সংঘর্ষের জেরে গত ৫ দিন ধরে অচলাবস্থা বিরাজ করছে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট)। ৬ দফা দাবিতে শনিবার ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও পোস্টারিং করেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

শনিবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে কুয়েটের শিক্ষার্থীরা স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের সামনে জড়ো হন। দুপুর ১২টার দিকে তারা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়।

সেখানে প্রেস ব্রিফিংয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সংঘর্ষের পরদিন ৬ দফা দাবি জানালেও তা পূরণ হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শুধু দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়েছে। কিন্তু হামলাকারী ছাত্রদল ও যুবদলের নেতাকর্মীরা ধরা পড়েনি। উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও ছাত্র বিষয়ক পরিচালককে অপসারণ করে নতুন নিয়োগ দেওয়া হয়নি। আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকলেও তাদের প্রশাসনের কেউ দেখতে যায়নি। বর্তমানে ক্যাম্পাসে তারা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন।

তারা বলেন, ইতোমধ্যে তারা প্রধান উপদেষ্টার কাছে তাদের ৬ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি পাঠিয়েছেন। তাদের দাবি পূরণ না হওয়া তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। তারা হল ছাড়বেন না। এরপর শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসজুড়ে হামলাকারীদের ছবি সম্বলিত পোস্টার লাগান।

প্রসঙ্গত, ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি নিয়ে বিরোধের জের ধরে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদলের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক আহত হন। ১৯ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীরা ৭টি একাডেমিক ভবন ও একটি প্রশাসনিক ভবনে এবং ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে উপাচার্যের বাসভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয়।

শনিবার ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখা যায়, প্রধান গেটে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবন এবং উপাচার্যের বাসভবনের প্রধান গেটে তালা ঝুলছে। প্রশাসনিক ভবন তালাবদ্ধ থাকায় কেউ ঢুকতে পারছেন না। বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। যা আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।

ঘটনা তদন্তে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের সভায় গঠিত ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক ড.

এম এম এ হাশেম বলেন, আমরা বৃহস্পতিবার থেকে তদন্ত শুরু করেছি। ইতোমধ্যে বেশ কিছু সাক্ষ্য প্রমাণ সংগ্রহ করেছি। ৩ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।

কুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ জানান, তিনি চিকিৎসার জন্য গত বৃহস্পতিবার থেকে ঢাকায় রয়েছেন। রোববার ক্যাম্পাসে ফিরবেন।

তিনি বলেন, পদত্যাগ করা ছাড়া শিক্ষার্থীদের অন্য ৫টি দাবি পূরণ করা হয়েছে। আশা করছি শিক্ষার্থীরা শিগগিরই শান্ত হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপ চ র য ক ভবন তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

যমুনা অভিমুখী বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের মিছিল, পুলিশের বাধায় ছত্রভঙ্গ

জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলনরত বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের যমুনা অভিমুখী মিছিলটি পুলিশি বাধায় ছত্রভঙ্গ হয়ে গেছে। এ সময় পুলিশ আন্দোলনকারীদের ওপর সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানের গ্যাসের শেল ও জলকামান থেকে পানি ছোড়ে।

আজ সোমবার বিকেল চারটার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার উদ্দেশে পদযাত্রা শুরু করেন শিক্ষকেরা। মিছিলটি হাইকোর্ট সংলগ্ন কদম ফোয়ারার সামনে পৌঁছালে পুলিশ তাদের আটকে দেয়। সেখানে শিক্ষকেরা পুলিশের ব্যারিকেড সরানোর চেষ্টা করলে পুলিশ তাঁদের ওপর সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে এবং জলকামানের পানি ছিটিয়ে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে। একপর্যায়ে আন্দোলনকারীরা পিছু হটেন।

তবে বাংলাদেশ বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সাধারণ শিক্ষক ঐক্য পরিষদের নেতা আব্দুর রহিম সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, হাইকোর্টের সামনে পুলিশ তাঁদের বাধা দেয় এবং লাঠিপেটা ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। এতে ১০-১২ জন শিক্ষক আহত হন।

বিকেল চারটার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার উদ্দেশে পদযাত্রা শুরু করেন শিক্ষকেরা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যমুনা অভিমুখী বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের মিছিল, পুলিশের বাধায় ছত্রভঙ্গ