নিজেদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সেবা অ্যাজিউর ওপেনএআইয়ে অবৈধভাবে প্রবেশ করে আপত্তিকর ও অবৈধ কনটেন্ট তৈরি করে, এমন একটি আন্তর্জাতিক সাইবার অপরাধী চক্রের সন্ধান পেয়েছে মাইক্রোসফট। এসব আধেয় বা কনটেন্টে ব্যহারকারীর সম্মতি ছাড়া তৈরি করা ব্যক্তিগত ও সংবেদনশীল ছবিও রয়েছে।

ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই সাইবার অপরাধী চক্রটি ‘স্টর্ম-২১৩৯’ নামে পরিচিত এবং চক্রের সদস্যরা ইরান, যুক্তরাজ্য, হংকং ও ভিয়েতনামসহ বিভিন্ন দেশে সক্রিয়। চুরি করা গ্রাহক লগইন তথ্য ব্যবহার করে তারা মাইক্রোসফটের এআই–সেবায় প্রবেশ করে। হ্যাকাররা এআই মাধ্যমগুলোর সুরক্ষাব্যবস্থা ফাঁকি দিয়ে অন্যান্য ক্ষতিকর গোষ্ঠীর কাছে এআই–সেবার প্রবেশাধিকার বিক্রি করেছে। এমনকি তারা ক্ষতিকর আধেয় তৈরির বিস্তারিত নির্দেশনাও সরবরাহ করেছে বলে জানা গেছে। মাইক্রোসফটের ডিজিটাল ক্রাইমস ইউনিটের সহকারী প্রধান আইন উপদেষ্টা স্টিভেন মাসাদা বলেন, ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহারকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে। এমন অবৈধ কার্যক্রম ব্যবহারকারীদের জীবনে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলে।’

প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা এবং ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের দুজন ব্যক্তিকে শনাক্ত করলেও চলমান তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি। জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তির সম্ভাব্য অপব্যবহার নিয়ে ইতিমধ্যেই বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বাড়ছে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এ ধরনের প্রযুক্তির মাধ্যমে ব্যক্তিগত ছবি বিকৃত করা, ভুয়া ও আপত্তিকর ছবি তৈরি করা এবং এমনকি শিশুদের যৌন নির্যাতন–সম্পর্কিত আধেয় তৈরির মতো গুরুতর অপরাধও ঘটতে পারে।

মাইক্রোসফট এবং ওপেনএআইয়ের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের সেবায় সুরক্ষাব্যবস্থা জোরদার করলেও সাইবার অপরাধীরা সব সময়ই প্রযুক্তির ফাঁকফোকর খুঁজে বের করছে। মাইক্রোসফটের এই তদন্ত শুরু হয় গত বছরের ডিসেম্বর মাসে। তখন প্রতিষ্ঠানটি ভার্জিনিয়ার পূর্ব জেলা আদালতে অজ্ঞাতনামা ১০ ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করে। মামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল হ্যাকারদের পরিচয় উদ্‌ঘাটন এবং তাদের কার্যক্রম ব্যাহত করা। স্টিভেন মাসাদা আরও বলেন, ‘কোনো সাইবার অপরাধী চক্রকে একদিনেই পুরোপুরি ধ্বংস করা সম্ভব নয়। ক্ষতিকর কার্যকলাপ প্রতিরোধে আমাদের অবিরাম সচেতনতা ও ধৈর্য ধরে কাজ চালিয়ে যেতে হবে।’

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র

এছাড়াও পড়ুন:

ভুলে সীমানায় পা, বিএসএফ সদস্যকে আটক করল পাকিস্তান

ভুলক্রমে সীমানায় ঢুকে পড়ায় পাকিস্তানি রেঞ্জারদের হাতে আটক হয়েছেন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্য পুর্নমকুমার সাউ। ঘটনার পর পাকিস্তানের সঙ্গে তিনবার পতাকা বৈঠকে বসলেও বিষয়টির কোনো সুরাহা হয়নি। এমনকি বিএসএফের অনুরোধেও কর্ণপাত করছে না পাকিস্তান। এমন পরিস্থিতিতে কলকাতা থেকে পঠানকোট বিএসএফ দপ্তরে স্বামীর সর্বশেষ খবর জানিত ছুটে গেছেন পুর্নমের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ও পরিবার। 

ভারতের জম্মু-কাশ্মীরে পেহেলগাও সন্ত্রাসবাদী হামলা নিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের চলমান উত্তেজনার মধ্যেই মঙ্গলবার ভুল করে পাকিস্তানের সীমানায় ঢুকে আটক হন বিএসএফ সদস্য পুর্নমকুমার সাউ। পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার রিষড়া পৌরসভার ১৩ নাম্বার ওয়ার্ডের বাসিন্দা তিনি। পুর্নম পাঠানকোটের ফিরোজপুর বর্ডারে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি চব্বিশ ব্যাটেলিয়ানের বিএসএফ কনস্টেবল। 

বিএসএফ সূত্রে জানা যায়, দায়িত্ব পালনকালে কড়া রোদে ক্লান্ত হয়ে পড়লে গাছের নিচে আশ্রয় নেন পুর্নম। এ সময় তিনি ভুল করে বর্ডার পেরিয়ে গেলে পাকিস্তান রেঞ্জার্সের হাতে আটক হন। এ দিকে ঘটনার পর তিনবার পাকিস্তানি রেঞ্জারদের সঙ্গে পতাকা বৈঠক করেছে বিএসএফ। কিন্তু তারা পুর্নমকুমার সাউকে ফিরিয়ে দেয়নি। 

স্বামীর এমন দুঃসংবাদে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রজনী। শেষবার হোলির সময় ছুটিতে বাড়ি গিয়েছিলেন পুর্নম। গত ৩১ মার্চ কাজে যোগ দেন তিনি।  

পুর্নমের বাবা ভোলানাথ সাউ জানান, ছেলেকে নিয়ে তিনি খুবই চিন্তিত। কোনো খবর পাচ্ছেন না। বিএসএফ কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে তিনি কথা বলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। তারা মিটিংয়ে ব্যস্ত রয়েছেন বলে তাকে জানানো হয়েছে। তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের কাছে ছেলেকে মুক্ত করে ফিরিয়ে নিয়ে আসার আবেদন জানিয়েছেন। 

সীমান্তরক্ষীদের ভুল করে নিয়ন্ত্রণরেখা পার হওয়ার ঘটনা নতুন নয়। এ ক্ষেত্রে দুই বাহিনীর বৈঠকের পরে তাদের মুক্তিও দেওয়া হয়। কিন্তু বর্তমান সীমান্ত পরিস্থিতি ভিন্ন। পাক রেঞ্জার্সের পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ ছাড়া মুক্তি দেওয়া সম্ভব নয়। গত শুক্রবার পর্যন্ত এই ইস্যুতে তিনবার পতাকা বৈঠকে বসেছেন বিএসএফ এবং পাক রেঞ্জার্সের প্রতিনিধি দল। কিন্তু মিমাংসা হয়নি।   

এরপরই রবিবার পুর্নমের বাড়ি যান বিএসএফের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তারা পুর্নমকে মুক্ত করে ফিরিয়ে আনার আশ্বাস দেন। যদিও মৌখিক কথায় আর ভরসা রাখতে রাজি নন রজনী। এ কারণে তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আজ সোমবার পাঠানকোটের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। সেখানে তথ্য না পেলে দিল্লি গিয়ে স্বামীর খবর জানতে চাইবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। 

বিএসএফের পরিচালক জেনারেল দলজিৎ চৌধুরী জানিয়েছেন ঘটনার পরে ভারত-পাক নিয়ন্ত্রণরেখায় উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পুর্নমকুমার সাউকে ফিরিয়ে আনতে সব রকমের চেষ্টা চলছে। এমনকি পাকিস্তানি রেঞ্জারদের সঙ্গে কমান্ডার স্তরে বৈঠকের অনুরোধ জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি। 

সুচরিতা/তারা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘একদিন দেখি পশুরমতো ঘরের কোণে বসে কাঁপছে ববি’
  • বিশ্বনেতাদের সতর্ক দৃষ্টির সামনেই ঘটছে গণহত্যা
  • প্রত্যন্ত গ্রামে ক্লিনিক খুলে ‘এমবিবিএস ডাক্তার’ পরিচয়ে চিকিৎসা, এক বছরের কারাদণ্ড
  • ‘শি জিনপিং ফোন করেছিলেন’ ট্রাম্পের এমন দাবি প্রত্যাখ্যান চীনের
  • শি জিনপিং ফোন করেছিলেন, ট্রাম্পের এমন দাবি প্রত্যাখ্যান চীনের
  • ভুলে সীমানায় পা, বিএসএফ সদস্যকে আটক করল পাকিস্তান