পবিপ্রবিতে ছাত্রদলের ক্রিকেট টুর্নামেন্ট, শিক্ষার্থীদের বাধায় নামানো হলো ব্যানার
Published: 28th, February 2025 GMT
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) শের-ই-বাংলা হলে (বর্তমানে জিয়াউর রহমান হল) ছাত্রদলের ব্যানারে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাতে বাধা দেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে-ই-বাংলা হলের ব্যাডমিন্টন কোর্টে ছাত্রদলের ব্যানারে শর্টপিচ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা ব্যানার সরিয়ে ফেলতে বললে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে তর্ক ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
একপর্যায়ে রাত ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বরত সহকারী প্রক্টর সহকারী অধ্যাপক মো.
এ বিষয়ে কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেন নাইম বলেন, যেহেতু ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধ, তাই রাজনৈতিক দলের ব্যানারে টুর্নামেন্ট আয়োজন স্পষ্টতই আইন লঙ্ঘন। আমাদের একমাত্র চাওয়া, ছাত্রলীগের যে ফ্যাসিবাদী রূপ, সেটি যেন অন্য কোনোভাবে ক্যাম্পাসে ফিরে না আসে। পাশাপাশি, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকার যে নিয়ম রয়েছে, তার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়েই আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা সেখানে গিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা কখনোই চাইনি খেলা বন্ধ হোক, শুধু চেয়েছি কোনো রাজনৈতিক ব্যানার থাকবে না। তবে ঘটনাস্থলে যেসব শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন, তারা প্রথমে ব্যানার রেখে খেলা চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে মত দেন, যা আমাদের মর্মাহত করে। পরে প্রতিবাদ ও তোপের মুখে তারা ব্যানার সরিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের নেতা আজিম হাসান দিপু বলেন, ছাত্রদলের স্পন্সরশিপে আমরা একটি টুর্নামেন্ট আয়োজন করি, কিন্তু হঠাৎ কয়েকজন শিক্ষার্থী এসে বাধা দেয় এবং খেলা বন্ধ করার হুমকি দেয়। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে আমাদের তর্ক ও ধাক্কাধাক্কি হয়। তবে আমরা কোনো ঝামেলা চাইনি, তাই শিক্ষকদের মাধ্যমে বিষয়টির একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকার পরও ছাত্রদলের ব্যানারে টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হলো কীভাবে—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা বাধা দিয়েছে, তারা চাইলে সরাসরি প্রশাসনকে অভিযোগ জানাতে পারত। প্রশাসন মনে করলে আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিত। কিন্তু এভাবে এসে বাধা দেওয়ার কোনো অধিকার তাদের নেই।
এ বিষয়ে শেরে-ই-বাংলা হল-১ এর প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আব্দুল মালেক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক কার্যক্রম সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং প্রশাসন কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডকে প্রশ্রয় দিচ্ছে না। এ টুর্নামেন্ট আয়োজনের জন্য কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে গতকালের ঘটনাটি অনভিপ্রেত। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছে এবং পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ছ ত রদল ছ ত রদল র ব য ন র র জন ত ক আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারি কার্যালয়ে মাইক্রোসফট টিমসের ব্যবহার নিষিদ্ধ করছে জার্মানির একটি স্টেট, কেন
সরকারি কার্যালয়ে মাইক্রোসফটের টিমসসহ বেশ কয়েকটি সফটওয়্যারের ব্যবহার বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জার্মানির উত্তরাঞ্চলীয় শেলসভিগ-হোলস্টেইন স্টেট। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে আগামী তিন মাস পর পুলিশ, বিচার বিভাগ ও প্রশাসনের অধিকাংশ কর্মকর্তা মাইক্রোসফট টিমস ব্যবহার করতে পারবেন না। তথ্য সংরক্ষণে বিদেশি প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে নিজস্ব ডিজিটাল অবকাঠামো গড়ে তুলতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
স্টেট গভর্নমেন্টের ডিজিটাল রূপান্তরবিষয়ক মন্ত্রী ডির্ক শ্রোয়েডটার বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘আমরা তথ্যের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চাই। এ জন্যই মাইক্রোসফট টিমসের ব্যবহার বন্ধ করে দিচ্ছি।’ নতুন সিদ্ধান্তের আওতায় প্রাথমিকভাবে শেলসভিগ-হোলস্টেইন স্টেটের ৬০ হাজার সরকারি কর্মচারীর মধ্যে প্রায় ৩০ হাজার কর্মী এই পরিবর্তনের আওতায় আসবেন। পরবর্তী ধাপে আরও প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষককে একই ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
স্টেট গভর্নমেন্ট ২০২৪ সাল থেকেই ধাপে ধাপে মাইক্রোসফটের সফটওয়্যার ব্যবহারের বিকল্প খুঁজে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এই পরিবর্তনের অংশ হিসেবে অফিস ব্যবস্থাপনায় মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ও এক্সেলের পরিবর্তে ‘লিব্রে অফিস’ এবং ই–মেইল ও ক্যালেন্ডার ব্যবস্থাপনায় ‘মাইক্রোসফট আউটলুক’–এর জায়গায় ‘ওপেন-এক্সচেঞ্জ’ ব্যবহার শুরু হয়েছে।
পরবর্তী ধাপে অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে মাইক্রোসফট উইন্ডোজ বাদ দিয়ে একটি লিনাক্সভিত্তিক বিকল্প চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। ডির্ক শ্রোয়েডটার জানান, ইউক্রেন যুদ্ধের পর ইউরোপজুড়ে জ্বালানিনির্ভরতা নিয়ে যেমন সচেতনতা তৈরি হয়েছে, তেমনি ডিজিটাল নিরাপত্তা ও তথ্য নিয়ন্ত্রণ নিয়েও নতুন করে ভাবতে হচ্ছে। তার ভাষায়, ‘এই যুদ্ধ আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে, আমরা শুধু জ্বালানিতেই নয়, তথ্যপ্রযুক্তিতেও কতটা নির্ভরশীল। এখন সময় এসেছে এসব নির্ভরতা কাটিয়ে ওঠার।’ স্টেট গভর্নমেন্ট জানিয়েছে, মাইক্রোসফটের নিয়ন্ত্রণে থাকা কোনো ক্লাউড সেবার বদলে জার্মানির রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ক্লাউড প্ল্যাটফর্মেই তারা সরকারি তথ্য সংরক্ষণ করবে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর ওপর ইউরোপের নির্ভরতা নিয়ে কয়েক বছর ধরেই বিতর্ক চলছে। বিশেষত মাইক্রোসফটের বাজার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৩ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন একটি প্রতিযোগিতাবিষয়ক তদন্ত শুরু করে। অভিযোগ ছিল, মাইক্রোসফট তাদের ব্যবসায়িক অ্যাপ্লিকেশনের সঙ্গে টিমস সফটওয়্যার বান্ডিল করে বিক্রি করে, যা বাজারে প্রতিযোগিতার সুযোগ কমিয়ে দেয়। ডির্ক শ্রোয়েডটার বলেন, ‘শেলসভিগ-হোলস্টেইনের নেওয়া এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আমাদের কাছে পরামর্শ চাওয়া হচ্ছে।’
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া