কুয়েটে অচলাবস্থা, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল ও পোস্টারিং
Published: 22nd, February 2025 GMT
সংঘর্ষের জেরে গত ৫ দিন ধরে অচলাবস্থা বিরাজ করছে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট)। ৬ দফা দাবিতে শনিবার ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও পোস্টারিং করেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
শনিবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে কুয়েটের শিক্ষার্থীরা স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের সামনে জড়ো হন। দুপুর ১২টার দিকে তারা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়।
সেখানে প্রেস ব্রিফিংয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সংঘর্ষের পরদিন ৬ দফা দাবি জানালেও তা পূরণ হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শুধু দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়েছে। কিন্তু হামলাকারী ছাত্রদল ও যুবদলের নেতাকর্মীরা ধরা পড়েনি। উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও ছাত্র বিষয়ক পরিচালককে অপসারণ করে নতুন নিয়োগ দেওয়া হয়নি। আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকলেও তাদের প্রশাসনের কেউ দেখতে যায়নি। বর্তমানে ক্যাম্পাসে তারা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন।
তারা বলেন, ইতোমধ্যে তারা প্রধান উপদেষ্টার কাছে তাদের ৬ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি পাঠিয়েছেন। তাদের দাবি পূরণ না হওয়া তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। তারা হল ছাড়বেন না। এরপর শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসজুড়ে হামলাকারীদের ছবি সম্বলিত পোস্টার লাগান।
প্রসঙ্গত, ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি নিয়ে বিরোধের জের ধরে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদলের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক আহত হন। ১৯ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীরা ৭টি একাডেমিক ভবন ও একটি প্রশাসনিক ভবনে এবং ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে উপাচার্যের বাসভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয়।
শনিবার ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখা যায়, প্রধান গেটে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবন এবং উপাচার্যের বাসভবনের প্রধান গেটে তালা ঝুলছে। প্রশাসনিক ভবন তালাবদ্ধ থাকায় কেউ ঢুকতে পারছেন না। বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। যা আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।
ঘটনা তদন্তে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের সভায় গঠিত ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক ড.
কুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ জানান, তিনি চিকিৎসার জন্য গত বৃহস্পতিবার থেকে ঢাকায় রয়েছেন। রোববার ক্যাম্পাসে ফিরবেন।
তিনি বলেন, পদত্যাগ করা ছাড়া শিক্ষার্থীদের অন্য ৫টি দাবি পূরণ করা হয়েছে। আশা করছি শিক্ষার্থীরা শিগগিরই শান্ত হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: উপ চ র য ক ভবন তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
গোপালগঞ্জে ডিসির বাসভবনে হামলার ঘটনায় ১০১ জনের বিরুদ্ধে মামলা
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচি ঘিরে হামলা ও সংঘর্ষের জেরে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) বাসভবনে হামলার ঘটনায় আরও একটি মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে সদর থানার সহকারী উপপরিদর্শক ফারুক হোসেন বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলাটি করেন।
মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৪১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৫০ থেকে ৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৬ জুলাই এনসিপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জ পৌর পার্ক, লঞ্চঘাট, কাঁচাবাজার এলাকাসহ সড়ক অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে জনগণের মনে ভীতি ও আতঙ্ক সৃষ্টি করে যান চলাচল ব্যাহত করা হয়। কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনের পক্ষে মিছিল করা হয়। আসামিরা অসৎ উদ্দেশ্যে ও এনসিপির পথসভা নস্যাৎ করতে সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টিসহ সরকারি সম্পত্তির ক্ষতিসাধন করতে জনসাধারণের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করেন। এ সময় জেলা প্রশাসকের বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়।
এ নিয়ে গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলা ও ককটেল নিক্ষেপ, পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, জেলা কারাগারে হামলা, জেলা প্রশাসকের বাসভবনে হামলা, রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে জড়ানোর অভিযোগে ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মোট ১৪টি মামলা করা হলো। সদর, কাশিয়ানী, টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া থানায় মামলাগুলো দায়ের করা হয়েছে। ১৪টি মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১ হাজার ১৭৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ১৪ হাজার ৫৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এসব মামলায় ১৬ জুলাই থেকে গত সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৩৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
১৬ জুলাই এনসিপির কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মী ও সমর্থকেরা হামলা চালান। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে নেতা–কর্মীদের সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেদিন প্রথমে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। রাতেই কারফিউ জারি করা হয়। পরে কারফিউর মেয়াদ কয়েক দফা বাড়ানো হয়। পরে ২০ জুলাই রাত আটটায় কারফিউ ও ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়া হয়।