নড়াইলের লোহাগড়ায় ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় বখাটেদের হামলার শিকার হয়েছেন এক ছাত্রীর বাবা ও দাদী। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার মৌলভী ধানাইড় গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চাচই গ্রামের শুকুর মোল্যার ছেলে নাহিদ মোল্যা দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় সিডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। এ নিয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা ফরিদ ভূঁইয়া অভিযুক্ত নাহিদের বাবা শুকুর মোল্যাকে অভিযোগ করলে তারা আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে।

এরই জেরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নাহিদ মোল্যা, নাইম মোল্যা ও তাদের সঙ্গে আরও ৮-১০ জন যুবক ফরিদ ভূঁইয়ার বাড়িতে হামলা চালায়। তারা লাঠিসোটা, লোহার রড ও হাতুড়ি নিয়ে ফরিদ ভূঁইয়া ও তার বৃদ্ধা মা ডালিয়া বেগমকে বেধড়ক মারধর করে। আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

ফরিদের স্ত্রী রুমা বেগম জানান, হামলাকারীরা তার স্বামী ও শাশুড়িকে চুল ধরে টেনে-হেঁচড়ে মারধর করেছে এবং তাকেও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছে। তিনি আরও জানান, নাহিদ মোল্যা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় বখাটেপনা করে বেড়াচ্ছে, কিন্তু উপযুক্ত শাস্তি না পাওয়ায় সে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।

এ ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত নাহিদ মোল্যা ও তার বাবা শুকুর মোল্যা পলাতক রয়েছেন। স্থানীয় ইউপি সদস্য ইউসুফ মিয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মেয়েলি ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাচই গ্রামের কয়েকজন যুবক ফরিদ ভূঁইয়ার বাড়িতে হামলা চালিয়েছে।

লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশিকুর রহমান জানান, এ ঘটনায় এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

শরীয়তপুরে দু’পক্ষের সংঘর্ষ, শতাধিক হাতবোমা বিস্ফোরণ

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় বিবাদমান দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় শতাধিক হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এক যুবদল নেতাসহ কয়েকজন আহত হয়েছে। 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা জানায়, জাজিরা উপজেলার বিলাসপুর ইউনিয়নের চেরাগ আলী বেপারিকান্দি এলাকার ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য নাসির বেপারী এবং তাজুল ছৈয়ালের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। রবিবার (২ নভেম্বর) সকালে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। উভয়পক্ষের লোকজন হাতবোমা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে বেশ কয়েকটি বসতবাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। হাতবোমার আঘাতে যুবদল নেতা সালাউদ্দিন বেপারী, কামাল বেপারীসহ কয়েকজন আহত হয়েছে। আহত দুইজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ দুইজনকে আটক করেছে। 

আরো পড়ুন:

ড্যাফোডিল-সিটি ইউনিভার্সিটি সংঘর্ষ: শিক্ষার্থীদের আসামি করে পাল্টাপাল্টি মামলা

শিশুদের ঝগড়া থেকে বড়দের সংঘর্ষ, আহত ৫০

জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইনুল ইসলাম বলেন, ‘‘আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। বেশ কিছু হাতবোমা বিস্ফোরণ হয়েছে। দুইজনকে আটক করা হয়েছে।’’ 

তিনি আরো বলেন, ‘‘যারা এই নাশকতা চালিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ 

ইউপি সদস্য নাসির বেপারীর স্ত্রী সাবিনা আক্তার বলেন, ‘‘আমরা বাড়িতে বাচ্চাদের নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলাম। বোমার শব্দে ঘুমে ভেঙে যায়। উঠে দেখি আমাদের বাড়িতে বোমা হামলা হচ্ছে। জানালার গ্লাস ভেঙে ধোঁয়ার রুম ছড়িয়ে পড়েছে। আমাদের প্রতিপক্ষের লোকজন তাজুল ছৈয়াল, মমতাজ বেপারী, মন্নাপ বেপারী, সুজন, রনি ভূঁইয়া, টিপু মাদবর হামলা চালিয়েছে।’’ তিনি দোষীদের বিচারের দাবি জানান। 

আহত সালাউদ্দিনের স্ত্রী সুমি বলেন, ‘‘আমার স্বামী ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। বোমার শব্দে জানালার কাছে গেলে তিনি গুরুতর আহত হয়েছেন। পরিকল্পিতভাবে এই হামলা হয়েছে।’’ তিনি জীবনের নিরাপত্তার পাশাপাশি দোষীদের শাস্তি চান। 

উল্টো অভিযোগ করেছেন চম্পা আক্তার নামের এক নারী। তিনি বলেন, ‘‘সালাউদ্দিন বেপারী, নাসির বেপারী, ইব্রাহিম বেপারীরা আমাদের বাড়িঘরে বোমা হামলা করেছে। তারা আমাদের হুমকি দিয়েছে, বাড়িঘরে থাকতে দেবে না। আমরা এলাকায় শান্তি চাই।’’ যারা হামলার সঙ্গে জড়িত, তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি। 

তাজুল ছৈয়ালের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। ঘরটি তালাবদ্ধ ছিল। 

ঢাকা/আকাশ/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শরীয়তপুরে দু’পক্ষের সংঘর্ষ, শতাধিক হাতবোমা বিস্ফোরণ