রাজধানী ঢাকার আদাবরে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আদাবর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সোহেল রানা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।  

গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম বিধান চন্দ্র দাস। তিনি আদাবরের স্থানীয় একটি সেলুনের কর্মচারী। আজ শুক্রবার বিকেলে নাজমুল হাসান খন্দকার নামের এক ব্যক্তি বাদী হয়ে তাঁর বিরুদ্ধে রাজধানীর আদাবর থানায় মামলা করেন।

এসআই সোহেল রানা প্রথম আলোকে বলেন, অভিযোগ থেকে জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার নাজমুল হাসান খন্দকার নামের এক ব্যক্তি আদাবর থানার শেখেরটেকের একটি সেলুনে চুল কাটাতে যান। এ সময় নানা বিষয়ে কথার একপর্যায়ে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.

)-কে নিয়ে কটূক্তি করেন বিধান। আজ শুক্রবার সকালে নাজমুল স্থানীয় একদল লোক নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। পরে তাঁরা আদাবর থানায় খবর দেন। দুপুর ১২টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিধানকে আটক করে আদাবর থানায় নিয়ে আসে।

এসআই সোহেল রানা আরও বলেন, আটকের পর বিধানের বিরুদ্ধে মামলা নেওয়ার দাবিতে স্থানীয় একদল লোক থানার সামনে অবস্থান নেন। পরে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামলা নেওয়ার আশ্বাস দেন। তখন তাঁরা থানা চত্বর ছেড়ে চলে যান।

বিকেল ৪টার দিকে যোগাযোগ করা হলে আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাকারিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে বিধানের বিরুদ্ধে আদাবর থানায় মামলা হয়েছে। ওই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। নাজমুল হাসান খন্দকার বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব

রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক। 

 এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”

বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।” 

চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”

ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।” 

হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে। 

গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।

কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”

ঢাকা/রাঙামাটি/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে নোয়াখালীতে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
  • জাল টাকা বহন: ২ জনের ১৪ বছর কারাদণ্ড
  • ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব