নবান্নের মতো আলু নিয়ে রাজশাহীতে অন্য রকম এক উৎসব
Published: 25th, February 2025 GMT
সারা দিন আলু তোলা হয়েছে। সন্ধ্যায় শুরু হয়েছে রান্না। আলু ও মাছের ঘন্ট। যে শ্রমিকেরা সারা দিন আলু তুলেছেন, তাঁরাই বাজার করেছেন, তাঁরাই রান্না করছেন। তাঁরাই অনুষ্ঠানের অতিথি। মৌসুমের প্রথম আলু তোলা উপলক্ষে রাজশাহীর তানোর উপজেলার চোরখৈর গ্রামে নবান্ন উৎসবের মতো করে রোববার রাতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন একজন চাষি।
প্রথম দিন এই কৃষকের জমি থেকে শ্রমিকেরা ৪০০ বস্তা আলু তুলেছেন। সেই আলু বস্তায় ভরে ট্রাকে বোঝাই করা হয়েছে। সারা দিনের এই পরিশ্রম শেষে অনুষ্ঠান চলে রাত ১২টা পর্যন্ত।
এই চাষির নাম রানা চৌধুরী। তিনি এবার ২৪ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন। এর মধ্যে ১০ বিঘা পৈতৃক জমি এবং বাকি ১৪ বিঘা জমি ইজারা নেওয়া। প্রতি বিঘা জমির ইজারামূল্য ২০ হাজার টাকা। তাঁর জমিতে আলুর মৌসুমের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কাজ করেন ৫০ জন শ্রমিক। তাঁদের আনন্দ দেওয়ার জন্য তিনি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকেন।
বিকেলে রানা চৌধুরীর মাঠে গিয়ে দেখা যায়, লাঙল দিয়ে আলুখেতে চাষ দেওয়া হয়েছে। সারি সারি আলু দেখতে অনেকটা ডিমের মতো লাগছে। আলুর মাঠে উৎসব উৎসব ভাব। সেই শ্রমিকেরাই রাতে আবার উৎসবের আয়োজন করেছেন। গ্রামের শেষ মাথায় যেখানে তাঁর খামারের শুরু হয়েছে, সেখানেই একটি বাড়িতে রানা চৌধুরী এ আয়োজন করেছেন।
সন্ধ্যার পর ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, কেউ আলু আর মাছের ঘন্ট রান্না করছেন, কেউ ভাত রান্নায় ব্যস্ত। আবার কেউ হাঁসের মাংস রান্না করছেন। শ্রমিকদের খেতে বসার জন্য পেতে রাখা হয়েছে খালি আলুর বস্তা। ৭৫ কেজি আলু ধরে, এমন বস্তা কৃষক মিল থেকে বায়না দিয়ে তৈরি করে নিয়েছেন। খালি বস্তায় বসে খাওয়ার জন্য কলাপাতা ও কিছু ওয়ান টাইম প্লেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অনেকে কলাপাতায় খাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ ওয়ান টাইম প্লেটে খাচ্ছেন।
এ আয়োজনের জন্য বাজার করেছেন হাফিজুল ইসলাম নামের এক শ্রমিক। তিনি বলেন, ‘আলুর ঘন্ট পাকানির লাইগি আমি নিজে কলমা হাট থাইকি ছয় কেজি কাতলা মাছ কিনে আনিছি।’
ঘন্ট রান্নার জন্য সুনাম আছে শ্রমিক এমদাদুল হকের। রাতে দেখা গেল, তাঁর নেতৃত্বেই এই ঘন্ট রান্নার কাজ চলছে। তিনি বলেন, সাত কেজি আলু আর ছয় কেজি মাছ একসঙ্গে করে রান্না করা হচ্ছে। মাছ আর আলু প্রায় সমান সমান করা হয়েছে। এতে স্বাদ ভালো হয়।
অনুষ্ঠান আলু নিয়ে হলেও তানোরের ওই এলাকায় হাঁসের মাংস দিয়ে অতিথিদের আপ্যায়ন করার চল আছে। রানা চৌধুরী তাই শ্রমিকদের জন্য হাঁসের মাংস রান্না করার ব্যবস্থা করেন। সাইফুল ইসলাম নামের এক শ্রমিক হাঁসের মাংস রান্না করেন।
সারা দিন আলু তোলার কাজ যারা করেন, তাঁরাই সন্ধ্যার পর থেকে রান্না–খাওয়ার কাজে ব্যস্ত থাকেন.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন র জন য কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
দুদিনের সফরে কলকাতায় ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু
ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু দুদিনের সফরে বুধবার কলকাতায় পৌঁছেছেন। বিকেলে তিনি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ও রাজ্যের বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা।
রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু পরে নদীয়া জেলার কল্যাণীতে অবস্থিত অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেসের (এইমস) প্রথম সমাবর্তন উৎসবে যোগ দেন। সেখানে তাঁকে সংবর্ধনা জানান এইমসের পরিচালক রামজি সিং। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি কৃতী শিক্ষার্থীদের হাতে সনদ তুলে দেন।
সন্ধ্যা ছয়টার দিকে রাষ্ট্রপতি যান দক্ষিণেশ্বর কালীমন্দিরে। সেখানে কালীমন্দিরে পূজা অর্চনা করেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন তাঁর কন্যা ইতিশ্রী মুর্মু।
দক্ষিণেশ্বর কালীমন্দিরের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও রামকৃষ্ণদেবের বংশধর কৌশিক চক্রবর্তী রাষ্ট্রপতির হাতে মন্দিরে নিবেদিত পদ্মফুল ও প্রসাদ তুলে দেন। পরে রাষ্ট্রপতি রামকৃষ্ণদেবের বসতঘর পরিদর্শন করে রাজভবনের উদ্দেশে রওনা হন।
বৃহস্পতিবার সকালে রাষ্ট্রপতি ঝাড়খন্ড রাজ্যের দেওঘরে যাবেন। সেখানে অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস (এইমস), দেওঘরের প্রথম সমাবর্তন উৎসবে যোগ দেবেন। এ প্রতিষ্ঠানেও এই প্রথমবার সমাবর্তনের আয়োজন করা হয়েছে।