গত ২৩ জানুয়ারি ঘোষণা করা হয় ৯৭তম অস্কারের মনোনয়নপ্রাপ্তদের তালিকা। সেরা সিনেমা বিভাগে মনোনয়ন পায় ১০টি সিনেমা। এগুলো হলো— ‘আনোরা’, ‘দ্য ব্রুটালিস্ট’, ‘আ কমপ্লিট আননোন’, ‘কনক্লেভ’, ‘ডুন: পার্ট টু’, ‘এমিলিয়া পেরেজ’, ‘আই এম স্টিল হেয়ার’, ‘নিকেল বয়েজ’, ‘দ্য সাবস্ট্যান্স’, ‘উইকেড’।
বাংলাদেশ সময় ৩ মার্চ সকালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসের ডলবি থিয়েটার হলে বসেছিল এবারের অস্কার আসর। সেরা সিনেমার পুরস্কার কার বরাতে, তা নিয়ে ছিল নানা জল্পনা। চূড়ান্ত আসর বসার আগেও ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন চলচ্চিত্র সমালোচকরা। তারা মনোনয়ন পাওয়া ১০টি থেকে ৪টি সিনেমা চূড়ান্ত করেন। তাদের অনুমান ছিল— ‘আনোরা’, ‘কনক্লেভ’, ‘দ্য ব্রুটালিস্ট’, ‘এমিলিয়া পেরেজ’। এই চার সিনেমার মধ্যে থেকে একটি জিতবে সেরার পুরস্কার। সর্বশেষ ঝলমলে সন্ধ্যায় সবাইকে পেছনে ফেলে সেরা সিনেমার পুরস্কার জিতে নেয় ‘আনোরা’।
‘আনোরা’ সিনেমা পরিচালনা করেছেন শন বেকার। এ সিনেমার জন্যই সেরা পরিচালক হিসেবে অস্কার পেয়েছেন শন, মাইকি ম্যাডিসন হয়েছেন সেরা অভিনেত্রী। সেরা মৌলিক চলচ্চিত্রের পুরস্কারও সিনেমাটির দখলে। চিত্রনাট্য রচনা করেছেন শন বেকার। সেরা সম্পাদনার পুরস্কারও পেয়েছে সিনেমাটি।
আরো পড়ুন:
অস্কারে বাজিমাত করলেন যারা
সস্ত্রীক অস্কারজয়ী অভিনেতার মরদেহ উদ্ধার
কুখ্যাত রাশিয়ান গ্যাংস্টারের ছেলে একজন স্ট্রিপ ড্যান্সারের প্রেমে পড়ে। তারপর দুজন বিয়ে করেন। কিন্তু সেই গ্যাংস্টার বিয়ে মেনে নেয় না। আদতে নিম্নবিত্ত মানুষের জীবনের বাস্তবতা আর তাদের স্বপ্নের টানাপোড়েনের গল্প বলেছেন শন। সিনেমাটিতে স্ট্রিপ ড্যান্সারের চরিত্র রূপায়ন করেছেন মাইকি ম্যাডিসন।
গত বছর কান চলচ্চিত্র উৎসবে স্বর্ণপাম জিতে নেয় ‘আনোরা’। মূলত, সেই সময় থেকেই আলোচনায় রোমান্টিক-কমেডি-ড্রামা ঘরানার এই সিনেমা।
শন বেকারের সঙ্গে ‘আনোরা’ প্রযোজনা করেছেন নির্মাতার স্ত্রী সামান্থা কোয়ান। ২০২৩ সালে নিউ ইয়র্কে সিনেমাটির দৃশ্যধারণের কাজ হয়। ২০২৪ সালের ২১ মে কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রিমিয়ার হয়। প্রদর্শনীর পর ১০ মিনিট ধরে দর্শকের স্ট্যান্ডিং ওভেশন পায় এটি।
গত বছরের ১৮ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তি পায় ‘আনোরা’। দর্শকরা সিনেমাটি দেখতে চাইলে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম জি-ফাইভে দেখতে পারবেন। আগামী ১৭ মার্চ থেকে জিও হটস্টারে সিনেমাটি দেখতে পাবেন দর্শকরা।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র চলচ চ ত র কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
গোলের উৎসবের ম্যাচে বার্সা-ইন্টারের রুদ্ধশ্বাস ড্র
চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনাল মানেই তো উত্তেজনার চূড়ান্ত রূপ। আর মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দিবাগত রাতে কাতালোনিয়ার মন্টজুইকে যা দেখা গেল— তা যেন শুধুই একটি ফুটবল ম্যাচ নয়, বরং ছয় গোলের অনির্দেশ্য গল্প। যেখানে বার্সেলোনা ও ইন্টার মিলান মিলে একসঙ্গে রচনা করল রোমাঞ্চ আর বীরত্বের এক অপূর্ব মহাকাব্য। দুইবার পিছিয়ে পড়েও অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তনে ৩-৩ গোলে সমতা টানল কাতালান জায়ান্টরা।
ম্যাচ শুরুই হলো যেন বজ্রপাত দিয়ে। সময়ের কাঁটায় মিনিটও পেরোয়নি। এর মধ্যেই ইন্টারের মার্কুস তুরাম এক চতুর ব্যাকহিল ফিনিশে বল ঠেলে দেন জালে। সেই মুহূর্তে স্তব্ধ হয়ে পড়ে পুরো কাতালান রক্ষণভাগ। এরপর ২১ মিনিটে কর্নার থেকে ডেনজেল ডামফ্রিসের অ্যাক্রোবেটিক ভলিতে যেন বার্সার হৃদয়েই ঘা লাগে, ইন্টারের লিড তখন ২-০ গোলে।
তবে ইতিহাস বলে— বার্সেলোনার যখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায়, তখনই তারা সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। সেই ধারাতেই, ডানদিক থেকে দুরন্ত ছন্দে এগিয়ে এসে বক্সে ঢুকে বল জালে পাঠালেন কিশোর বিস্ময় লামিনে ইয়ামাল। ইন্টারের দ্বিতীয় গোলের মাত্র তিন মিনিট পর আসে এই গোল, যা এই ম্যাচে বার্সার ফেরার না বলা প্রতিশ্রুতি হয়ে উঠেছিল।
সেই ইয়ামাল পরে আরও একবার প্রায় গোল করে ফেলছিলেন। কিন্তু ভাগ্য মুখ ফিরিয়ে নেয়। বল লাগে পোস্টে। তবে কাতালান আশা তখনও নষ্ট হয়নি। ৩৮ মিনিটে ফেরান তোরেস ডানদিক থেকে আসা পাসে ওয়ান-টাইম ফিনিশে বল জড়ান জালে, ফিরিয়ে আনেন সমতা। ম্যাচ তখন যেন টানটান থ্রিলারে রূপ নেয় এবং শেষ হয় প্রথমার্ধ।
দ্বিতীয়ার্ধে বলের দখলে ও খেলার ছন্দে এগিয়ে থাকলেও ৬৪ মিনিটে আবারও হোঁচট খায় বার্সা। কর্নার থেকে হেডে ডামফ্রিস করেন তার দ্বিতীয় গোল। ইন্টার আবারও এগিয়ে যায়। কিন্তু বার্সা মানেই তো ক্ষণিকের বিশ্রামে আবার অগ্নি হয়ে ওঠা। দ্রুতই আসে জবাব। রাফিনহার দূরপাল্লার গর্জে ওঠা শট প্রথমে লাগে পোস্টে, এরপর ফিরে এসে লেগে যায় গোলরক্ষক ইয়ান সমারের পিঠে, এরপর বল ঢুকে পড়ে জালে। ম্যাচ আবারও ৩-৩। যদিও এটি আত্মঘাতী গোল হিসেবে গণ্য হয়, কাতালানদের জন্য তা যেন নবজন্মের এক চুম্বন।
শেষ বাঁশি পর্যন্ত দুই দলই তীব্রভাবে চেষ্টা করেছে জয় ছিনিয়ে নিতে। কিন্তু ভাগ্য সেদিন ছিল ভারসাম্যপন্থী।
এখন সব অপেক্ষা দ্বিতীয় লেগের। আগামী ৬ মে মিলানের ঐতিহাসিক সান সিরো স্টেডিয়ামে লেখা হবে এই নাটকের অন্তিম অঙ্ক। এক ম্যাচ, এক ফলাফল, এক জয়ী— আর সেই জয়ীর জন্য অপেক্ষা করছে মিউনিখের আলো-আড়ম্বরের রাত। ইউরোপীয় ফুটবলের মঞ্চে চূড়ান্ত পরীক্ষার দিন।
সান সিরোর আকাশে হয়তো আবার জ্বলে উঠবে এক নতুন রূপকথার তারা।
ঢাকা/আমিনুল