বাংলাদেশে স্পেসএক্সের স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা চালু করতে মার্কিন কোম্পানিটির প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্কের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে আলোচনা করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়েও আলাপ করেন তারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় রাত ৯টার দিকে দুবাইতে অবস্থানরত প্রধান উপদেষ্টা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও শীর্ষ ব্যবসায়ী ইলন মাস্কের সঙ্গে কথা বলেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এ তথ্য জানিয়েছে।
আলোচনায় ড.
কীভাবে উচ্চগতি ও কম খরচের ইন্টারনেট সংযোগ বাংলাদেশের ডিজিটাল বৈষম্য দূর করা, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও সুবিধাবঞ্চিত অঞ্চলে অর্থনৈতিক উন্নয়নকে শক্তিশালী এবং লাখ লাখ ছোট ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের বিশ্বজুড়ে প্রবেশাধিকার দিতে পারে এ নিয়ে আলোচনা করেছেন তারা।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, স্টারলিংকের সংযোগ বাংলাদেশের অবকাঠামোয় যুক্ত হলে লাখ লাখ মানুষের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি হবে এবং বৈশ্বিক ডিজিটাল অর্থনীতিতে আরও ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত হবে। তিনি বাংলাদেশ এবং বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে প্রযুক্তি-চালিত সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্ণ সম্ভাবনা উন্মোচনে মাস্কের সঙ্গে কাজ করার জন্য উৎসাহ প্রকাশ করেন। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, স্টারলিংক হবে গ্রামীণ ব্যাংক এবং গ্রামীণফোনের একটি সম্প্রসারণ। এটি গ্রামের নারী ও তরুণদের বিশ্বের সঙ্গে সংযুক্ত করার পথিকৃৎ হিসেবে কাজ করবে। এতে তারা বৈশ্বিক উদ্যোক্তা হয়ে উঠবে।
ইলন মাস্ক গ্রামীণ ব্যাংকের ক্ষুদ্রঋণ মডেলের প্রশংসা করেন এবং দারিদ্র্য বিমোচনে এর বিশ্বব্যাপী প্রভাবের বিষয়টিও তুলে ধরেন। বহু বছর ধরে গ্রামীণ ব্যাংক এবং গ্রামীণফোন উভয়ের কাজের সঙ্গে পরিচিত বলেও জানান টেসলার প্রতিষ্ঠাতা।
ইলন মাস্ক মনে করেন, স্টারলিংকের মতো প্রযুক্তিগত অগ্রগতি বাংলাদেশে উদ্ভাবন, অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন এবং আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।
অধ্যাপক ইউনূস স্টারলিংক পরিষেবা চালুর সম্ভাব্য লক্ষ্যে ইলন মাস্ককে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। ইলন মাস্ক এ আমন্ত্রণে ইতিবাচক সাড়া দেন। তিনি বলেন, আমি এর জন্য অপেক্ষা করছি।
এই বৈঠক বাংলাদেশে উন্নত স্যাটেলাইট সংযোগ আনার দেশব্যাপী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি এবং উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করার দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
ভার্চুয়াল বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে রোহিঙ্গা সংকট ও অগ্রাধিকার-বিষয়ক উচ্চ প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান, এসডিজির প্রধান সমন্বয়কারী লামিয়া মোর্শেদ এবং স্পেসএক্সের পক্ষে সংস্থাটির ভাইস প্রেসিডেন্ট লরেন ড্রেয়ার এবং গ্লোবাল এনগেজমেন্ট অ্যাডভাইজার রিচার্ড গ্রিফিথস উপস্থিত ছিলেন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
চলন্ত বাসে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ, চালক আটক
ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে এক কলেজছাত্রীকে চলন্ত বাসে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। নবীগঞ্জ-শেরপুর সড়কে রোববার রাতে যাত্রীবাহী বাসে এ ঘটনা ঘটে। পরে ওই ছাত্রীর চিৎকার শুনে স্থানীয় জনতা সড়কের তিনতালাব পুকুর পাড় নামক স্থানে বাসটি আটক করে এবং বাসের ড্রাইভারকে আটক করে সেনাবাহিনীর নিকট হস্তান্তর করে। এসময় বাসের হেলপার পালিয়ে যায়।
পরে সেনাবাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হারুনুর রশিদের নেতৃত্বে একদল সেনা সদস্য ওই কলেজ ছাত্রী ও ড্রাইভারকে নবীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করে। এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
জানা যায়, ঢাকায় একটি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ে ওই ছাত্রী। রোববার সকালে ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে একটি বাসে উঠেন তিনি। তার গ্রামের বাড়ি যেতে বানিয়াচং যাওয়ার পথে শায়েস্থাগঞ্জ বাস স্ট্যান্ডে নামার কথা থাকলেও তিনি বাসের মধ্যে ঘুমিয়ে যান। ফলে বাস তাকে শায়েস্থাগঞ্জে না নামিয়ে শেরপুর বাসস্ট্যান্ডে নামিয়ে দেয়। সেখান থেকে রাত সাড়ে ১০টায় ওই কলেজছাত্রী একটি লোকাল বাসে উঠে। সেই বাসে কয়েকজন যাত্রী ছিল, বাসটি নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি নামক স্থানে পৌঁছালে অন্যান্য যাত্রীদের নামিয়ে দেয়। এরপর ওই ছাত্রীকে একা পেয়ে বাসের চালক ও হেলপার তাকে বাসে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।
এ বিষয়ে ওই ছাত্রী জানায়, তিনি ঢাকায় একটি কলেজে লেখাপড়া করেন। তার পরিবারের সবাই ঢাকায় থাকে তিনি ঢাকায় ঈদ করেছে। ঈদের ছুটিতে তিনি বাড়ি আসেননি এই জন্য আজকে গ্রামের বাড়িতে আসছিলেন।
বানিয়াচং থানার সেনাক্যাম্পের সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হারুনুর রশিদ বলেন, আমরা কলেজছাত্রী ও বাস চালককে নবীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করেছি।
এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানার ওসি দুলাল মিয়া জানান, ঘটনার পর বাস চালককে আটক করা হয়েছে এবং হেলপার পালিয়ে গেছে। এ ব্যাপারে মামলা লেখার কাজ চলছে।