মঙ্গল গ্রহে ৩০০ কোটি বছর আগে ছিল সমুদ্রসৈকত, দাবি বিজ্ঞানীদের
Published: 26th, February 2025 GMT
মঙ্গল গ্রহের পরিবেশ কেমন ছিল, তা জানার জন্য দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করছেন বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি মঙ্গল গ্রহের উত্তর গোলার্ধে ৩০০ কোটি বছর আগে বিলুপ্ত হওয়া এক সমুদ্রসৈকতের সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। চীনের ঝুরং রোভারের সংগৃহীত তথ্য বিশ্লেষণ করে এই সমুদ্রসৈকতের তথ্য জানা গেছে। পিএনএএসে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রবন্ধে এ তথ্য প্রকাশ করেছেন চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের একদল বিজ্ঞানী।
বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, মঙ্গল গ্রহের উল্কা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, প্রায় ৪৫০ কোটি বছর আগে সেখানে পানির উপস্থিতি ছিল। শুধু তা–ই নয়, ৩৬০ কোটি বছর আগে মঙ্গল গ্রহের প্রায় অর্ধেক অংশজুড়ে ছিল মহাসাগর। নতুন এই গবেষণার মাধ্যমে গ্রহটিতে ৩০০ কোটি বছরের পুরোনো এক সমুদ্রসৈকতের খোঁজ পাওয়া গেছে।
চীনের গুয়াংঝু বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী জিয়ানহুই লির নেতৃত্বে পরিচালিত এ গবেষণায় চীনের জাতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার পাঠানো ঝুরং রোভারের সংগ্রহ করা তথ্য বিশ্লেষণ করে শত শত কোটি বছর পুরোনো উপকূলরেখায় বেশ কিছু শিলার সন্ধান পাওয়া গেছে। এসব শিলা সমুদ্রের পানির কারণে প্রভাবিত হয়েছে।
সমুদ্র থাকার কারণে মঙ্গল গ্রহে প্রাণ ধারণের উপযোগী পরিবেশ ছিল বলে ধারণা করছেন বিজ্ঞানীরা। ঝুরং রোভারটি ২০২০ সালে মঙ্গলে পাঠানো হয়। ২০২১ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ইউটোপিয়া প্ল্যানিটিয়া নামের একটি এলাকায় অবস্থান করে তথ্য সংগ্রহ করে রোভারটি।
সূত্র: এনডিটিভি
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।
আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।
বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’
এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।
গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।