চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে মাদক সেবন করে ছাত্রকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার উপজেলার হাসাদাহ করিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ভুক্তভোগীর স্বজন বিদ্যালয়ে এসে শিক্ষক শফিকুল ইসলাম মোহনকে ঘেরাও করেন। পরে পুলিশ এসে তাঁকে সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যায়। 

এলাকাবাসীর ভাষ্য, সহকারী শিক্ষক শফিকুর রহমান মোহন মাদকাসক্ত। মাঝেমধ্যেই তিনি গাঁজা সেবন করে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করেন। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মারধরসহ অশোভন আচরণ করেন। বাদ পড়েন না অন্য শিক্ষকরাও।

জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুরে বিদ্যালয়ের প্রধান ফটক বন্ধ করা নিয়ে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র অভিকে মারধর করেন শিক্ষক মোহন। এ সময় পালিয়ে বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি বাবা শাহীন আলমকে জানায় অভি। তিনি প্রধান শিক্ষকের কাছে এ বিষয়ে জানতে আসেন। এ ঘটনায় মোহন ক্ষিপ্ত হয়ে শাহীন আলমের ওপর হামলা করেন। তাঁর সঙ্গে থাকা বড় ভাই এনামুল বাধা দিতে এলে তাঁকেও পেটানো হয়। এলাকায় সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজন বিদ্যালয়ে এসে শিক্ষক মোহনকে ঘেরাও করেন। খবর পেয়ে হাসাদাহ ক্যাম্পের পুলিশ সদস্যরা এসে তাঁকে সরিয়ে নিয়ে যান। 

ঘটনার পর বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে শিক্ষক মোহন সাংবাদিকদেরও গালাগাল করেন। কোনোরকম বক্তব্য দিতে রাজি হননি।

শিক্ষার্থী অভির ভাষ্য, প্রধান শিক্ষকের নির্দেশেই মঙ্গলবার দুপুরে বিদ্যালয়ের প্রধান ফটক বন্ধ করে সে। বাইরে থেকে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় স্যার (মোহন) এসে ফটক বন্ধ দেখে রেগে যান। পরে তাকে ডেকে মারধর শুরু করেন। কোনোরকমে পালিয়ে বাড়িতে চলে যায় সে।

তার বাবা শাহীন আলম বলেন, শিক্ষক তো মানুষ গড়ার কারিগর। তিনি শ্রেণিকক্ষে মাতলামি করেন, কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের গায়ে হাত তোলেন– এটি কখনোই মেনে নেওয়া যায় না। এমন শিক্ষকের কাছে শিক্ষার্থীরা কখনোই নিরাপদ নয়।

করিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শরিফ উদ্দিন বলেন, ‘শফিকুল ইসলাম মোহন মাদকাসক্ত। তিনি প্রতিনিয়ত গাঁজা সেবন করে আসেন। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রায় সময় দুর্ব্যবহার করেন। আমার সঙ্গেও খারাপ আচরণ করেছেন। মাঝেমধ্যে মারধরের হুমকি দিয়েছেন।’ আগেও মোহনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন বলেন, শিক্ষকের এমন কাজ সত্যিই দুঃখজনক। ইতোপূর্বে বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তি দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবারের ঘটনাটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তদন্তের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অহিন্দ্র কুমার মণ্ডল।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ বননগর ম রধর

এছাড়াও পড়ুন:

খামেনিকে হত্যার ইসরায়েলি পরিকল্পনা আটকে দিয়েছিলেন ট্রাম্প

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যার ইসরায়েলের পরিকল্পনা কয়েক দিন আগে আটকে দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দুজন মার্কিন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

ইসরায়েল গত শুক্রবার ভোর রাতে হামলা করে দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর শীর্ষ পদের প্রায় সব কর্মকর্তাকে হত্যা করে। এ ছাড়া ইসরায়েলি হামলায় খামেনির একজন উপদেষ্টাও নিহত হন।

মার্কিন প্রশাসনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘ইরানিরা কি এখন পর্যন্ত কোনো আমেরিকানকে হত্যা করেছে? না, যতক্ষণ না তারা এটা করছে, ততক্ষণ আমরা কোনো রাজনৈতিক নেতৃত্বকে আক্রমণের কথা ভাবছিও না।’

এদিকে গতকাল রোববার ফক্স নিউজকে সাক্ষাৎকার দেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। সেখান তাকে খামেনিকে হত্যার পরিকল্পনার বিষয়ে রয়টার্সের প্রতিবেদনের বিষয়ে জানতে প্রশ্ন করেলে নেতানিয়াহু বলেন, ‘কখনো আলাপই হয়নি, এমন অনেক বিষয় নিয়েও খবর প্রকাশ করা হয়েছে। আমি সে বিষয়ে কিছু বলতে চাই না।’

ফক্সের ‘স্পেশাল রিপোর্ট উইথ ব্রেট বেয়ার’ অনুষ্ঠানে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যা করার দরকার, তা করি।’ নেতানিয়াহু বলেন, ইরানে ইসরায়েলের সামরিক হামলার একটি ফল হতে পারে সরকার পরিবর্তন। তেহরানের সৃষ্ট ‘অস্তিত্বের হুমকি’ দূর করতে ইসরায়েল যা যা প্রয়োজন, তা-ই করবে বলেও জানান তিনি।

এদিকে চলমান এই সংঘাত ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বেড়েছে। তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, এটি সহজেই শেষ করা যেতে পারে। একই সঙ্গে ইরানকে সতর্ক করে তিনি বলেছেন, যদি ইরান কোনো আমেরিকান লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করে, তবে যুক্তরাষ্ট্রও এ সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ