রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০০ নারীশিক্ষার্থী পাবেন ব্র্যাক ব্যাংকের ‘অপরাজেয় তারা’ শিক্ষাবৃত্তি
Published: 18th, February 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নারীশিক্ষার্থীকে উচ্চশিক্ষায় সহায়তায় ‘অপরাজেয় তারা’ শিক্ষাবৃত্তি চালু করেছে ব্র্যাক ব্যাংক। ৩০০ নারীশিক্ষার্থী পাবেন এই শিক্ষাবৃত্তি। গত রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এক অনুষ্ঠানে এ–সংক্রান্ত চুক্তি সই হয়। চুক্তিতে সই করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সালেহ হাসান নকীব ও ব্র্যাক ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড চিফ অপারেটিং অফিসার সাব্বির হোসেন।
ব্র্যাক ব্যাংকের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে উপাচার্য বলেন, ‘ব্র্যাক ব্যাংকের এমন উদ্যোগ আমাদের নারীশিক্ষার্থীদের জীবনে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলবে। এই বৃত্তি আর্থিক সহায়তার চেয়ে বেশি কিছু। এটি আমাদের শিক্ষার্থীদের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসবে, তাঁদের আরও বড় স্বপ্ন দেখতে শেখাবে এবং তাঁদের শিক্ষা ও পেশাগত জীবনে সাফল্য অর্জনে ভূমিকা রাখবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।’
শিক্ষাবৃত্তি সম্পর্কে সাব্বির হোসেন বলেন, ‘ব্র্যাক ব্যাংকে আমরা এটা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি যে নারী শিক্ষায় বিনিয়োগ মানে দেশের ভবিষ্যতের জন্য বিনিয়োগ। “অপরাজেয় তারা” শিক্ষাবৃত্তির মাধ্যমে আমরা শিক্ষাব্যবস্থায় বিদ্যমান জেন্ডার–বৈষম্য দূর করার পাশাপাশি আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে কোনো শিক্ষার্থী যাতে পিছিয়ে না পড়েন, সেটিও নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
আরও পড়ুনহার্ভার্ডে বৃত্তি নিয়ে এমবিএ’র সুযোগ বাংলাদেশিদের ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫‘অপরাজেয় তারা’ হলো নারীশিক্ষার্থীদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার যাত্রায় ব্র্যাক ব্যাংকের ফ্ল্যাগশিপ সিএসআর উদ্যোগ। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া এই শিক্ষাবৃত্তি চালু রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০১১ সাল থেকে প্রথম আলো ট্রাস্টের সঙ্গে দেশের বিভিন্ন জেলার শিক্ষার্থীদের এই শিক্ষাবৃত্তি দিয়ে আসছে ব্র্যাক ব্যাংক। বর্তমানে এই শিক্ষাবৃত্তির সুবিধাভোগীর সংখ্যা দুই হাজারের বেশি। বিজ্ঞপ্তি
আরও পড়ুনরোমানিয়ায় বৃত্তি নিয়ে পড়াশোনা, সুযোগ-সুবিধা ও আবেদনের পদ্ধতি জেনে নিন৮ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এই শ ক ষ ব ত ত অপর জ
এছাড়াও পড়ুন:
পুলিশের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে: সলিমুল্লাহ খান
লেখক ও অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান বলেছেন, আমাদের বুকে হাত দিয়ে স্বীকার করতে হবে, পুলিশের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে। পুলিশের যে পজিশনে থাকার কথা ছিল সে পজিশনে নেই। পুলিশ যেই আইনে চলে সেখানে পদে পদে সমস্যা আছে। এসব বিষের মাঝেমধ্যে আলোচনা করা উচিত এবং খোলাখুলি আলোচনা হওয়া উচিত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজারবাগে পুলিশ সপ্তাহের বিশেষ আয়োজন ‘নাগরিক ভাবনায় জনতার পুলিশ: নিরাপত্তা ও আস্থার বন্ধন’ আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. সলিমুল্লাহ খান বলেন, পুলিশ শুধু রাষ্ট্রযন্ত্রের অংশ নয়, সমাজেরও অংশ। পুলিশের সঙ্গে জনতার বিভক্তির মূলে যেতে হবে, এটা হলো জনতার সঙ্গে রাষ্ট্রের বিভক্তি। আর এই সমস্যার সমাধান হলো গণতন্ত্র।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক আইজিপি আব্দুল কায়ুম বলেন, এত বড় একটা পরিবর্তন হয়ে গেল, একটা গণঅভ্যুত্থান হয়ে গেল; ছাত্র-জনতা তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা বলেছে, তারা নতুন একটি বাংলাদেশ গড়তে চায়। একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল স্বাধীনতার পর। কিন্তু সঠিকভাবে আমরা এগোতে পারিনি, আমরা ব্যর্থ হয়েছি। এই যে একটা সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষা অনেক স্বপ্ন, এই স্বপ্ন যেন ব্যর্থ না হয়। সে জন্য সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ২০০৯ থেকে ২৪ পর্যন্ত আমরা যা দেখলাম, তা কল্পনা করা যায় না। আগেও গণতন্ত্র ছিল না, কিন্তু আমরা সেবা দিতে পেরেছি। তবে গত ১৫ বছরের মতো আমরা দারোয়ানে পরিণত হইনি। গণতন্ত্র থাকলে যে সুবিধাটা হয়, সেটা হলো, পাঁচ বছর পর আপনাকে ভোটারদের কাছে যেতে হবে এবং মেন্ডেট নিতে হবে আপনি যা ইচ্ছা তাই করতে পারবেন না। ২০০৯ সালের নির্বাচন যে খুব নিখুঁত হয়েছে, তা বুকে হাত দিয়ে বলতে পারব না। তার পরবর্তী তিনটা নির্বাচনে যা হয়েছে তা আমরা সবাই জানি। যখন একচ্ছত্র ক্ষমতা এসে যায় তখন প্রশাসন ভেঙে পড়ে। এটা ভয়, খুন-গুম ও সন্ত্রাস দ্বারা সম্ভব হয়েছে। এ সময়টাতে শুধু এক শ্রেণির পুলিশ কর্মকর্তা না সব সেক্টরের এক শ্রেণির কর্মকর্তা অতি উৎসাহিত হয়ে কাজ করেছে।
তিনি বলেন, যা হওয়ার হয়েছে, আমাদের আবার নতুন করে মানুষের সেবা দিতে হবে। সমাজের সব শ্রেণির মানুষকে সঙ্গে নিয়ে কমিউনিটি পুলিশিং করতে হবে।
সাবেক আইজিপি মোহাম্মদ নুরুল হুদা পুলিশ সংস্কার কমিশনকে ব্যর্থ উল্লেখ করে বলেন, সংস্কার কমিশন পুলিশের বিষয়ে বলছে, অনেক বিষয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা দরকার। পরীক্ষা-নিরীক্ষা দরকার–যদি এই কথা বলা হয়, তাহলে এই সংস্কার কমিশনের কী দরকার। এই পুলিশ কমিশন ১৮৬১ সালের পুলিশ আইন নিয়ে কিছু বলে না গণ্ডগোল কিন্তু ওইখানেও আছে।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক সদিচ্ছা যদি না থাকে তাহলে পুলিশ কীভাবে কাজ করবে। যাদের সুবাদে আমরা আজ কথা বলতে পারছি, সেটা কতদিন বলতে পারবো সেটার কোনও গ্যারান্টি নেই। রাজনৈতিক দলগুলোর যদি সদিচ্ছা না থাকে তাহলে সম্ভব না।
তিনি বলেন, পুলিশের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক কিন্তু ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার। এটা বদলানো পুলিশের হাতে নাই। পুলিশের অনেক অফিসাররা দুর্নীতিতে জড়িয়েছে।
পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত আইজিপি গোলাম রসুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন– নিউ এইজের সম্পাদক নুরুল হুদা, এপেক্স কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাসির মঞ্জু, কর্ম কমিশনের সদস্য অধ্যাপক সায়মা চৌধুরী, নির্বাচন কমিশনের সদস্য ডা. জাহেদ করিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাহিত্যিক, খেলোয়াড়সহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ব্যক্তিরা।