টেলিভিশন নাটকের জনপ্রিয় অভিনেত্রী সাদিয়া জাহান প্রভা। দুই দশকের অভিনয় ক্যারিয়ারে মনকাড়া অনেক কাজ উপহার দিয়েছেন। পর্দায় তার সাবলীল উপস্থিত এখনো মুগ্ধ করে দর্শকদের। নানা কারণে কাজ অনেকটা কম করছেন এই অভিনেত্রী। তবে এই সময়ে রিলস দেখে তার সবচেয়ে বেশি সময় কাটে বলে জানিয়েছেন প্রভা।

কয়েক দিন আগে রাইজিংবিডিকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন সাদিয়া জাহান প্রভা। এ আলাপচারিতার শুরুতে এই অভিনেত্রী বলেন, “কোভিডের সময়ে আমি বেশ কিছু প্ল্যাটফর্মে জয়েন করি। যেমন— টিকটক, তারপর রিলস তৈরি করা। তখন আমি দেখি, সেখানে আমার নামে অনেক ভুয়া অ্যাকাউন্ট। কারণ আমার কোনো অ্যাকাউন্ট ছিল না। সেসব আইডিতে আমার ছবি জুম করে করে ব্যবহার করা হয়েছে। আমি ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে আসছি। কারণ আমি অভিনয় করতে পারি। নিজেকে খোলামেলাভাবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি না এবং এটা করতেও চাই না।”

শুটিং সেটের কিছু ব্যাপার প্রভাকে দারুণভাবে আহত করে। তা জানিয়ে এই অভিনেত্রী বলেন, “দেখা যায়, শুটিং সেটে কোনো ক্রু সদস্যের বন্ধু এসেছে। তার আবার ইউটিউব চ্যানেল আছে। নাটকের শুটিংয়ে কিছু সীমাবদ্ধতা থাকে। আমাকে কোন ফ্রেমে কতটুকু নেবে তা নিয়ে পরিচালকদের প্রতি আমার ভরসা আছে। কারণ তারা আমার পরিবার। কিন্তু ওই যে ক্রুর বন্ধু দূর থেকে ভিডিও ধারণ করল, সে এটি তার ইউটিউবে প্রকাশ করেছে। এমনকি সেই ভিডিও অনেক মানুষ দেখেছে। এই ব্যাপারগুলো আমাকে ভীষণ ট্রিগার করতে ছিল।”   

আরো পড়ুন:

প্রথম প্রেমিককে প্রাক্তন মনে করি না, সে আমার শত্রু: প্রভা

আমি ভালোবাসলে সেরাটা দিয়েই ভালোবাসি: প্রভা

পোশাকে যাতে অশালীন না লাগে সে বিষয়ে ভীষণ সতর্ক প্রভা। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “একটা সময়ে আমি আমার মেকআপ ম্যানকে বলতাম, আমার মেকআপ দেখতে হবে না। তুমি দেখ, আমার ওড়না ঠিক আছে কিনা, আমার শাড়ি ঠিক আছে কিনা। কারণ এসব আমাকে ভীষণভাবে বিরক্ত করত।”

শুটিং সেটে গ্রিন রুমের বিষয়টি টেনে প্রভা বলেন, “শুটিং সেটে অনেক পরিচালক আমাকে সহযোগিতা করেছেন। গেস্ট আসুক, তাদের স্বাগত জানাই। তারা যেন ছবি না তুলেন। ছবি সেটা পরিবেশ অনুযায়ী তোলা যেতে পারে। আমরা গ্রিন রুমে সবাইকে আসার অনুমতি দিই না। কারণ শট দিয়ে আসলাম, দেখা গেল একটা কামিজ পরে আছি। কিংবা স্কার্ফ খুলে রাখলাম। আমাদের সহশিল্পী নারী নাকি পুরুষ সেটা কিন্তু ওই সময়ে মাথায় থাকে না। আর উনারাও বিরক্ত হন না। কারণ আমরা সবাই কাজ করছি। আর ওই সময়ে বাইরের মানুষ যারা থাকেন, তারা ফ্যান্টাসির মধ্যে থাকেন। উনারা কী যেন মনে করেন। ভাবেন হয়তো, শুটিং তো আসলে কিছুই না। আমরা যাই, খাই, বাতাস নিই— অনেকটা এরকম। আমার এক বন্ধু বলেছিল, ‘তোদের কাজটা তো অনেক আরামের।”  

শরীর নয়, ক্যামেরায় অভিনয় দক্ষতা প্রদর্শন করেন প্রভা। কিন্তু সেটে বাইরের মানুষের কর্মকাণ্ড ভীষণ বিরক্ত করে তাকে। এ বিষয়ে প্রভা বলেন, “যা হোক, গ্রিন রুমটা প্রাইভেট জায়গা। শট দিয়ে আমরা সেখানে বিশ্রাম নিই, কখনো শুয়ে থাকি। এ অবস্থায় বাইরের একজন মানুষ এসে যদি ছবি তুলে এবং তার ছবি তোলার ফ্রেমটা সঠিক না। যারা ক্যামেরাম্যান তারা কিন্তু জানেন আমাদের কতটুকু ফ্রেমবন্দি করবেন। কিন্তু বাইরের মানুষটি তা জানেন না। উনার উদ্দেশ্য হয়তো খারাপ না অথবা উনার উদ্দেশ্যে অসৎ। উনারা চিন্তাই করেন না, এই মেয়েটা একটা বাসার মেয়ে। মেয়েটারও তো একটা পরিবার আছে। আমি কাজ করছি, আমি আমার অভিনয় দক্ষতা দেখাচ্ছি। আমি আমার শরীর দেখাচ্ছি না। আমি যত ম্যাচিউর হচ্ছি, এসব আমাকে তত বেশি বিরক্ত করছে।”

শুটিং সেটের এসব পরিবেশের কারণে কী কাজের সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে এই প্রভা বলেন, “কাজ কমিয়ে দেওয়ার অন্যতম কারণ আমি নিজে। আমার মনে হয়েছে, গতানুগতিক কাজ অনেক করেছি। আরো ভালো কোনো চরিত্র খুঁজছি, যেখানে নিজের ষোলআনা দিতে পারব। এখন নিয়মিত কাজ করতে চাই। কিন্তু কী আছে তা ভবিষ্যৎ বলে দেবে। তবে অবশ্যই আমি কাজ করতে চাই। আমি শুটিং অনেক মিস করি।”

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ইসির ভূমিকা তদন্তে কমিটি গঠন করার নির্দেশ

বিতর্কিত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে জড়িত নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার ও সচিবালয়ের সচিবদের ভূমিকা তদন্তে অবিলম্বে কমিটি গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক বৈঠকে এ-সংক্রান্ত আলোচনা শেষে এমন নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে ।

এই বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান, সফররাজ হোসেন ও মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

বৈঠকে নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে যে অতীতের তিনটি বিতর্কিত নির্বাচন আয়োজনে কর্মকর্তাদের ভূমিকা তদন্ত করা এবং তাঁদের জবাবদিহির আওতায় আনা প্রয়োজন।

জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই সনদ

বৈঠকে কমিশন সদস্যরা জুলাই সনদ তৈরির কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, বেশ কিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। শিগগিরই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সনদ চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘সবাই জুলাই সনদের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আশা করি, আগামী জুলাই মাসের মধ্যে আমরা এটি জাতির সামনে উপস্থাপন করতে পারব।’

‘প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে’

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা তাঁর লন্ডন সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, লন্ডনে বাংলাদেশি কমিউনিটির যাঁদের সঙ্গেই দেখা হয়েছে, তাঁরা সংস্কার নিয়ে জানতে চেয়েছেন। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা খুব আগ্রহী। তাঁরা বিস্তারিতভাবে ঐকমত্য কমিশনের কাজ নিয়ে তাঁর (প্রধান উপদেষ্টা) সঙ্গে আলোচনা করেছেন, মতামত দিয়েছেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যেখানেই গিয়েছি, সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা আমাকে জিজ্ঞেস করছেন, “আমরা আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে পারব তো?” আমাদের প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। পোস্টাল ব্যালট এবং আর কী কী অপশন আছে, সেগুলো নিয়ে ভাবতে হবে, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ