মানুষ অবিলম্বে ভোট দেওয়ার জন আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন দেখতে চায়
Published: 21st, February 2025 GMT
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, গণতন্ত্রের পথে নিতে ‘ভোট দেওয়ার’ জন আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন মানুষ অবিলম্বে দেখতে চায়। তিনি বলেন, মহান ভাষা আন্দোলনের যে ধারাবাহিকতা, ভাষা আন্দোলনের আগে বাংলাদেশের মানুষের স্বাধীনতার যে ইচ্ছা সেই ইচ্ছার যে ধারাবাহিকতা এবং আজকে ২০২৫ সালে এসে মানুষের নতুন প্রজন্মের ভোট দেওয়ার যে আকাঙ্ক্ষা, মানুষের যে প্রত্যাশা সেই প্রত্যাশার প্রতিফলন কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ দেখতে চায়।
বৃহস্পতিবার বিকালে মহান শহীদ দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির উদ্যোগে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মূল আকাঙ্ক্ষার কথা তুলে ধরে আবদুল মঈন খান বলেন, আজকে বাংলাদেশের মানুষ একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে হস্তান্তর করেছে, দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছে। এই মানুষের আরও একটি দাবি রয়েছে- সেটি হচ্ছে যে, দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে, আমাদের সমাজকে স্বৈরাচার থেকে একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় রূপান্তরিত করতে হবে।
তিনি বলেন, এই দায়িত্ব এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কতটা সঠিকভাবে পালন করছে, কি করছে না এটা বাংলাদেশের মানুষের রাডারে রয়েছে। এটা অস্বীকার করা যাবে না। কারণ বাংলাদেশের মানুষের রক্ত আছে, জবাবদিহিতার জন্য তারা আবার যেকোন সময়ে ফুঁসে উঠতে পারে। এটা সকলকে স্মরণে রাখতে হবে।
ভাষা আন্দোলনসহ স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন এবং ২৪‘র ছাত্র-জনতার বিপ্লবে সকল শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান আবদুল মঈন খান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ সব সময় অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছে। ভাষা আন্দোলনও প্রতিবাদ করেছে ছাত্র সমাজ। আমি বিশ্বাস করি, ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ‘২৪ এর ছাত্র-জনতার আন্দোলন একই সূত্রে প্রতিথ। সেই সূত্রটি কি? প্রতিবাদ। অন্যায়ের প্রতিবাদ, স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, আমাদের কথা বলতে না দেওয়ার প্রতিবাদ, আমাদের ভোটের অধিকার ছিনিয়ে নেবার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। আসুন, এখান থেকে আমরা এই বাংলাদেশকে নতুন করে গড়ে তুলি।
দলের প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, মেজর (অব.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক ৭ দিনের রিমান্ডে
দুর্নীতি ও রায় জালিয়াতির অভিযোগের মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে পুলিশ তার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. ছানাউল্ল্যাহর আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
২০২৪ সালের ২৭ অগাস্ট শাহবাগ থানায় দুর্নীতি ও রায় জালিয়াতির অভিযোগের মামলা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন।
গত ২৪ জুলাই সকালে ঢাকার ধানমন্ডির বাসা থেকে সাবেক এ প্রধান বিচারপতিকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।
সম্প্রতি তার গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। সংগঠনটি দাবি করেছে, ‘বিচার বিভাগ ও গণতন্ত্র ধ্বংসের মূল কারিগর’ তিনি।
খায়রুল হক ২০১০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর দেশের ১৯তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন এবং ২০১১ সালের ১৭ মে বয়স অনুযায়ী অবসর গ্রহণ করেন। বিচারপতি হিসেবে তার সবচেয়ে আলোচিত এবং বিতর্কিত রায় ছিল সংবিধানের ১৩তম সংশোধনী, অর্থাৎ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে। ওই রায়ের পর দেশে আর কোনো নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হয়নি।
বিচারপতি খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ ২০১১ সালে এই রায় ঘোষণা করে। এতে বলা হয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অসাংবিধানিক এবং গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার পরিপন্থি। এরপর থেকে নির্বাচনের সময় রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরাই সরকারে থেকে নির্বাচন পরিচালনা করছে। বিরোধী দলগুলোর দাবি, এই রায়ের মধ্য দিয়েই দেশে একতরফা নির্বাচন ও গণতন্ত্রহীনতার ভিত্তি তৈরি হয়।
২০১৩ সালের ২৩ জুলাই তাকে তিন বছরের জন্য আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ওই মেয়াদ শেষে কয়েক দফা কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে তাকে পুনর্নিয়োগ দেওয়া হয়। সেখানে তিনি আইন সংস্কার সংক্রান্ত নানা প্রস্তাব ও গবেষণায় যুক্ত ছিলেন। বিভিন্ন সময় আইনি সেমিনার, বক্তৃতা এবং পরামর্শমূলক কাজে অংশ নিয়েছেন তিনি।
আওয়ামী লীগপন্থি আইনজীবী ও মহলগুলো তাকে ‘সংবিধান রক্ষার সাহসী রূপকার’ হিসেবে অভিহিত করলেও, বিএনপি ও তাদের সহযোগী সংগঠনগুলোর মতে তিনি ‘বিচার বিভাগের রাজনৈতিকীকরণের পথপ্রদর্শক’।
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম বলেছে, ‘তত্ত্বাবধায়ক বাতিল করে তিনি দেশের নির্বাচনব্যবস্থা ধ্বংস করেছেন।’
ঢাকা/কেএন/ইভা