ইসলামী ব্যাংকে এস আলম–সংশ্লিষ্ট (সাইফুল আলম) ২৪ প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ারহোল্ডার পরিচালক ও ব্যক্তিবিশেষের সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ (অবরুদ্ধ) রাখতে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে শেয়ারহোল্ডার এই পরিচালকদের আদালতের অনুমতি ছাড়া দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো.

আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি কাজী ওয়ালিউল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার রুলসহ এ আদেশ দেন। এস আলম–সংশ্লিষ্ট হিসেবে পরিচিত ২৪ শেয়ারহোল্ডার কোম্পানি বা প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর ব্যাংকটিতে শেয়ারের পরিমাণ ৮১ দশমিক ৯২ শতাংশ।

ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুসরণ না করে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসিতে ওই কোম্পানিগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার ধারণের বৈধতা নিয়ে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মুহাম্মদ মনিরুল মওলা গত ১৭ ফেব্রুয়ারি রিটটি করেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. রুকুনুজ্জামান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এম মনজুর আলম।

পরে রিট আবেদনকারীর আইনজীবী মো. রুকুনুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, এস আলম–সংশ্লিষ্ট (সাইফুল আলম) ২৪ প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ারহোল্ডার পরিচালক ব্যাংকের এজিএমে অংশ নিলে ভোটাধিকারের মাধ্যমে তাঁদের মতো করে এজেন্ডা পাস করে নেবেন। কারণ, সংখ্যাগরিষ্ঠ শেয়ারহোল্ডার পরিচালক তাঁরা। অথচ আইন অনুসারে ১০ শতাংশের বেশি শেয়ার একই গ্রুপভুক্ত বা পারিবারিকভাবে রাখা যায় না। কিন্তু একই পরিবারের মদদপুষ্ট প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ সূত্রে ২৪ কোম্পানি প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ারহোল্ডার হিসেবে ব্যাংকটিতে যুক্ত হয়। তাদের শেয়ার ৮১ দশমিক ৯২ শতাংশ। যে কারণে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রিট করেন।

২৪ প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ারহোল্ডার পরিচালক ব্যাংকের এজিএম ও ইএজিএমেও অংশগ্রহণ করতে পারবেন না জানিয়ে আইনজীবী মো. রুকুনুজ্জামান বলেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এই শেয়ারগুলো অ্যাটাচ (জব্দ) থাকবে বলে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। অর্থাৎ শেয়ারগুলো হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ওই শেয়ারগুলোর বিপরীতে বোনাস লভ্যাংশ প্রদানও স্থগিত থাকবে।

ইসলামী ব্যাংকের এমডির এই আইনজীবী আরও জানান, ব্যাংক কোম্পানিজ আইন অনুসরণ না করে কোন ক্ষমতাবলে ২৪ কোম্পানি প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার ধারণ করেছে, তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। এ ধরনের শেয়ারগুলো কেন বাজেয়াপ্ত করা হবে না, রুলে তা–ও জানতে চাওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক গর্ভনর, অর্থসচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) রুলের জবাব দিতে হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ারধারীদের বড় অংশই এস আলম-সংশ্লিষ্ট। এর বাইরে বিদেশি শেয়ারধারীদের মধ্যেও এস আলম-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা রয়েছেন। সব মিলিয়ে এস আলমের হাতেই ব্যাংকটির ৮২ শতাংশ শেয়ার।

আরও পড়ুনএস আলম ও তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যক্তির আরও কিছু স্থাবর সম্পদ ক্রোকের আদেশ১০ মার্চ ২০২৫

রিট আবেদন থেকে জানা যায়, যেসব প্রতিষ্ঠানের নামে এসব শেয়ার রয়েছে, সেগুলো হলো জেএমসি বিল্ডার্স, বিটিএ ফাইন্যান্স, প্যারাডাইস ইন্টারন্যাশনাল, এবিসি ভেঞ্চারস, এক্সেল ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং, প্লাটিনাম এনডেভার্স, এক্সেলশিয়র ইমপেক্স কোম্পানি, গ্র্যান্ড বিজনেস, লায়ন হেড বিজনেস রিসোর্সেস, বিএলইউ ইন্টারন্যাশনাল, আরমাডা স্পিনিং মিলস, কিংসওয়ে এনডেভার্স, ইউনিগ্লোভ বিজনেস রিসোর্সেস, সলিড ইনস্যুরেন্স পিসিসি, হলিস্টিক ইন্টারন্যাশনাল, হাই ক্লাস বিজনেস এন্টারপ্রাইজ, ক্যারোলিনা বিজনেস এন্টারপ্রাইজ, ব্রিলিয়ান্ট বিজনেস কোম্পানি, ব্রডওয়ে ইম্পেক্স কোম্পানি, পিকস বিজনেস এন্টারপ্রাইজ, এভারগ্রিন শিপিং, ম্যারাথন ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, কিংস্টোন ফ্লাওয়ার মিলস ও পারসেপ্টা এনডেভার্স।

আরও পড়ুনএস আলম ও তাঁর ছেলেসহ ৩০ ব্যাংক কর্মকর্তাকে দুদকের তলব২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এস আলম স শ ল ষ ট শ য় রগ ল আইনজ ব ব জন স ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা যেভাবে পড়বেন

বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তির লিখিত পরীক্ষা ২৮ জুন অনুষ্ঠিত হবে। প্রার্থীদের সুবিধার জন্য লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির পরামর্শ প্রকাশ করা হচ্ছে। আজ পঞ্চম পর্বে থাকছে বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ বিষয়ে প্রস্তুতির পরামর্শ। পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবী রিয়াজুর রহমান।

বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ মূলত আইনজীবীদের পেশাজীবনের অনুসরণীয় বিধিমালা। এ আইন থেকে আইনজীবী তালিকাভুক্তি লিখিত পরীক্ষায় দুটি প্রশ্ন আসবে। উত্তর দিতে হবে একটি। নম্বর থাকবে ১০।

প্রশ্নপত্রের মানবণ্টন দেখেই বোঝা যাচ্ছে আইনটি কেমন হতে পারে। মূলত বার কাউন্সিলের গঠন, আইনজীবী হওয়ার যোগ্যতা এবং একজন আইনজীবী হিসেবে সমাজের প্রতি, মক্কেলের প্রতি, সহকর্মীদের প্রতি যেসব দায়িত্ব পালন করতে হবে, তা এ আইনে বলা হয়েছে। বাস্তবধর্মী ও পেশাজীবনে অতি চর্চিত একটি আইন হলো বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২। এ আইন থেকে বিষয়ভিত্তিক পড়াশোনা করলে পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়া সম্ভব।

যেমন বার কাউন্সিল কীভাবে গঠিত হয়, বার কাউন্সিলের কার্যবালি কী, সদস্যরা কীভাবে নির্বাচিত হন, কতগুলো কমিটি রয়েছে, কমিটির কাজ কী কী—এগুলো পড়তে হবে। অনেকেই আছে বার কাউন্সিল ও বার অ্যাসোশিয়েশনের মধ্যে পার্থক্য বোঝেন না। এটি ভালো করে রপ্ত করতে হবে। এমন প্রশ্ন হরহামেশা পরীক্ষায় আসে।

এ ছাড়া বার ট্রাইব্যুনালের গঠন ও কার্যাবলি, আইনজীবীদের পেশাগত অসদাচরণের জন্য কী কী ধরনের শাস্তি রয়েছে, বার কাউন্সিল কি আইনজীবীদের বিরুদ্ধে সুয়োমোটো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে—বিষয়গুলো কোনোভাবেই বাদ দেওয়া যাবে না। অনুচ্ছেদ ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৬, ৩২ এবং বিধি ৪১, ৪১ক ও ৫০–এ এসব বিষয়ে বিস্তারিত বলা আছে। সেগুলো ভালো করে পড়তে হবে। অনুসন্ধান করার ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনালের ক্ষমতা, একজন আইনজীবী হিসেবে আরেক আইনজীবীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়েরের পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তর জানতে হবে। এসব বিষয় থেকে নিয়মিত প্রশ্ন আসে।

পেশাগত বিধি অংশে রচনামূলক প্রশ্ন আসতে পারে। যেমন পেশাগত বিধি এবং নীতিমালার আলোকে আদালতের প্রতি, মক্কেলের প্রতিসহ আইনজীবীদের প্রতি ও জনসাধারণের প্রতি একজন আইনজীবীর দায়িত্ব ও কর্তব্য পর্যালোচনা করতে বলা হয়। বর্তমান ঢাকা বারসহ বেশ কয়েকটি বার অ্যাসোশিয়েশনে এডহক কমিটি রয়েছে। এডহক বার কাউন্সিলের গঠন ও ফাংশনস সম্পর্কে প্রশ্ন আসতে পারে। এগুলো ভালো করে পড়তে হবে।

অনেক সময়ে আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরসংক্রান্ত মুসাবিদা করতে দেওয়া হয়। তাই এই মুসাবিদা নিয়মিত অনুশীলন করবেন। মনে রাখবেন, মামলার মুসাবিদা ও আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগের মুসাবিদার ধরন কিন্তু এক নয়। তাই যেকোনো ভালো একটি বই থেকে ফরমেটটি দেখে নেবেন এবং অনুশীলন করবেন। একই সঙ্গে বিগত কয়েক বছরের প্রশ্ন সমাধান করবেন। এ আইন থেকে বিগত বছরের প্রশ্ন রিপিটও হয়।

একটি বিষয় মনে রাখবেন, আইনটি সহজ বলে অবহেলা করার সুযোগ নেই। কারণ, কৃতকার্য হওয়ার জন্য এই ১০ নম্বর অনেক বেশি গুরুত্ব বহন করে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা যেভাবে পড়বেন
  • দণ্ডাদেশ বহালের রায়ের বিরুদ্ধে ১০ আসামির আপিল ও লিভ টু আপিল
  • যে ‘ধর্মীয় অনুপ্রেরণায়’ ইরানে এই হামলা চালাল ইসরায়েল
  • দক্ষিণ ভারতের নিষ্পেষিত মুসলিম নারীদের কণ্ঠস্বর
  • সুবিচার মিলবে কত বছরে
  • ধর্ষণের শিকার শিশুটির চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন বিএনপি নেতা অমিত
  • রেফারেন্স ও মতামতপ্রক্রিয়া নিয়ে রিট খারিজ, আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন