আপেল, কমলা, আঙুরসহ তাজা ফলের শুল্ক–কর কমানোর সুপারিশ
Published: 20th, February 2025 GMT
আপেল, কমলা, আঙুর, নাশপাতি, আনারসসহ তাজা ফলের ওপর আরোপিত শুল্ক–কর কমানোর সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন। সংস্থাটি মনে করছে, ডলারের মূল্যবৃদ্ধি ও শুল্ক–কর বাড়ানোর কারণে আমদানি করা তাজা ফলের দাম বেড়ে যাওয়ায় তা ভোক্তার ওপর অসহনীয় চাপ সৃস্টি করেছে।
সম্প্রতি তাজা ফল আমদানির ক্ষেত্রে সম্পূরক শুল্ক ২০ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এখন তা আগের জায়গায় ফিরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব করেছে ট্যারিফ কমিশন। এ ছাড়া তাজা ফল আমদানিতে অগ্রিম কর ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ শতাংশ এবং ২০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক যৌক্তিক করারও সুপারিশ করেছে সংস্থাটি।
গত সোমবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানকে এ–সংক্রান্ত চিঠি দিয়েছে ট্যারিফ কমিশন। চিঠির অনুলিপি অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়েও পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে ট্যারিফ কমিশন বলেছে, ডলারের দাম ও শুল্ক–কর বৃদ্ধির ফলে তাজা ফল আমদানি কমে গেছে। সর্বশেষ ২০২৩–২৪ অর্থবছরে আগের অর্থবছরের তুলনায় আপেল আমদানি ৫১ শতাংশ, মাল্টা ৭০ শতাংশ, আঙুর ২৯ শতাংশ কমেছে। অন্যদিকে সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোয় গত জানুয়ারিতে মেন্ডারিন ৫১ শতাংশ, আঙুর ২১ শতাংশ, আপেল ৩ দশমিক ৫ শতাংশ, নাশপাতি ৪৫ শতাংশ, আনার ও ড্রাগন ৩২ শতাংশ আমদানি কমেছে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায়। বর্তমানে ৮৬ টাকা মূল্যের ফল আমদানি করা হলে তার জন্য ১২০ টাকা কর দিতে হয় বলে জানিয়েছে ট্যারিফ কমিশন।
শুল্ক–কর কমানোর জন্য ট্যারিফ কমিশনের সুপারিশের বিষয়ে জানতে চাইলে এনবিআরের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সংস্থাটির প্রস্তাব বিবেচনা করা হচ্ছে।
এনবিআরের হিসাবে বিদেশি ফল আমদানিতে ২০২৩–২৪ অর্থবছরে ৩০ কোটি মার্কিন ডলার খরচ হয়েছে। প্রতি ডলারের বিনিময়মূল্য ১১৭ টাকা ধরে হিসাব করলে বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা। আর জাহাজভাড়া, বিমাসহ সব মিলিয়ে এ খরচ বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ৬৬৪ কোটি টাকায়। ফল আমদানি থেকে সরকার রাজস্ব আদায় করেছে ৫ হাজার ১৩৯ কোটি টাকা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফল আমদ ন শ ল ক কর ল আমদ ন
এছাড়াও পড়ুন:
পৃথিবী থেকে ৩৭ কোটি মাইল দূরে থাকা মহাকাশযানের ক্যামেরা যেভাবে মেরামত করেছে নাসা
২০২৩ সালে বৃহস্পতি গ্রহকে প্রদক্ষিণ করার সময় বিকিরণের কারণে বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হয় নাসার জুনো মহাকাশযান। সে সময় বিভিন্ন যন্ত্রাংশের পাশাপাশি মহাকাশযানটিতে থাকা ‘জুনোক্যাম’ ক্যামেরাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর ফলে আইও চাঁদের নিম্নমানের ছবি পাঠাতে থাকে ক্যামেরাটি। সমস্যা সমাধানে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে পৃথিবী থেকেই ৩৭ কোটি মাইল দূরে অবস্থিত ক্যামেরাটি মেরামত করে নাসা। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত এনএসআরইসি সম্মেলনে পৃথিবী থেকে ক্যামেরাটির মেরামতপদ্ধতি প্রকাশ করেছে মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটি।
নাসার তথ্যমতে, অ্যানিলিং প্রক্রিয়া ব্যবহার করে জুনোক্যাম ক্যামেরা মেরামত করা হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় ক্যামেরাটিকে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উত্তপ্ত করে মাইক্রোস্কোপিক ত্রুটি মেরামত করা হয়। মেরামতের পরে বৃহস্পতির চাঁদের উন্নতমানের ছবি তুলতে সক্ষম হয়েছে ক্যামেরাটি। ফলে বৃহস্পতির চাঁদে সালফার ডাই–অক্সাইড, তুষারপাত ও আগ্নেয়গিরির কার্যকলাপ শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সান দিয়েগোর ম্যালিন স্পেস সায়েন্স সিস্টেমের জুনোক্যাম ইমেজিং ইঞ্জিনিয়ার জ্যাকব শ্যাফনার জানান, ‘অ্যানিলিং প্রক্রিয়ায় সিলিকনের মতো উপাদানকে মাইক্রোস্কোপিক স্তরে পরিবর্তন করা যায়। আমরা জানতাম না যে এ প্রক্রিয়ায় ক্ষতি মেরামত হতে পারে। আমরা একটি হিটারের মাধ্যমে জুনোক্যাম ক্যামেরার তাপমাত্রা ৭৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছিলাম। এই তাপমাত্রা জুনোক্যামের জন্য স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি উষ্ণ।’
অ্যানিলিং একটি তাপীয় প্রক্রিয়া যা মূলত ধাতুবিদ্যা ও পদার্থবিজ্ঞানে ব্যবহৃত হয়। কোনো পদার্থের ভৌত ও কখনো কখনো রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন করার জন্য এই প্রক্রিয়া ব্যবহার করা হয়। তবে পুরো সমস্যা সম্পর্কে জানা এবং পৃথিবী থেকে ৩৭ কোটি মাইল দূর থেকে ক্যামেরা মেরামত করা চ্যালেঞ্জিং ছিল।
ম্যালিন স্পেস সায়েন্স সিস্টেমের জুনোক্যামের যন্ত্র বিভাগের প্রধান মাইকেল র্যাভিন জানান, ‘বৃহস্পতি গ্রহে ৫৫তম বার প্রদক্ষিণের পরেই বিভিন্ন ছবিতে রেখা দেখা যায়। আমরা ছবির মান উন্নত করার জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রক্রিয়াকরণের চেষ্টা করলেও কিছুই কাজ করেনি। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আইও চাঁদের মুখোমুখি হবে দেখে আমরা অ্যানিলিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করি।’
সূত্র: এনডিটিভি