উৎক্ষেপণের ১০ মিনিট পরেই ব্যর্থ হয়েছে মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্কের স্টারশিপ। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার উৎক্ষেপণের ১০ মিনিটের মধ্যেই পৃথিবীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হয় স্টারশিপের এবং তাতে আগুন লেগে যায়। এ নিয়ে চলতি বছরে দ্বিতীয়বার বিস্ফোরণের মুখে পড়ল স্টারশিপ। খবর ডয়চে ভেলের।

স্টারশিপে আগুন লাগার পর আকাশে অগ্নিদ্বগ্ধ ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে পড়তে থাকে। এর ফলে ফ্লোরিডা ও তার কাছের এলাকায় বেশ কিছুক্ষণ বিমান চলাচল বন্ধ রাখা হয়।

বৃহস্পতিবারের ঠিক দুই মাসও আগে ঠিক একইভাবে আরও একটি স্টারশিপে বিস্ফোরণ হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ ধনকুবের ইলন মাস্কের স্পেসএক্সের এটি দ্বিতীয় ব্যর্থতা হিসেবে মনে করা হচ্ছে।

টেক্সাসের বোকা চিকা থেকে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ৪০৩-ফুটের এই রকেটটি লঞ্চ করা হয়। লঞ্চের প্রথম ভাগে কোনো সমস্যা হয়নি। বুস্টারটি সফলভাবে রকেট থেকে আলাদা হয়ে পৃথিবীর দিকে নেমে আসে। মাঝপথে তাকে ধরে ফেলে একটি ক্রেন। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই স্টারশিপের বাকি অংশ ঘুরতে থাকে। একাধিক ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়।

স্পেসএক্সের লাইভ ইভেন্টে তাদের মুখপত্র ড্যান হুয়ট বলেন, দুর্ভাগ্যবশত একই ঘটনা শেষবারেও ঘটেছিল। আমাদের খানিকটা অনুশীলন হয়ে যাচ্ছে।

২০২৫ সালে মহাকাশ অভিযান প্রকল্পে গতি আনার কথা বলেছিলেন ইলন মাস্ক। তবে পরপর দুই বার ব্যর্থতার পর সেই পরিকল্পনায় কিছুটা প্রভাব পড়তে পারে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

জানুয়ারিতে রকেট লঞ্চের আট মিনিটের মাথায় তা ভেঙে পড়ে। তার ধ্বংসাবশেষ ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের ওপর পড়তে দেখা যায়। এর ফলে টার্ক্স ও কাইকোস দ্বীপের একটি গাড়ি সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।

এই দশকের শেষে ইলন মাস্ক মঙ্গল গ্রহে মানুষ পাঠানোর পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছেন। স্টারশিপ সেই প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ভবিষ্যতে এর যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেই কথা মাথায় রেখে ফেডারেল অ্যাভিয়েশন আডমিনিস্ট্রেশন স্পেসএক্সকে এই ঘটনার তদন্ত করতে বলেছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স প সএক স ইলন ম স ক ইলন ম স ক

এছাড়াও পড়ুন:

দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না

মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।

আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।

বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’

এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।

জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।

গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্‌স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ