দিন চারেক আগেই চ্যাম্পিয়নস লিগে ডাচ ক্লাব পিএসভিকে ৭-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল আর্সেনাল। ফর্মের তুঙ্গে থাকায় সমর্থকরা আশা করছিল রবিবার (৯ মার্চ, ২০২৫) ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকেও হেসেখেলেই হারাবে গানারসরা। তবে হারানো তো পরের কথা, উল্টো একটুর জন্য ম্যাচ হেরে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা পেল মিকেল আর্তেতার দল।

অন্যদিকে ঘরের মাঠে এই ম্যাচে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ত্রাণকর্তা হিসেবে আরও একবার আবির্ভূত হলেন মিডফিল্ডার ব্রুনো ফের্নান্দেজ। প্রথমে গোল করে এগিয়ে দেওয়ার পর সমতায় ফেরে আর্সেনাল। ম্যাচের অন্তিম মুহূর্তে দলকে প্রায় জিতিয়েই ফেলেছিলেন ফের্নান্দেজ। তবে তার শটটি দারুণ দক্ষতায় ফিরিয়ে দেন গানারস গোলরক্ষক ডেভিড রায়া। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচএই পর্তুগিজ তারকার শটটি ড্র হয় ১-১ গোলে। ম্যাচ শেষে ইউনাইটেডের কোচ রুবেন আমোরিম বলেছেন, ‘আরও ব্রুনো’ প্রয়োজন।

ঘরের মাঠ অল্ড ট্রাফোর্ডে বিরতিতে যাওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে গোল পায় ইউনাইটেড। ম্যাচের ৭৪ মিনিটে সেই গোলটা শোধ করেন আর্সেনাল মিডফিল্ডার দেকলান রাইস। রায়াতে বাধা না পেলে ইউনাইটেড প্রায় জিতেই গিয়েছিল ম্যাচটি।

আরো পড়ুন:

‘শেষ চারে টিকে থাকার যোগ্যতা, আকাশ থেকে পড়বে না’

ম্যানসিটিতে ‘নতুন মেসি’ নিয়ে আসলেন গার্দিওলা 

ফের্নান্দেজের পারফরম্যান্সেই এই মৌসুমে ইউনাইটেড ১৪তম স্থানে থাকতে পেরেছে। অন্যথায় তারা তলানিতে থাকত। চলমান মৌসুমে ইতিমধ্যেই ১২ গোলের পাশাপাশি ১৩ অ্যাসিস্ট করেছেন এই মিডফিল্ডার। প্রিমিয়ার লিগে সমান ৭ গোল ও অ্যাসিস্ট।

আমোরিম বলেছেন, ফের্নান্দেজ দলের জন্য সব পজিশনে খেলতে রাজি, “আমি মনে করি (ফের্নান্দেজ) সব সময় এগিয়ে আসে। কখনও-কখনও সে হতাশা প্রকাশ করে ফেলে। আসলে খারাপ মুহুর্তগুলো অন্যদের চেয়ে তাকে বেশি ব্যথিত করে। সে জিততে চায়, বিভিন্ন পজিশনে খেলতে সব সময় প্রস্তুত থাকে। যখন দলকে একটি গোল বা সহায়তার প্রয়োজন হয়, সে সব সময় সেখানে থাকে এবং একটি ভালো উদাহরণ সেট করে।”

ফের্নান্দেজের গুণাবলী এই ৩৯ বছর বয়সী পর্তুগিজ ম্যানেজার স্কোয়াডের বর্তমান এবং সম্ভবত গ্রীষ্মে দলে টানার লক্ষ্যে থাকা ফুটবলারদের উদ্দেশ্য করে বলেছেন, “যে কোনও কোচই যখন খেলোয়াড় আনতে চান, সেরা প্রত্যাশা করেন। আমি যা বলতে পারি তা হলো, আমাদের আরও ব্রুনোর প্রয়োজন, কেবল তার মতো চরিত্র নয়। তার মতো ম্যাচ উপলব্ধি করার ক্ষমতা এবং বল নিয়ে দক্ষতা দেখানোর ক্ষমতাও থাকতে হবে।”

এই ম্যাচ ড্র করার ফ লে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা দৌড় থেকে এক প্রকার বের হয়ে গেল আর্সেনাল। ২৯ ম্যাচে ৭০ পয়েন্ট নিয়ে সবার শীর্ষে লিভারপুল। এক ম্যাচ কম খেলে, ২৮ ম্যাচে আর্সেনালের পয়েন্ট ৫৫। লিভারপুলের সঙ্গে ব্যবধান তাদের এখন ১৫ পয়েন্টের।

অন্যদিকে স্মরণকালের সবচেয়ে বাজে পারফরম্যান্স করা ম্যানইউ যেন কোনোমতে অবনমন এলাকা থেকে দূরে থাকতে পারলে বাঁচে। ২৮ ম্যাচে ৩৪ পয়েন্ট নিয়ে দলটি এখন অবস্থান করছে ১৪তম স্থানে।

ঢাকা/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আর স ন ল

এছাড়াও পড়ুন:

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন আসরে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ কারা, খেলা কবে-কোথায়

অভাগাদের বছরে ‘কুফা’ কাটানোর তালিকায় সর্বশেষ নাম দক্ষিণ আফ্রিকা। লর্ডসে গতকাল অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে টেস্টের রাজদণ্ড হাতে পেয়েছে টেম্বা বাভুমার দল। প্রোটিয়াদের শ্রেষ্ঠত্বের মধ্য দিয়ে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় আসর শেষ হয়েছে।

তবে এর রেশ থাকতেই চলে এসেছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চতুর্থ আসর বা চক্র। ২০২৫-২৭ চক্রের শুরুটা হচ্ছে বাংলাদেশকে দিয়েই। আগামী ১৭ জুন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গল টেস্ট খেলতে নামছে নাজমুল হোসেন দল। ২৫ জুন কলম্বোয় শুরু দুই দলের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। এবারের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রে এটিই প্রথম সিরিজ।

ক্রিকেটের অভিজাত এই সংস্করণে বাংলাদেশ প্রায় ২৫ বছর পার দিলেও রেকর্ড ভালো নয়। তবে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ আসার পর থেকে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ক্রমশ উন্নতির দিকে।

প্রথম চক্রে (২০১৯-২১) কোনো ম্যাচই জিততে পারেনি লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। দ্বিতীয় চক্রে (২০২১-২৩) মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে ঐতিহাসিক জয় বাদ দিলে বলার মতো কিছু নেই। প্রথম দুই চক্র শেষ করতে হয়েছে পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থেকে।

তবে তৃতীয় চক্রে (২০২৩-২৫) বাংলাদেশের পারফরম্যান্স বেশ আশাব্যঞ্জক। ১২ টেস্ট খেলে জিতেছে চারটিতে। এর মধ্যে গত বছর পাকিস্তানকে তাদের মাটিতে ধবলধোলাইয়ের সুখস্মৃতিও আছে। পয়েন্ট তালিকায় অবস্থান ছিল সাত নম্বরে; পাকিস্তান এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওপরে। তিন চক্র মিলিয়ে বাংলাদেশ খেলেছে ৩১ টেস্ট। জিতেছে পাঁচটি, ড্র করে দুটি আর হেরেছে ২৪টি।

এবার কী হবে? শ্রীলঙ্কায় যাওয়ার আগে মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে আশার বাণীই শুনিয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল। তিনি বলেছেন, ‘গত চক্রে আমরা চারটা ম্যাচ জিতেছি। আমাদের একটু উন্নতি হয়েছে। লক্ষ্য থাকবে এই চক্রে কীভাবে আরও একটা-দুইটা ম্যাচ বেশি জিততে পারি।’ সেটা কতটুকু সম্ভব, সময়ই বলে দেবে।

বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের আগের তিন চক্রের মতো এবারও অংশ নিচ্ছে ৯ দল। প্রত্যেক দল খেলবে ছয়টি করে সিরিজ—তিনটি নিজেদের মাঠে, তিনটি প্রতিপক্ষের মাঠে। পয়েন্ট সিস্টেমেও কোনো পরিবর্তন আসেনি (জিতলে ১২, ড্র করলে ৪, টাই করলে ৬ পয়েন্ট)।

তবে এবার ম্যাচের সংখ্যা গত দুবারের চেয়ে একটি বেড়েছে। ফাইনালসহ মোট ম্যাচ হবে ৭১টি, সিরিজ ২৭টি। প্রত্যেক সিরিজেই সর্বনিম্ন দুই ও সর্বোচ্চ পাঁচটি ম্যাচ হবে।

চতুর্থ চক্রের ফাইনালও লর্ডসে আয়োজনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই ম্যাচ হবে ২০২৭ সালের জুনে। ফাইনালের আগে শেষ সিরিজ হবে সেই বছরের মার্চে; পাকিস্তানে দুটি টেস্ট খেলতে যাবে নিউজিল্যান্ড।

এবার সবচেয়ে বেশি ২২ ম্যাচ খেলবে অস্ট্রেলিয়া, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ ম্যাচ খেলবে ইংল্যান্ড। সবচেয়ে কম ১২টি করে ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা, যাদের সিরিজ দিয়েই শুরু হচ্ছে এবারের চক্র। ২০২৫ সালে বাংলাদেশ দলের টেস্ট সিরিজ এই একটিই। নাজমুল-মুশফিক-তাইজুলদের বাকি পাঁচ সিরিজই ২০২৬ ও ২০২৭ সালে। সব সিরিজেই দুটি করে ম্যাচ।

২০২৬ সালে বাংলাদেশের প্রথম সিরিজ মার্চে, ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে। সেই বছরের আগস্টে দল যাবে অস্ট্রেলিয়ায়। ২০০৩ সালের পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সেটিই হবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের প্রথম টেস্ট সিরিজ।

এই চক্রে বাংলাদেশের ঘরের মাঠে দ্বিতীয় সিরিজ খেলবে ২০২৬ সালের অক্টোবরে; খেলতে আসবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পরের মাসে যাবে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে। বাংলাদেশের শেষ সিরিজ দেশের মাটিতেই; ২০২৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে আসবে ইংল্যান্ড। ২০১৬ সালের পর এটিই হবে ইংলিশদের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সিরিজ।

অনুপ্রেরণা জোগানোর মতো খবর হলো ২০২৫-২৭ চক্রে বাংলাদেশ যে ছয় দলের বিপক্ষে খেলবে, এর চারটির বিপক্ষে সর্বশেষ সিরিজে তারা হারেনি। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ ড্র করেছে আর পাকিস্তানকে করেছে ধবলধোলাই (দুই ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে জয়)। সিরিজ হেরেছে শ্রীলঙ্কা আর বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে।  

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন আসরে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ কারা, খেলা কবে-কোথায়
  • ব্রাজিলে আলোকাড়া রিবেইরোয় চোখ আর্সেনাল-নাপোলির
  • ব্রাজিলে আলো কাড়া রিবেইরোয় চোখ আর্সেনাল-নাপোলির
  • রিবেইরোয় চোখ আর্সেনাল-নাপোলির 
  • কোচ কাবরেরার পদত্যাগ দাবি, অনিশ্চয়তায় ভবিষ্যৎ