দুর্গাপুরে ৩০ ঘণ্টায় ১০ জনের বিষ ও ঘুমের বড়ি সেবন, দুজনের মৃত্যু
Published: 1st, March 2025 GMT
রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলায় ২৪ ঘণ্টায় বিভিন্ন কারণে নারী-পুরুষ ও শিশুসহ ১০ জনের বিষপান ও অতিরিক্ত ঘুমের বড়ি সেবনের খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৯ জনই বিষ, ঘুমের বড়ি অথবা ড্যামফিক্স পানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। শুক্রবার দুপুর থেকে শনিবার সন্ধ্যার মধ্যে এসব ঘটনা ঘটে।
এর মধ্যে তিন বছর বয়সী এক শিশু রয়েছে। অজ্ঞতাবশত সে দুইটা ঘুমের ওষুধ সেবন করে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। তাকেও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার অবস্থার অবনতি হলে দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। শিশুটি উপজেলার বেড়া গ্রামের রেজাউলের ছেলে তানজিমুল।
বিষ পানি অসুস্থ হওয়া দুইজন নারী রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। মৃত নারীরা হলেন উপজেলার পাইকড়তলী গ্রামের ওয়াশিমের স্ত্রী জান্নাতুন (২৫) ও উপজেলার তেবিলা গ্রামের রেন্টুর স্ত্রী তহমিনা (৩০)।
অন্য যাঁরা বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন, তাঁরা হলেন দেবীপুর গ্রামের মোহনা (১৮), পানানগর গ্রামের আবদুস সাত্তার (৪৫), কাশেমপুর গ্রামের ইরিন খাতুন (২০), বহরমপুর গ্রামের লাবনী (২৯), গোড়খাই গ্রামের নাহিদ (২৫) এবং কানপাড়া গ্রামের বীথি (৩০) ড্যামফিক্স পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। এ ছাড়া সায়বাড় গ্রামের হাবিবা খাতুন (১৫) ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে।
এ বিষয়ে দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মেহেদী হাসান জানান, বিষপান, ঘুমের ওষুধ সেবন ও ড্যামফিক্স পান করে অসুস্থ অবস্থায় ৯ জন রোগী দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়। এ ছাড়া তিন বছর বয়সী একটি শিশু অজ্ঞতাবশত দুটি ঘুমের বড়ি খেয়ে ফেলেছিল, তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। অন্যদের মধ্যে অবস্থার অবনতি হওয়ায় ৫ রোগীকে রামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে ও বাকি তিন রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তাঁরা সুস্থ্ আছেন।
জানতে চাইলে দুর্গাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ইব্রাহীম আলী জানান, বিষপানে আত্মহত্যায় মৃত্যুর ঘটনায় থানায় দুটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। পরে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ১০টায় দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুরুল হুদা প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ছুটিতে রয়েছেন। তবে যতটুকু খবর পেয়েছেন, তাতে মারা যাওয়া দুজনের ব্যাপারে থানায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা হয়েছে। বাকিদের ব্যাপারে কেউ এখনো লিখিতভাবে পুলিশকে কিছু জানায়নি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ র গ প র উপজ ল অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ইসরায়েলের হামলা
রবিবার বিকেল থেকে ইরানজুড়ে নতুন করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। সামরিক স্থাপনার পাশাপাশি ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
রবিবার রাতে ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইদ খাতিবজাদেহ ইসরায়েলি হামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে তিনি জানান, রবিবার রাজধানী তেহরানে ইসরায়েলি হামলায় ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খবর তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলুর।
এক্স-পোস্টে সাইদ বলেছেন, “ইসরায়েলের অপরাধী শাসকগোষ্ঠী রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঠিক বিপরীতে অবস্থিত ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ভবনে ইচ্ছাকৃত এবং নির্মম হামলা চালিয়েছে।”
আরো পড়ুন:
ইসরায়েলের নতুন হামলায় ইরানের আইআরজিসির গোয়েন্দা প্রধান নিহত
ইসরায়েলে ৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল ইরান, তেল আবিব ও হাইফাতে সরাসরি আঘাত
উপ-মন্ত্রী আরো বলেন, “এই হামলায় বেশ কয়েকজন বেসামরিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন, আমার বেশ কয়েকজন সহকর্মীও আহত হয়েছেন, যাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।”
সাইদ বলেন, “এটি আরো একটি স্পষ্ট যুদ্ধাপরাধ, ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি শাসকগোষ্ঠীর চলমান ও নিয়মতান্ত্রিক আগ্রাসন অভিযানের অংশ।”
এর আগে শনিবার ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তরে হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েল।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা তেহরানের অস্ত্র উৎপাদন ক্ষমতা ধ্বংস করার লক্ষ্যে ইরানের আইআরজিসি ও সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে রবিবার নতুন করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, এই হামলায় ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি), গার্ডস কুদস ফোর্স এবং ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর অবকাঠামো লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী আরো জানিয়েছে, ইরানজুড়ে অসংখ্য অস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্রে হামলা চালানো হয়েছে।
ইরানি বার্তাসংস্থা তাসনিম নিউজ জানিয়েছে, ইসরায়েলের এই হামলায় আইআরজিসিরি গোয়েন্দা প্রধান মোহাম্মদ কাজেমি এবং তার সহকারী হাসান মোহাকিক নিহত হয়েছেন। এছাড়া মোহসেন বাঘারি নামে আইআরজিসির আরো একজন জেনারেল নিহত হয়েছেন। এর প্রতিশোধ নিতে রবিবার রাতে ইসরায়েলে ৫০টি ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও শতাধিক ড্রোন ছুড়েছে ইরান।
ইসরায়েলের ফায়ার ও রেসকিউ সার্ভিসের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, উত্তর ইসরায়েলে দুটি এবং হাইফায় একটি আবাসিক ভবনে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হানার খবর পেয়েছে তারা।
ইসরায়েলি জাতীয় জরুরি সেবা সংস্থা জানিয়েছে, হাইফায় ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে সাতজন আহত হয়েছেন। এছাড়া কিরিয়াত গাটের কাছে দক্ষিণাঞ্চলীয় একটি শহরে একজন আহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় ইসরায়েলি সেনাপ্রধান ইয়াল জামির ইরানের ওপর আক্রমণ আরো তীব্র করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। একটি বিবৃতি জারি করে ইসরায়েরি সেনাপ্রধান বলেছেন, “আমরা আমাদের অভিযান তীব্রতর করে যাব এবং এটি করে, আগামী বছরগুলোতে আমাদের নিরাপত্তা জোরদার করব। আমরা জানতাম এর একটি মূল্য দিতে হবে এবং এটিই বোঝায় যে, আমরা কেন এখনই পদক্ষেপ নিয়েছি, তা অনেক দেরি হওয়ার আগেই।”
ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুক্রবার থেকে ইসরায়েলি হামলায় ২২৪ জন নিহত এবং ৯০০ জন আহত হয়েছেন।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কমপক্ষে ১৩ জন নিহত এবং ৩৭০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।
ঢাকা/ফিরোজ