দেড় শ বছরের পুরোনো ঈশ্বরগঞ্জের আট গম্বুজের ‘বড় মসজিদ’
Published: 8th, March 2025 GMT
কাঁচামাটিয়া নদীর তীরে দৃষ্টিনন্দন মসজিদটির অবস্থান। বৃহদাকার গম্বুজের দুই পাশে দুটি আর সামনে আছে পাঁচটি গম্বুজ। এই আট গম্বুজের চারদিকে আছে আরও ১০টি মিনার। নানা কারুকার্যখচিত পুরো মসজিদটি মুসলিম স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শন। ময়মনসিংহ শহর থেকে ২৪ কিলোমিটার পূর্বে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা সদরের দত্তপাড়া গ্রামে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে প্রায় দেড় শ বছর পুরোনো মসজিদটি।
স্থানীয়ভাবে ‘বড় জামে মসজিদ’ নামে পরিচিত এটি। ঈশ্বরগঞ্জ চৌকি আদালতের বিপরীত পাশে অবস্থিত মসজিদটি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন মত। কথিত আছে যে মসজিদটি নির্মাণ করেন তৎকালীন সাবরেজিস্ট্রার মাসুদ মিয়া। মসজিদের প্রবেশ ফটকে নির্মাণকাল লেখা আছে ১৮৮৭ সাল। এ হিসাব অনুযায়ী মসজিদটির বর্তমান বয়স ১৩৮ বছর। কিন্তু স্থানীয় মুসল্লি ও এলাকাবাসীর দাবি, মসজিদটি নির্মাণ করা হয় অন্তত দুই শ বছর আগে। সে সময় সব স্থাপত্য নকশায় সময় লিখে রাখার ব্যবস্থা না থাকায় হয়তো সঠিক তারিখ ও প্রতিষ্ঠাকাল লিখে রাখা হয়নি। ওই সময় এটিই ছিল ঈশ্বরগঞ্জের সবচেয়ে বড় মসজিদ। সে জন্যই মসজিদের নামকরণও করা হয় বড় জামে মসজিদ।
বড় মসজিদে প্রায় ১৩ বছর ধরে মুয়াজ্জিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মো.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
৫ কোটি টাকার সেতুতে যানবাহন চলবে কবে
ঈশ্বরগঞ্জ-আঠারবাড়ী আঞ্চলিক সড়কটির দৈর্ঘ্য ১৫ কিলোমিটার। ১১৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০২০ সালে এর সংস্কার কাজ শুরু হয়। ইতোমধ্যে বেশির ভাগ অংশের কাজ সম্পন্ন হলেও অধিগ্রহণ জটিলতায় পৌর এলাকার প্রায় তিন কিলোমিটার এবং সোহাগী ইউনিয়নের কিছু অংশে কাজ আটকে আছে। ২০২২ সালে ইউনিয়নের বগাপুতা খালের ওপর সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩১ দশমিক ৮২৮ মিটার একটি সেতু নির্মাণ করা হয়।
এর পর পার হয়েছে আড়াই বছর। কিন্তু সেতুতে যানবাহন চলাচলই শুরু হয়নি। কারণ সংযোগ সড়কই যে নেই। তাহের ব্রাদার্স নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণকাজ সম্পন্ন করে। অবকাঠামোর কাজ শেষ হলেও ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় সংযোগ সড়ক নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। ফলে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বগাপুতা খালের ওপর সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার সেতুটি কোনো কাজেই আসছে না। এতে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন মানুষ।
সংযোগ সড়কের কাজ কবে সম্পন্ন হবে, সেটিও নিশ্চিত করে জানাতে পারেনি সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর। স্থানীয় বাসিন্দা মো. সোহাগ বলেন, চোখের সামনে সেতু নির্মাণ হয়ে আছে, অথচ কোনো কাজেই আসছে না। তাঁর অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা নিরসন হয়নি। মানুষের ভোগান্তি লাগবে দ্রুত জমির মালিকদের মূল্য বুঝিয়ে দিয়ে এটি সচল করতে হবে। পুরোনো সেতুর ওপর দিয়ে বড় যানবাহন পার হওয়ার সময় অন্যগুলোকে অপেক্ষা করতে হয়।
সরেজমিন দেখা গেছে, আঠারবাড়ী-ঈশ্বরগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের একপাশে খালের ওপর রয়েছে নতুন সেতুটি। দুই পাশে সড়ক নেই। পাশের পুরোনো নড়বড়ে সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে বিভিন্ন ধরনের হালকা ও ভারী যানবাহন। এ সময় ট্রাকচালক ওয়াদুদ মিয়া বলেন, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনাসহ বিভিন্ন শহর থেকে নানান ধরনের পণ্য আঠারবাড়ী (রায়ের বাজার) সরবরাহে এটিই একমাত্র পথ। পুরো সড়ক ঠিকমতো এলেও পুরোনো সেতুর ওপর উঠতেই কাঁপাকাঁপি শুরু হয়। মনে হয়, ‘এই বুঝি ভেঙে ট্রাকসহ নিচে পড়ে গেলাম’। নতুন সেতু চালু হলে নির্বিঘ্নে চলাচল করা যেত।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, সেতুর দুই পাশে ১০ থেকে ১২ জনের জমি রয়েছে। আড়াই বছর আগেই সেতুর নির্মাণকাজ সম্পন্ন হলেও অধিগ্রহণের টাকা ছাড়া জমি ছাড়তে চাইছেন না মালিকরা। ফলে সংযোগ সড়কের অভাবে অচল অবস্থায় পড়ে আছে সেতুটি। অটোরিকশার যাত্রী ইফরাত তানজীম তাবাসসুমকে বিরক্ত নিয়ে বিড় বিড় কিছু বলতে শোনা যায়। আলাপকালে তিনি বলেন, ‘মরার একটা সেতু শুধু শুধু বানিয়ে ফেলে রাখছে। মানুষের উপকারে আসবে তো দূরের কথা, আরও ভোগান্তি পোহাতে হয়।’
বগাপুতা গ্রামের বাসিন্দা ও জমির একাধিক মালিকের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়। আবদুল গফুর, আবদুস ছাত্তার, লতিফ মিয়া, আবদুর রশিদ, মজিবুর রহমান ও আজিজুল হকের ভাষ্য, কর্তৃপক্ষ তাদের জমির সমস্যা সমাধানে কোনো পদক্ষেপই নিচ্ছে না। টাকা হাতে না পাওয়া পর্যন্ত তারা সংযোগ সড়ক হতে দেবেন না।
সেতুটির দুই পাশের ২৫০ থেকে ৩০০ মিটার ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় সংযোগ সড়ক হচ্ছে না বলে জানান সওজের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. আব্দুস ছালাম। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে জমির মালিকদের সাত ধারা নোটিশ দেওয়া হয়েছে। প্রাক্কলন তৈরির কার্যক্রম চলছে। এটি পাসের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। প্রাক্কলন পাস হয়ে এলে পরবর্তী কার্যক্রম শুরু হবে। এ জন্য কতদিন সময় লাগবে, তা বলা যাচ্ছে না।