‘অটো চয়েস কেউ নয়’, মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ প্রসঙ্গে শান্ত
Published: 25th, February 2025 GMT
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যাটিং ব্যর্থতার দায় শুধুমাত্র মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহর ওপর চাপাতে নারাজ বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। তিনি মনে করেন, পুরো দলই ব্যর্থ হয়েছে। একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, দলে কেউ স্বয়ংক্রিয়ভাবে একাদশে জায়গা পান না এবং সৌম্য সরকারের বাদ পড়ার কারণও ব্যাখ্যা করেছেন। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির টিকিট নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ২৩৬ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। জবাবে নিউজিল্যান্ড ৫ উইকেট হাতে রেখেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায়।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে একসময় ২ উইকেটে ৯৭ রান করেছিল বাংলাদেশ। তবে এরপর দ্রুত তিন উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে দল। মাইকেল ব্রেসওয়েলের অফ-স্পিনে তাওহিদ হৃদয়, মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ পরপর আউট হন, আর তিনটি উইকেটই ছিল বাজে শটের ফসল। বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম অভিজ্ঞ দুই ক্রিকেটার মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহর কাছ থেকে বেশি প্রত্যাশা থাকে।
তবে শান্ত মনে করেন, ব্যর্থতার দায় শুধু তাদের নয়, বরং পুরো ব্যাটিং ইউনিটের। ‘দুজন সিনিয়র ক্রিকেটারকে আলাদাভাবে দেখতে চাই না। আমার মনে হয়, পুরো দল হিসেবে আমরা ভালো খেলিনি। সিনিয়র ক্রিকেটার বলে কারও ওপর বাড়তি প্রত্যাশা থাকবে, এমন নয়। ব্যাটিং গ্রুপ হিসেবে আমরা ব্যর্থ হয়েছি’, বলেন শান্ত।
সৌম্য সরকারের বাদ পড়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, বিশেষ করে তার সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের পরিপ্রেক্ষিতে। ভারতের বিপক্ষে আগের ম্যাচে শূন্য রানে আউট হলেও তার আগে ৭৩ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। গত বিশ্বকাপের পর থেকে এই ম্যাচের আগে পর্যন্ত ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহকও ছিলেন তিনি। অন্যদিকে, মুশফিক আগের ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে প্রথম বলেই আউট হন এবং তার শেষ ১৩ ইনিংসে মাত্র একটি ফিফটি ছিল। এরপরও কেন তাকে দলে রাখা হলো?
শান্তর ব্যাখ্যা, ‘এই দলে কেউ অটো চয়েস নয়। সৌম্য টপ অর্ডারে ব্যাট করে, আর রিয়াদ ভাই লোয়ার-মিডল অর্ডারে ব্যাট করে। সৌম্য যদি খেলত, তাহলে ব্যাটিং অর্ডারে বড় পরিবর্তন করতে হতো। রিয়াদ ভাই সাম্প্রতিক ম্যাচগুলোতে ভালো ব্যাটিং করেছেন, তাই তাকে একাদশে রাখা হয়েছে।’
মুশফিকের ক্ষেত্রেও দল একইভাবে চিন্তা করেছে বলে জানান অধিনায়ক, ‘মুশফিক ভাইয়ের কিপিং আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তার অভিজ্ঞতা ও দলের প্রতি অবদান বছরের পর বছর ধরে প্রমাণিত। কয়েকটি ইনিংসে রান না পেলেও আমি তার ফর্ম নিয়ে চিন্তিত নই। হয়তো পরের ম্যাচেই ঘুরে দাঁড়াবেন তিনি।’ বাংলাদেশ ইতোমধ্যে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দৌড় থেকে ছিটকে গেছে। তাই বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটি হবে শুধুই আনুষ্ঠানিকতার।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’
সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’
অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি বরাবর অভিযোগ করেন।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।