ্য চিত্রে ডিজিএফআই কার্যালয়ে ‘আয়নাঘর’ খ্যাত গোপন কারাগারের প্রমাণ দিয়েছিল সেখান থেকে মুক্ত হওয়া ব্যক্তি ও কর্মকর্তাদের তথ্যে। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে জাতিসংঘ জানিয়েছিল, কমপক্ষে ৭৬ জন গুম হয়েছেন।

আয়নাঘরের সাজ বদল

ভুক্তভোগীদের আগে দেওয়া বর্ণনার সঙ্গে গতকাল প্রকাশ্যে আসা ‘আয়নাঘর’-এর কিছু অমিলেও সামাজিক মাধ্যমে প্রশ্ন তুলেছে হাসিনা সমর্থকরা। তবে গত অক্টোবরেই গুম-সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারি সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিল, ৫ আগস্টের পর গোপন বন্দিশালার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-প্রমাণ নষ্ট করা হয়েছে। দেয়ালে বন্দিদের লেখা রং করে মোছা হয়েছে। ডিজিএফআইর আয়নাঘরে কিছু পরিবর্তন করা হয়। বন্দিদের রাখা কুঠরির দেয়াল ভাঙা হয়।

কমিশন জানিয়েছিল, ‘আয়নাঘর’ অবিকৃত রাখতে বাহিনীগুলোকে লিখিত ও মৌখিকভাবে বলা হয়েছে। পরিদর্শনে গিয়ে গতকাল ড. ইউনূস বলেছেন, গুমের বিচারের আলামত হিসেবে থাকবে ‘আয়নাঘর’। পরিবর্তন রোধে সিলগালা অবস্থায় থাকবে।

ভুক্তভোগীদের কথা

যে কুঠরিতে বন্দি রাখা হয়েছিল, সেখানে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন নূরি আলী আফসানা। মায়ের স্পর্শ খোঁজেন দেয়াল হাতড়ে। তিনি বলেন, ‘এই সেলে আমাদের বসার মতো জায়গা ছিল না। কিন্তু আমাদের আটকে রাখা হয়। এত বড় একটা পুরুষ আমার মাকে হাতে হাতকড়া পরিয়ে মারধর করত।’ হাতকড়া খুলে দিতে রক্ষীদের পা ধরে কান্নাকাটি করেছিলাম, তারা জবাব দেয়– হাতকড়ার চাবি হেড কোয়ার্টারে। তার পর একদিন আমাদের নিয়ে যায় বাইরে। কমলাপুরে গিয়ে আমাকে লাথি দিয়ে গাড়ি থেকে ফেলে দেয়। এর পর মাকে আর পায়নি’।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে ফেসবুকে মন্তব্য করে ২০২০ সালের মার্চে গুম হন প্রকৌশলী মাশরুর আনোয়ার চৌধুরী। তিনি প্রধান উপদেষ্টার সামনে বলেন, ‘দুই লাইনের একটা স্ট্যাটাস লেখার কারণে অফিসে যাওয়ার পথে হাতিরঝিল থেকে গাড়িতে তুলে নেয়। প্রথমে নিয়ে রায় নারায়ণগঞ্জ র‌্যাব-১১ কার্যালয়ে। তার পর এখানে (র‌্যাব-১) নিয়ে আসে। তখন শুধু দুই সন্তানের কথাই মনে করছিলাম। নিশ্চিত ছিলাম, আমাকের মেরে ফেলবে। আমার সঙ্গে আরও তিনজন। তাদের একজনকে  দেড় বছর, আরেকজনকে তিন বছর আটকে রাখা হয়েছিল। ১৭ বছর বয়সী এক কিশোর ছিল, যাকে রাঙ্গুনিয়া থেকে ধরে আনা হয়েছিল। আমার সেলের ডান পাশে একটি ছেলেকে রাখা হয়। তাকে মারধর করা হতো। যতক্ষণ কান্নাকাটি করত, ততক্ষণই মারত। মারধরে সে পাগল হয়ে গিয়েছিল। উলঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকত, তাই মারত।’  

গত বছরের ১৯ জুলাই তুলে নেওয়া হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সেই সময়কার সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে। দেয়ালের খসে যাওয়া পলেস্তারা দেখে আসিফ মাহমুদ তাঁকে বন্দি রাখা সেল শনাক্ত করতে পারেন। তিনি বলেন, চার দিন ছিলাম। সেলের দেয়াল ভেঙে কক্ষকে বড় করা হয়েছে। চার দিন বন্দি থাকা নাহিদ বলেন, একজন এসে ব্যাপক মারধর করত। আরেকজন এসে বোঝাত। বলত, কথা না শুনলে, আগেরজন এসে মারধর করবে। 

হুম্মাম কাদের প্রধান উপদেষ্টার কাছে বন্দিজীবনের দুঃসহ স্মৃতি বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, ‘যতবার টয়লেটে নেওয়া হতো, ততবার জমটুপি, হাতকড়া পরানো হতো।’ ছাড়া পাওয়ার সময়ের স্মৃতি বর্ণনা করে বলেন, “জিজ্ঞাস করেছিলাম, কতদিন আমাকে রাখা হবে। ছেড়ে দেওয়ার তিন-চার দিন আগে বলা হয়, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনাকে দ্বিতীয় সুযোগ দিচ্ছেন। আপনাকে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে।’ তার পর একটি ফোন নম্বর দেওয়া হয়।”

ড. ইউনূস ভুক্তভোগীদের খুঁটিয়ে প্রশ্ন করে বন্দিজীবনের নৃশংসতার কথা শোনেন। আমান আযমী বলেন, ‘২০১৬ সালের মে মাসে আমাকে বলা হয়, দেশ ছেড়ে যেতে হবে। না যাওয়ায় ওই বছরের আগস্টে তুলে নেয়। ৪১ হাজারের বেশি বার আমার হাতে হাতকড়া পরানো হয়।’ 

বর্ণনা দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মীর আরমান। যে কুঠরিতে বন্দি ছিলেন, তা দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘আট বছর চোখ বেঁধে, হাতকড়া পরিয়ে রাখত। যখন অফিসাররা আসত, তখন উঠতে দিত না।’

ভুক্তভোগীরা দেখতে চান আয়নাঘর

পাঁচ বছর বন্দি থাকা মাইকেল চাকমা ফেসবুকে লেখেন, ‘ডিজিএফআইয়ের ১১৩ নম্বর সেল, যেটি একেবারে বাথরুমের পাশে, সেখানে প্রায় দুই বছর বন্দি ছিলাম। একই লাইনের ১১৭ নম্বর রুমে ছিলাম দেড় বছরের একটু বেশি। ১০৪ নম্বর রুমে ছিলাম এক বছরের কাছাকাছি। পরে ১০৫ নম্বর সেলে।’ তিনি সমকালকে বলেন, আমাকে কেন প্রধান উপদেষ্টার পরিদর্শনে নেওয়া হয়নি, তা তো বলতে পারি না। সরকারই বলতে পারবে। 

পিরোজপুর সদরের মোকাদ্দেস আলীকে ২০১২ সালে তুলে নিয়েছিল র‌্যাব-৪। তাঁর পরিবারও দেখতে চায় আয়নাঘরে কীভাবে রাখা হয়েছিল স্বজনকে। মোকাদ্দেসের বাবা আবদুল হালিম সমকালকে বলেছেন, ‘একটু দেখতে চাই, আমার ছেলেটাকে কোথায় রেখেছিল। আমার ছেলেটার সঙ্গে কী করেছিল।’ 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বন দ জ বন র বন দ দ র হয় ছ ল র পর দ আফস ন বছর র হ তকড় আগস ট সরক র ইউন স গতক ল আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে

জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বৈদ্যুতিক গাড়ির উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ছে। তবে এসব গাড়ি বাসা বা নির্দিষ্ট স্থানেই শুধু চার্জ করা যায়। ফলে দূরে ভ্রমণের সময় গাড়ির চার্জ শেষ হয়ে গেলে বিপদে পড়েন অনেকেই। এ সমস্যা সমাধানে তারের সংযোগ ছাড়াই বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক’ চালু করেছে ফ্রান্স। প্যারিসের উপকণ্ঠে চালু হওয়া সড়কটিতে চলাচলের সময় বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক গাড়ি, বাস ও ভারী ট্রাকের ব্যাটারি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চার্জ হয়ে যাবে।

বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার জন্য সড়কটিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে ২০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। প্রয়োজনে সেটি ৩০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা টেসলার ভি থ্রি সুপারচার্জারের মতো বিশ্বের দ্রুততম চার্জারগুলোর সমান শক্তি সরবরাহ করতে সক্ষম। এই সড়কের নিচে স্থাপন করা হয়েছে অসংখ্য তামার কুণ্ডলী। এসব কুণ্ডলী চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে, যা বিশেষ রিসিভারযুক্ত বৈদ্যুতিক গাড়িতে শক্তি স্থানান্তর করে। পদ্ধতিটি অনেকটা ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তির মতো, যেখানে পাওয়ার ব্যাংক বা চার্জিং প্যাডে মোবাইল ফোন রেখে চার্জ নেওয়া হয়। চৌম্বক ক্ষেত্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ স্থানান্তর হওয়ায় ভারী বৃষ্টি, বরফ বা তুষারপাতেও চার্জিং প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যাঘাত ঘটে না। দ্রুত চার্জিং সুবিধার ফলে গাড়ি ও ট্রাক এখন দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে পারবে, মাঝপথে চার্জ নিতে থামার প্রয়োজন হবে না। ফলে গাড়িতে বড় ও ভারী ব্যাটারি বহনের প্রয়োজনীয়তা অনেক কমে যাবে।

এরেনা ইভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই স্বয়ংক্রিয় চার্জিং সড়কে মাত্র কয়েক মিনিট চললেই বৈদ্যুতিক গাড়ির রেঞ্জ বা চলার সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে। ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ির দীর্ঘ যাত্রায় চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সমাধানে প্রযুক্তিটি নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। প্রযুক্তিটি যদি ব্যাপকভাবে চালু করা যায়, তবে তুলনামূলকভাবে হালকা, সাশ্রয়ী এবং কম ব্যাটারিসমৃদ্ধ বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করা সম্ভব হবে। এতে গাড়ির উৎপাদন খরচও কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইলেকট্রিওনের তৈরি সড়কটির নকশাতেও রয়েছে বাড়তি সুবিধা। বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার প্রযুক্তি রাস্তার ভেতরের অংশে থাকায় ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কম। ফ্রান্সের পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশজুড়ে প্রায় ৯ হাজার কিলোমিটার ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে বৈদ্যুতিক যানবাহন চলাচল আরও সহজ, কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব হয়ে ওঠে।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সম্পর্কিত নিবন্ধ