পৃথিবীতে বায়ুদূষণের পরিমাণ দিন দিন বেড়েছে চলেছে। আর তাই বৈশ্বিক কার্বন-দূষণের পরিমাণ কমাতে দীর্ঘদিন ধরেই বিকল্প জ্বালানির উৎস আবিষ্কারের জন্য কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা। এবার বায়ুমণ্ডলে থাকা কার্বন ডাই-অক্সাইড থেকে গাড়ি চালাতে সক্ষম জ্বালানি তৈরির জন্য বিশেষ ধরনের যন্ত্র তৈরি করেছেন যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী। তাঁদের দাবি, সৌরবিদ্যুতে চলা যন্ত্রটি বায়ুমণ্ডলে থাকা কার্বন ডাই-অক্সাইডকে সিনথেসিস গ্যাস বা সিনগ্যাসে রূপান্তর করতে পারে, যা কাজে লাগিয়ে গাড়ি ও উড়োজাহাজও চালানো যাবে।

নতুন যন্ত্রের বিষয়ে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী সায়ান কর জানান, কার্বন ডাই-অক্সাইড একটি ক্ষতিকর গ্রিনহাউস গ্যাস। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের পেছনে দায়ী এই গ্যাসকে দরকারি রাসায়নিক পদার্থে পরিণত করা যেতে পারে। উদ্ভাবিত যন্ত্রটি বিশেষ ফিল্টারের মাধ্যমে রাতে বাতাস থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড সংগ্রহ করে। এরপর দিনের বেলা সূর্যের আলো কাজে লাগিয়ে রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে সিনগ্যাস উৎপন্ন করে। এই গ্যাস পেট্রলের বিকল্প হিসেবে কাজ করতে পারে। সিনগ্যাস রাসায়নিক ও ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য তৈরি করতেও ব্যবহার করা যেতে পারে।

বিজ্ঞানী অধ্যাপক এরউইন রেইসনার বলেন, আমরা যেসব পণ্যের ওপর নির্ভর করি, তা তৈরির জন্য জীবাশ্ম জ্বালানি খনন করা হয় ও পোড়ানো হয়। তার পরিবর্তে আমরা সরাসরি বাতাস থেকে আমাদের প্রয়োজনীয় সব কার্বন ডাই–অক্সাইড পেতে পারি ও পুনরায় ব্যবহার করতে পারি। আমরা একটি সার্কুলার ইকোনমির কাঠামো গড়ে তুলতে পারি।

নেচার এনার্জি সাময়িকীতে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যন্ত্রটি মূলত বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন ডাই–অক্সাইড টেনে নিয়ে সিনথেসিস গ্যাস বা সিনগ্যাসে রূপান্তর করতে পারে। সৌরবিদ্যুতে চলায় যন্ত্রটি ব্যবহারের জন্য কোনো ধরনের ব্যাটারির প্রয়োজন হয় না। বর্তমানে ব্যবহৃত বিভিন্ন কার্বন সংগ্রহের প্রযুক্তির বিকল্প হতে পারে যন্ত্রটি। আর তাই কেমব্রিজ এন্টারপ্রাইজের সহায়তায় এই প্রযুক্তি বাণিজ্যিকীকরণের জন্য চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা।

সূত্র: ইনডিপেনডেন্ট

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র র জন য ব যবহ

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ