খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) সংঘর্ষের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আলাদাভাবে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ছাত্রদল।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় রাজু ভাস্কর্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে ‘কুয়েটের শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রদলের সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে’ বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। অন্যদিকে ছাত্রদলও রাজু ভাস্কর্যে বিক্ষোভের ঘোষণা দেয়। পরে অবশ্য ছাত্রদল ডাসের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজু ভাস্কর্য থেকে মিছিল নিয়ে ভিসি চত্বর ঘুরে পুনরায় রাজু ভাস্কর্যে এসে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। এ সময় জুলাইয়ে ছাত্রলীগের হামলা এবং কুয়েটে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ভিডিও চিত্র বুধবার বিকেলে টিএসসিতে প্রদর্শনী কর্মসূচি ঘোষণা করেন সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার।

সমাবেশে ছাত্রদলকে জালিম না হওয়ার আহ্বান করেন আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, গত ১৬ বছরে নির্যাতনের কথা ভুলে যায়েন না। এই চাপাতির রাজনীতি ক্যাম্পাসে আবার রিইনস্টল করতে চাইলে ছাত্রলীগ গেছে যে পথে, আপনারা যাবেন সেইপথে। গত ১৬ বছরে যে নির্যাতন হয়েছে, আপনারা মজলুম ছিলেন আপনারা জালিম হয়েন না। মজলুম জালিম হলে পৃথিবী বসবাসের অযোগ্য হয়ে যায়।

হাসনাত বলেন, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সম্মান জানাই। একই সঙ্গে মনে করিয়ে দিতে চাই, আবার যারা ছাত্রলীগ হয়ে উঠতে চাইবে, শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে অবস্থান নেবে তাদের পরিণতি ছাত্রলীগের মতই হবে।

হাসনাত আরও বলেন, গণতন্ত্রে উত্তোরণের এই লড়াই আমাদের সমন্বিত লড়াই। শহীদদের রক্তের দায় আমাদের ওপর রয়েছে। তাদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে মাদার পার্টির এজেন্ডা বাস্তবায়নের রাজনীতি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রিইনস্টল করতে পারি না। শিক্ষার্থীদের জন্য রাজনীতি করতে চাইলে তাদের ভাষায় তাদের মতো চলতে হবে। কিন্তু আপনারা যদি আবার ক্যাডার পলিটিকস করতে চান, হল দখল, সিট বাণিজ্য, চাঁদাবাজি করতে চান, আপনাদের পরিণতি হবে সাদ্দাম ইনানের মত।

গেস্টরুম চাঁদাবাজির স্বপ্ন আর বাংলাদেশে বাস্তবায়িত হবে না জানিয়ে হাসনাত বলেন, শিক্ষাঙ্গনে মুক্তচিন্তা মনস্তাত্ত্বিক সমৃদ্ধির রাস্তা আমরা সুপ্রশস্ত করেছি, আমরা চাই না কোনো ছাত্রসংগঠন শিক্ষার্থীদের টুঁটি চেপে ধরুক। হলগুলো হবে শিক্ষার্থীদের অবারিত বিচরণের ক্ষেত্র। গেস্টরুম চাঁদাবাজি রিইনস্টল করার স্বপ্ন আর বাংলাদেশে বাস্তবায়িত হবে না।  

এদিকে ছাত্রদলের সমাবেশে ঢাবি ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, কুয়েটে দুদিন আগে একটি টিম অত্যন্ত সুশৃংঙ্খলভাবে ফরম বিতরণ করেছে। যা আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। আজকে একটি গুপ্ত সংগঠন ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি চাই না বলে মিছিল আয়োজন করেছিল। যারা সেখানে ছাত্রদলের ফরম পূরণ করেছে, তাদের হামলা করেছে তারা। তারা একটি মব তৈরি করে শিক্ষার্থীদের বোঝাতে চাচ্ছে, ছাত্রদল ছাত্রলীগের মতো আধিপত্য করবে।

তিনি বলেন, যারা ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি চাই না বলে মিছিল করেছিল, তারা এখন ক্যাম্পাসগুলোতে নামে বেনামে সংগঠন খুলে বসে আছে। ছাত্রদল কোনো গেস্টরুম গণরুমের সংস্কৃতি ধারণ করে না।

তিনি বলেন, ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একটি মব তৈরি করা হয়েছিল যে, ছাত্রদল ডাকসু চায় না। কিন্তু ডাকসু আমাদের প্রাণের দাবি। আমরা ইতোমধ্যে ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংস্কারের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে প্রস্তাবনা দিয়েছি। আমরা প্রকাশ্যে মতামত বিনিময় করছি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে।

তিনি আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ। ৫ আগস্টের পর হয়তো কিছুদিন মব তৈরি করে তাদের আবেগকে নিয়ে খেলাধুলা করা গেছে, কিন্তু শিক্ষার্থীরা বুঝে গেছে, মব তৈরি করে কোনো ধরনের গুপ্তভিত্তিক চর্চা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আর হবে না।

গণেশ বলেন, গত ১৫ বছরে আমরা যতবেশি গুম-খুনের শিকার হয়েছি, তত বেশি কোনো একক সংগঠন শিকার হয়নি। আমরা ৫ আগস্টের পর কোনো ক্রেডিট নেইনি। ছাত্রদল ক্রেডিট নেওয়ার রাজনীতি করে না। ছাত্রদলের ইতিবাচক রাজনীতিকে কোনো আলবদর বাহিনী, বট বাহিনী, গুজব বাহিনী প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারবে না। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জ ভ স কর য ছ ত রদল ছ ত রদল র ভ স কর য র র জন ত মব ত র আম দ র আপন র র ওপর স গঠন

এছাড়াও পড়ুন:

লামিনে ‘মেসি’ ইয়ামাল

১৭ বছর বয়সী ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো: ১৯ ম্যাচ, ৫ গোল, ৪ গোলে সহায়তা।

১৭ বছর বয়সী লিওনেল মেসি: ৯ ম্যাচ, ১ গোল, গোলে সহায়তা নেই।

১৭ বছর বয়সী লামিনে ইয়ামাল: ১০০ ম্যাচ, ২২ গোল, ৩৩ গোলে সহায়তা।

মেসি–রোনালদোর সঙ্গে তুলনা নয়, লামিনে ইয়ামালের শুরুটা বোঝাতে এই পরিসংখ্যান হাজির করেছে টিএনটি স্পোর্টস। ধূমকেতুর মতো শুরু হলেও ধূমকেতুর মতোই মিলিয়ে যাওয়ার পাত্র তিনি নন।

বার্সেলোনার এস্তাদি অলিম্পিক লুইস কোম্পানিসে  গত রাতের ম্যাচটি স্মরণ করতে পারেন। ৬ গোলের থ্রিলার, যেখানে বার্সেলোনা–ইন্টার মিলান সেমিফাইনাল প্রথম লেগের ‘ক্লাসিক’ লড়াই ৩–৩ গোলে অমীমাংসীত। দুই দলের হয়েই ‘সুপার হিরো’ ছিলেন বেশ কজন। ইন্টারের যেমন ডেনজেল ডামফ্রিস ও মার্কাস থুরাম, বার্সার তেমনি রাফিনিয়া, ফেরান তোরেসরা। কিন্তু সবাইকে ছাপিয়ে ঠিকই রবির কিরণের মতো আলো দিয়েছেন এক কিশোর—লামিনে ইয়ামাল নাসরাউয়ি এবানা। সংক্ষেপে লামিনে ইয়ামাল।

আরও পড়ুন৬ গোলের থ্রিলারে বার্সেলোনা–ইন্টার সেয়ানে সেয়ানে টক্কর৮ ঘণ্টা আগে

২৪ মিনিটে ইয়ামালের করা গোলটির প্রসঙ্গে পরে আসা যাবে। যেভাবে খেলেছেন তাতে গোলটি না করলেও লোকে কাল রাতে তাঁর পারফরম্যান্স মনে রাখতেন। পরিসংখ্যান বলছে ১০২টি টাচ, একটি গোল, ২টি গোল হওয়ার মতো পাস, ৬টি শট (পোস্টে মেরেছেন দুবার) এবং ১০টির মধ্যে ৬টি সফল ড্রিবলিং।

কিন্তু পরিসংখ্যানে এ তথ্য নেই—মাঠে ডান প্রান্তকে ইয়ামাল ফাইনালে ওঠার হাইওয়ে বানিয়ে যতবার কাট–ইন করে ইন্টারের বক্সে ঢুকেছেন, সেটা আসলে ইতালিয়ান ক্লাবটির রক্ষণের জন্য দুঃস্বপ্নের। প্রতিবারই মৌমাছির মতো ছেঁকে ধরা হয়েছে ইয়ামালকে। কিন্তু আটকানো কি সম্ভব হয়েছে? রাত থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওগুলো ভাসছে। সেসব আসলে ইয়ামালের পায়ের কারুকাজে ইন্টারের রক্ষণকে স্রেফ খোলামকুচির মতো উড়িয়ে দেওয়ার ভিডিও।

ইয়ামাল কত ভয়ংকর সেটা এই এক ছবিতেই পরিস্কার। সবাই ছেঁকে ধরেও তাঁকে আটকাতে পারেননি

সম্পর্কিত নিবন্ধ