ফসলহানীর ক্ষতি পূরণে ৯ লাখ মে.টন খাদ্য আমদানি করা হবে
Published: 16th, February 2025 GMT
দেশে দু’দফা বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। বিশেষ করে ভয়াবহ বন্যায় আউশ ও আমন ফসলের উৎপাদনে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এরফলে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় উৎপাদন কম হয়েছে ১৩ লাখ মে. টনেরও বেশি। এর মধ্যে আউশের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৯ লাখ ৫৫ হাজার মে. টন এবং আমনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৩ লাখ ৫৮ হাজার মে.
সূত্র জানায়, উৎপাদন ব্যহত হওয়ার পরও দেশে বর্তমানে খাদ্যশস্য মজুদের পরিমান সন্তোষজনক অবস্থায় রয়েছে। যেমন- গেল ২০২৪ সালে ১ ডিসেম্বর তারিখে যেখানে খাদ্যশস্যর মজুদের পরিমান ছিল ১১.০২ লাখ মে.টন। সেখানে বর্তমানে খাদ্যশস্যের মজুদ রয়েছে ১৩ লাখ মে. টন। দুই মাসের ব্যবধানে খাদ্যশস্যের মজুদ বেড়েছে দুই লাখ মে. টন।
এদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিসংখ্যানে দেখানো হয়েছে, চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে খাদ্যশস্য উৎপাদনে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ কোটি ২৫লাখ মে. টন। এর মধ্যে ধানের উৎপাদন লক্ষ্য ৪ কোটি ৪৩ লাখ মে. টন প্রাক্কলন করা হয়েছে। ধানের মধ্যে আউশ ধানের ৩৮ লাখ ৩৭ হাজার মে. টন, আমন এক কোটি ৭৮ লাখ ৭৪ হাজার মে.টন এবং বোরো ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ২ কোটি ২৬ লাখ মে. টন। এ ছাড়াও গমে উৎপাদন ১২ লাখ মে. টন এবং ভ’ট্রা উৎপাদন ধরা হয়েছে ৬৯ লাখ মে. টন।
অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, নিম্ন আয়ের মানুষদের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে খাদ্যশস্য বিক্রি অব্যাহত রাখতে চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে এ খাতে ৮ হাজার ৫৯ কোটি টাকা ভর্তুকি হিসেবে বরাদ্দ রাখা হয়েছে। মূলত: ওএমএস, টিসিবি ও খাদ্য বান্ধব কমসূচি সারা বছর চলমান রাখার লক্ষ্যে বর্ধিত হারে এ বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
এদিকে সার্বিকভাবে দেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কৃষি উৎপাদন বাড়ানো এবং কৃষি উৎপাদন বাড়াতে প্রকৃত চাষিদের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করার উপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছে অর্থ বিভাগ।
অর্থ বিভাগ বলেছে, মাঠ পর্যায়ে উৎপাদিত পণ্য সরাসরি ভোক্তার কাছে পৌঁছে দেওয়ার কার্যকর পদ্ধতি দ্রুত খুঁজে বের করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে অন-লাইনভিত্তিক ফ্ল্যাটফর্ম, সামাজিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কিংবা অন্যান্য উপায়ে যেসব ব্যবসা সফলভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেগুলোর অনুসরণে চাষিদের জন্যও একটি ব্যবসা মডেল তৈরির বিষয়টি বিবেচনা করা দরকার। এছাড়া কৃষি ও খাদ্য দ্রব্যের মজুদ/সংরক্ষণের সক্ষমতা বাড়াতে গুদাম/হিমাগারের সংখ্যাও বাড়াতে হবে বলে মনে করে অর্থ বিভাগ।
সরবরাহ নিশ্চিত করার বিষয়ে অর্থ বিভাগ বলেছে, চাল-ডাল-তেল-আলু ইত্যাদি নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের বার্ষিক চাহিদার সঙ্গে বর্তমান মজুদের তুলনাভিত্তিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে মধ্যমেয়াদি চাহিদার প্রক্ষেপণ এবং এসব পণ্য সরবরাহের একটি রূপরেখা তৈরি করতে হবে। পাশাপাশি চাল-আলু-পেঁয়াজসহ কৃষিপণ্যের ক্ষেত্রে উৎপাদন পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সাময়িক ভিত্তিতে তাৎক্ষণিক শুল্ক হ্রাস/অব্যাহতির উদ্যোগ নিতে হবে।
খাদ্যদ্রব্যের পাশাপাশি সার ও কৃষি উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য উপকরণ সরবরাহেও একটি রূপরেখা প্রণয়নের উপর গুরুত্বারোপ করে অর্থ বিভাগ বলেছে, সারের মূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে ভর্তুকি দেওয়া অব্যাহত রয়েছে। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে এ খাতে ২৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
সূত্র জানায়, বর্তমানে সরকারি পর্যায়ে খাদ্যশস্যের মোট কার্যকরী মজুদের সক্ষমতা হচ্ছে ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৫৩৮ মে. টন। এর বিপরীতে প্রায় ১৩ লাখ টন খাদ্যশস্য মজুদ রয়েছে। এটি এর আগের অর্থবছরের (২০২৩-২০২৪) তুলনায় প্রায় এক-চতুর্থাংশ কম।
ঢাকা/টিপু
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর খ দ যশস য সরবর হ
এছাড়াও পড়ুন:
আদানির সঙ্গে চুক্তি করে শুল্ক ফাঁকি
সাবেক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সচিব ড. আহমেদ কায়কাউসের বিরুদ্ধে এনবিআরকে পাশ কাটিয়ে আদানির সঙ্গে চুক্তি করে সরকারের সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা শুল্ক ফাঁকির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ আমলে নিয়ে আহমেদ কায়কাউসের দুর্নীতি অনুসন্ধানে মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
ইতোমধ্যে দুদকের উপপরিচালক রেজাউল করিমের নেতৃত্বে একটি অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়েছে। আহমেদ কায়কাউসের দুর্নীতির বিষয়ে যাবতীয় রেকর্ডপত্র দিতে বিদ্যুৎ বিভাগকে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলেও সংস্থাটি জানিয়েছে।
বুধবার সেগুনবাগিচা কার্যালয়ে দুদকের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিং-এ সংস্থাটির মহাপরিচালক আক্তার হোসেন এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘‘সাবেক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সচিব ড. আহমেদ কায়কাউসের বিরুদ্ধে এনবিআরকে পাশ কাটিয়ে আদানির সঙ্গে চুক্তি করে সরকারের সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা শুল্ক ফাঁকির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। দুর্নীতির বিষয়ে তথ্য সংগ্রহে দুদকের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড-এর চেয়ারম্যান বরাবর চিঠি দেওয়া হয়েছে।’’
দুদক জানিয়েছে, চিঠিতে ড. আহমেদ কায়কাউসের চারটি বিষয়ে রেকর্ডপত্র চাওয়া হয়েছে। বিশেষ করে, আদানি গ্রুপের সাথে বিদ্যুৎ ক্রয়ের চুক্তির শুরু হতে শেষ অবধি যাবতীয় রেকর্ডপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি, আদানি গ্রুপের সাথে বিদ্যুৎ ক্রয়ের ক্ষেত্রে সরকারী নিয়ম অনুসরণ করা হয়েছে কিনা এ সংক্রান্ত রেকর্ড, বিদ্যুৎ ক্রয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীগণের নাম, পদবি, বর্তমান ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর ও বর্ণিত বিষয়ে কোন বিভাগীয় তদন্ত করা হয়েছে কিনা, হয়ে থাকলে তদন্ত প্রতিবেদনসহ বিস্তারিত তথ্যাদি সরবরাহ করতে বলা হয়েছে।
এমনকি, চিঠি পাওয়ার ৫ কার্য দিবসের মধ্যে এসব রেকর্ডপত্রের সত্যায়িত ছায়ালিপি দুদক বরাবর সরবরাহের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে বলেও প্রেস ব্রিফিং-এ জানানো হয়।
আহমেদ কায়কাউস বর্তমানে অবসর জীবন যাপন করছেন। তিনি এর আগে বিশ্বব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ছিলেন।
নঈমুদ্দীন/তারা