পরিবেশগত ঝুকি উপেক্ষা করে কুষ্টিয়ায় চাল বাণিজ্যে প্লাস্টিকের বস্তার ব্যবহার ব্যাপকভাবে বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা এখন প্লাস্টিকের বস্তার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। অথচ প্রশাসনের কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই। 

সরেজমিনে দেখা যায়, জেলার বড় বড় মোকাম ও ব্যবসায়িক হাটগুলোতে প্লাস্টিকের বস্তায় চাল প্যাকেটজাত করা হচ্ছে। এ বস্তাগুলো ব্যবহারের পর যেখানে-সেখানে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। যা মারাত্মক পরিবেশ দূষণের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ অনুযায়ী প্লাস্টিক ও পলিথিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কঠোর বিধান থাকলেও কুষ্টিয়ায় তা কার্যকর হচ্ছে না। পরিবেশ অধিদপ্তরের স্থানীয় দফতর থেকেও এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।

আরো পড়ুন:

ভারত থেকে এলো ১৬ হাজার ৪০০ টন চাল

ভিয়েতনাম থেকে কেনা হচ্ছে এক লাখ মেট্রিক টন চাল

জেলার মিরপুর উপজেলার আমলা বাজারের চাল ব্যবসায়ী মামুনুল হক ডায়মন্ড বলেন, প্লাস্টিকের বস্তা তুলনামূলকভাবে সস্তা ও দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় তারা এটি ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছেন। 

স্থানীয় প্রশাসন এ বিষয়ে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। আরেক ব্যবসায়ী সুফী আল আসাদ বিপ্লব বলেন, “আমরা বিকল্প চটের বস্তা পেলে প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করব। কিন্তু সরকার যদি সাশ্রয়ী মূল্যে বিকল্প ব্যবস্থা না করে তাহলে আমরা কীভাবে পরিবর্তন করব?’’

পরিবেশ অধিদপ্তরের কুষ্টিয়া কার্যালয়ের উপপরিচালক আতাউর রহমান বলেন, ‘‘আমরা বিষয়টি নজরে রেখেছি। শিগগিরই অভিযান পরিচালনা করে অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ তবে এখনো পর্যন্ত কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখা যায় না। 

পরিবেশ বিশেষজ্ঞ গৌতম কুমার রায় বলেন, “চালের মতো খাদ্যপণ্য প্লাস্টিকের বস্তায় সংরক্ষণ করা হলে তা জনস্বাস্থ্যের জন্যও হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। পাশাপাশি ব্যবহৃত প্লাস্টিক বর্জ্য হিসেবে নদী-নালা ও জলাশয়ে জমা হয়ে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করছে।’’  

তিনি আরো বলেন, শুধু আইন প্রয়োগ করলে হবে না, পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের জন্য সহজলভ্য ও পরিবেশবান্ধব বিকল্প ব্যবস্থা নিশ্চিত করাও জরুরি। এছাড়া জনসচেতনতা বাড়াতে স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশ সংরক্ষণ সংস্থাগুলোর সমন্বিত উদ্যোগ দরকার।

কুষ্টিয়ার পরিবেশ রক্ষায় দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে প্লাস্টিক দূষণ মারাত্মক হয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রশাসনের নিষ্ক্রীয়তার কারণে ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন, যা সামগ্রিকভাবে পরিবেশের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

ঢাকা/কাঞ্চন/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবহ র ব যবস থ ব যবস য় ক র যকর পর ব শ

এছাড়াও পড়ুন:

পাকিস্তান আকাশসীমা বন্ধ করায় এয়ার ইন্ডিয়ার ৬০ কোটি ডলার ক্ষতির আশ

পাকিস্তান ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলোর জন্য তাদের আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়ার পর এয়ার ইন্ডিয়ার ৬০ কোটি ডলার লোকসান হতে পারে। এয়ার ইন্ডিয়ার একটি চিঠির বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে। 

চিঠিতে বলা হয়েছে, “ধরে নিচ্ছি যে, পাকিস্তানের আকাশসীমা বন্ধ থাকবে যা আগামী বছর পর্যন্ত দীর্ঘায়িত হতে পারে। তাতে যে বাড়তি খরচ হবে তার মধ্যে রয়েছে বিকল্প রুটে বিমানগুলোর দীর্ঘ উড্ডয়নের জন্য বর্ধিত জ্বালানি খরচ।

বিমান সংস্থাটি সতর্ক করে দিয়েছে জানিয়েছে, ফ্লাইটের সময় যত বেশি হবে, যাত্রীদেরও তার উপর প্রভাব পড়বে। ফ্লাইট দীর্ঘায়িত হওয়ার কারণে নিষেধাজ্ঞার সময়কালে প্রতি বছর ৫৯ কোটি ১০ লাখ ডলারেরও বেশি ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

২২ এপ্রিল ভারত অধিকৃত কাশ্মিরে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হন। এ ঘটনার জন্য কোনো প্রমাণ ছাড়াই পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করেছে ভারত। নয়াদিল্লি পরের দিনই সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিতসহ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়। এর জবাবে পাকিস্তান ভারতের বিমানের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়াসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়।

বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়কে লেখা চিঠির উদ্ধৃতি দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, ক্ষতি পোষাতে এয়ার ইন্ডিয়া সরকারের কাছে আনুপাতিক ভর্তুকির জন্য অনুরোধ করেছে। 

চিঠিতে বলা হয়েছে, “প্রভাবিত আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের জন্য ভর্তুকি একটি ভালো, যাচাইযোগ্য এবং ন্যায্য বিকল্প... পরিস্থিতির উন্নতি হলে ভর্তুকি প্রত্যাহার করা যেতে পারে।”

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ