টাঙ্গাইলে শিক্ষক মো. ছানোয়ার হোসেন ও তার স্ত্রী সালমা খাতুন শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড হতে অগ্রণী ব্যাংকের কাজ শেষে সিটি ব্যাংকে যাচ্ছিলেন। বুধবার সকাল সোয়া ১১টার দিকে তারা রাস্তা পার হওয়ার সময় অন্য এক নারী তার স্ত্রীর হাত ধরেন। তাদের সাথে আরো তিন নারী ছিলেন। সিটি ব্যাংকে গিয়ে সালমা খাতুনের ব্যাগে থাকা ২ লাখ ৭৪ হাজার টাকার মধ্যে ১ লাখ টাকা পান। বাকি টাকা ওই নারীরা নিয়ে যান।

ছানোয়ার হোসেন বলেন, “আমার স্ত্রী ওই অজ্ঞাত নারীদের রাস্তা পারাপার করতে সহযোগিতা করতে গিয়ে উল্টো আমাদের টাকা খোয়া গেলো। এ বিষয়ে সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।”

এদিকে, ১০ দিনে ঘাটাইলে তিন ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের ডাকাতি ও শ্লীলতাহানির ঘটনা বর্তমান সময়ে ‘টক অব দ্য কান্ট্রিতে’ পরিণত হয়েছে।

আরো পড়ুন:

টঙ্গীতে ছিনতাইকারী সন্দেহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা

ছিনতাইকারী সন্দেহে উত্তরায় ২ ব্যক্তিকে ঝুলানো হয় ওভারব্রিজে 

শুধু জেলায় এই কয়েকটি ঘটনা নয়, পুলিশের নথি বলছে, গত ছয় মাসে টাঙ্গাইলে ২০টি ডাকাতি, খুন ৪৫টি ও ১১টি ছিনাতইসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড সংগঠিত হয়েছে। এসব ঘটনায় ১২২ জনের অধিক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

মহাসড়কের যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা বলছেন, নিয়মিত নজরদারি ও প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা জোরদার না করায় মহাসড়কে যত্রতত্র ঘটছে দুর্ঘটনা ও ডাকাতি হচ্ছে।

বগুড়াগামী বাসের চালক একদিল মাহমুদ বলেন, “৫ আগস্টের পর রাতে মহাসড়কে হাইওয়ে পুলিশ তেমন চোখে পরে না। দিনে তারা গাড়ি সিগন্যাল দিলে কাগজপত্র দেখার নামে তারা উৎকোচ নিয়ে থাকেন। হাইওয়ে পুলিশ দায়িত্বশীল আচরণ করলেও মহাসড়কে ডাকাতি, দুর্ঘটনা অনেকটাই কমে যাবে।”

বাসের যাত্রী হামিম রহমান বলেন, “নগরজলফৈ বাইপাস এলাকায় রাতে পুলিশ চোখে পড়ে না। ১৫ দিন আগে রাত ১২টার পর বাস থেকে নেমে আদালতপাড়া বাসায় যাওয়ার সময় আমার মুঠো ফোন ও মানিব্যাগ নিয়ে গেছে সন্ত্রাসীরা। মহাসড়কের গুরত্বপূর্ণ এলাকায় পুলিশি টহল বাড়ানোর পাশাপাশি সিসি ক্যামেরার আওতায় আনতে হবে।”

আফাজ মিয়া বলেন, “দেশে বেকারের সমস্যা বেড়েছে। উঠতি বয়সের যুবকদের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হলে অনেক অপরাধ কমে যাবে।”

জেলা বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো.

ইলিয়াস হোসেন বলেন, “যানবাহনের চালক ও হেলপারদের বেতন খুবই কম। যে কারণে কোনো কোনো চালক ডাকাতিসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে।”

পরিবহন সংশ্লিষ্টদের বেতন বাড়ানোর পাশাপাশি প্রত্যেকটা যানবাহন সিসি ক্যামেরার আওতায় আনার দাবি করেন তিনি।

টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আশরাফুল আলম বলেন, “দেশের সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে অপরাধীরা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের টার্গেট করে থাকে। দেশে পর্যান্ত পুলিশ সদস্য প্রয়োজন। এছাড়া ৫ আগস্টের পর অনেক পুলিশ সদস্যই যোগদান করেননি। আবার নানা কারণে পুলিশের কাজের প্রতি একটা অনীহা কাজ করছে।”

তিনি বলেন, “অনেক শীর্ষ সন্ত্রাসী অভ্যত্থান পরবর্তী সময়ে জেল থেকে মুক্তি পেয়ে তারা পুনরায় সংঘবদ্ধ হচ্ছে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক পরাজিত শক্তির কোনো ইন্ধন থাকতে পারে। পুলিশের সাথে জনগণের যে গ্যাপ সৃষ্টি হয়েছে, সেটি পূরণ করে জনগণের আরো কাছে যেতে হবে পুলিশের। গুরত্বপূর্ণ এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় আনতে হবে। এতে অপরাধীরা সংগঠিত হতে পারবে না।”

তিনি আরো বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে জনগণের আরো সচেতন হতে হবে। পুলিশের টহল টিম বাড়াতে হবে। ডাকাতি রোধে কোন সড়কের বাস কোন সড়কে যাচ্ছে সেটি খেয়াল রাখতে হবে। অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে পারলে অনেক অপরাধ কর্মকাণ্ড কমে যাবে।”

এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. শরিফ বলেন, “ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে দিন দুইটি ও রাতে চারটি টহল টিম দায়িত্ব পালন করছে। আর যাতে কোন যানবাহনে ডাকাতি না হয় সে বিষয়ে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।”

টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, “প্রত্যেকটি ঘটনা গুরত্বসহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। আসামিদের গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অপরাধীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের ২৮টি টিম অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। টাঙ্গাইলের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”

ঢাকা/এসবি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ নত ই অপর ধ ন বল ন সড়ক র অপর ধ র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে রূপগঞ্জে লিফলেট বিতরণ 

আওয়ামীলীগ দেশের মানুষের অধিকার হনন করেছে। তাই, দেশে এক গণবিপ্লবের সৃষ্টি হয়েছে। ২৪এর গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামীলীগ এ দেশ থেকে বিতারিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও রূপগঞ্জ আসনের বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী মোহাম্মদ দুলাল হোসেন। 

বৃহস্পতিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের ভোলাব ইউনিয়নের আতলাপুর বাজার এলাকায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে লিফলেট বিতরণকালে মোহাম্মদ দুলাল হোসেন এসব কথা বলেন। 

লিফলেট বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সাধারণ মানুষ, বিএনপি-যুবদলসহ অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। 

মোহাম্মদ দুলাল হোসেন আরও বলেন, “গত ১৭ বছর ধরে এ দেশের জনগণ একদলীয় শাসন ও ফ্যাসিবাদের শিকার হয়ে জিম্মি হয়ে ছিল। মানুষের বাকস্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছিল। কিন্তু ২০২৪ সালের গণজাগরণের মধ্য দিয়ে জনগণ আবারও তাদের অধিকার পুনরুদ্ধার করতে পেরেছে। এখন সময় এসেছে মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার, একটি সত্যিকার গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার।”

তিনি আরও বলেন, “তারেক রহমানের ৩১ দফা দেশের পুনর্গঠনের পথনির্দেশনা। এই দফাগুলোতে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, মানবাধিকার, দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার রূপরেখা দেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে।”

এসময় স্থানীয় যুবদল ও ছাত্রদল নেতৃবৃন্দও লিফলেট বিতরণে অংশগ্রহণ করেন। তারা সাধারণ মানুষকে বিএনপির পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করেন যে, দেশকে সঠিক পথে এগিয়ে নিতে তারা রাজনৈতিকভাবে প্রস্তুত এবং জনগণের পাশে থাকবে।

স্থানীয়রা জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার। একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা এবং নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে আনার প্রত্যাশা করছেন তারা। এ ধরনের লিফলেট বিতরণ কার্যক্রমে জনগণ আরও বেশি সচেতন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা।

প্রসঙ্গত, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান চলতি বছরের শুরুতে ৩১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন, যেখানে রাষ্ট্র সংস্কার ও জনগণের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্য তুলে ধরা হয়।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইসির প্রতিটি কাজে জবাবদিহি থাকতে হবে
  • জুলাই সনদে আমাদের যে সম্মতি সেটি আইনের ঊর্ধ্বে: সালাহউদ্দিন
  • সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও মাদকমুক্ত বন্দর গড়তে চাই : সাখাওয়াত
  • বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে রূপগঞ্জে লিফলেট বিতরণ 
  • জুলাই আন্দোলনকে মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে জড়াবেন না: টুকু
  • সবাই অপেক্ষা করছে একটা নির্বাচনের জন্য
  • সরকারের ভুল সিদ্ধান্তে দেশে ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিতে পারে: তারেক রহমান
  • সরকারের একটি অংশ অপকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে: তারেক রহমান
  • ট্রাম্পের প্রতি মার্কিন জনগণের সমর্থন ৪০ শতাংশে ঠেকেছে
  • জাতিসংঘে সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশ-পাকিস্তান বৈঠক, ফিলিস্তিন ইস্যুতে উদ্বেগ