গোবিপ্রবির নাম পরিবর্তনে সনদ জটিলতা, বিপাকে শিক্ষার্থীরা
Published: 11th, March 2025 GMT
গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (গোবিপ্রবি) নাম পরিবর্তনের পর নতুন নামে সনদ নিতে গিয়ে বিভিন্ন জটিলতা ও বিড়ম্বনার সম্মুখীন হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
নাম পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজনীয় সনদ ইস্যু করতে প্রশাসনের গড়িমসি ও সিদ্ধান্তহীনতা, স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের সনদ দুই নামে দেওয়া, ইতোপূর্বে শিক্ষাজীবন শেষ করা শিক্ষার্থীদের নতুন নামে সনদ না দেওয়াসহ বিভিন্ন জটিলতা তৈরি হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, সনদ সংক্রান্ত ইস্যু নিয়ে উপ-উপাচার্য বলেছেন, যারা আগে পাস করে গেছেন, কিন্তু সনদ উঠায়নি, তারা পুরাতন নামেই সনদ পাবেন। অথচ পরিক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর থেকে বলা হয়েছে, যারা সনদ উঠায়নি তারা নতুন নামে সনদ পাবে।
অন্যদিকে, যারা পূর্বের নামে স্নাতকের সনদ তুলেছিলেন তাদের নতুন নামে স্নাতকোত্তরের সনদ দিলেও দিচ্ছে না স্নাতকের সনদ। এছাড়াও কোন দপ্তরেই সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা না থাকায় একে অন্যের ওপর দায় দিচ্ছে। এতে আরো বিড়ম্বনায় পড়ছেন শিক্ষার্থীরা।
অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রাসেল রাইহান বলেন, “ফেব্রুয়ারিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ কি নামে হবে, এটা নিয়ে প্রশাসনের মধ্যে সমন্বয়হীনতা দেখা যায়। ফলে কাউকে পূর্বের নামে কাউকে বর্তমানে নামে সনদ প্রদান করা হয়।”
তিনি বলেন, “শিক্ষার্থীরা এটা নিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়লে সবাইকে একই নামে সনদ প্রদানের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন বরাবর লিখিত আবেদন দেওয়া হয়। উপাচার্য স্যার দাবি মেনে নিয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আদেশ প্রদান করেন।”
ফার্মেসী বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাইনুর রহমান শাহীন বলেন, “অনেক জায়গায় সনদের স্ক্যান কপি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম দুইটা দিয়েই অ্যাপ্লাই করতে হয়। সেখানে দেখা যাবে সনদে বশেমুরবিপ্রবি আবার অনলাইনে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম গোবিপ্রবি। এসব আবেদন শর্টলিস্টই করবে না। এছাড়া ভাইভা বোর্ডে একই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে দুই নামে দুই সনদ নিয়ে যেতে হবে। এতে সেখানে অবশ্যই খারাপ প্রভাব ফেলবে। সব জায়গায় একটা আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে ফেলে দেবে।”
সনদ সমস্যার বিষয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক গোলাম হায়দার বলেন, “গত ১৩ ফেব্রুয়ারি প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকে নতুন নামেই দিচ্ছিলাম। আগে যেগুলো দেওয়া হয়েছিল, সেগুলো ওই নামে থাকার বিষয়ে প্রজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শিক্ষার্থীরা নতুন নামে সনদ পাওয়ার বিষয়ে আবেদন করার পরিপ্রেক্ষিতে আগামীকাল একাডেমিক কাউন্সিলের সভা আছে, সেখানে যাবে। সভায় যে সিদ্ধান্ত হয়ে আসবে, ওইনামে সনদ দেওয়া হবে।”
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড.
ঢাকা/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব প রব সনদ প র সনদ
এছাড়াও পড়ুন:
মানুষ চিন্তা করতে পারেনি, তারা মনের কথা নির্বিঘ্নে প্রকাশ করতে পারবে: জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘আমাদের সন্তানেরা জীবন বাজি রেখে রাস্তায় নেমেছিল, আমরাও তাদের সঙ্গে ছিলাম। তারা ফ্যাসিবাদকে বিদায় করেছে। এক বছর আগেও মানুষ চিন্তা করতে পারেনি যে তারা মনের কথা নির্বিঘ্নে প্রকাশ করতে পারবে। কিন্তু আজ সারা দেশের জনগণ নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনই সর্বময় ক্ষমতার মালিক। তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা দেন এবং ইচ্ছেমতো কেড়েও নেন। তা আমরা জুলাই বিপ্লবে সরাসরি প্রত্যক্ষ করেছি।’
আজ সোমবার সন্ধ্যায় খুলনার খানজাহান আলী থানা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত ‘সহযোগী সদস্য সংগ্রহ অভিযান-২০২৫’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মিয়া গোলাম পরওয়ার এ কথাগুলো বলেন।
২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের সংসদ নির্বাচন নিয়ে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘২০১৪ সালে তারা ষড়যন্ত্র করে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন করেছিল। কেউ নির্বাচনে যায়নি। ২০১৮ সালের নির্বাচন ছিল ইতিহাসের আরেক কালো অধ্যায়। যেখানে রাতেই ভোট হয়ে গিয়েছিল। আর এসব নির্বাচনে হাসিনাকে সঙ্গ দিয়েছে জাতীয় পার্টি। আমরা একটা কালো যুগ পার করেছি। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার মানুষের সব অধিকার হরণ করেছিল। মানুষকে ভোট দিতে দেয়নি। মানুষকে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে দেয়নি। তারা মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে দেয়নি।’ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘যারা হাত-পা হারিয়েছে, যারা নির্যাতিত হয়েছে, তারা কখনোই এসব খুনিকে ক্ষমা করবে না। খুনিদের বিচার করতে হবে এবং সব স্তরে সংস্কার করে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে, যেখানে কালোটাকা ও পেশিশক্তির প্রভাব থাকবে না। নির্বাচন জনগণের অধিকার। জনগণই তাঁদের পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচন করবেন। যাঁরা নির্বাচনে কালোটাকা ও পেশিশক্তির ব্যবহার করতে চাইবেন, জনগণ তাঁদের প্রতিহত করবেন।’
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ক্ষমতার দম্ভে মানুষের ওপর লাগামহীন জুলুম-নির্যাতন চালিয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে রাজনৈতিক ও আদর্শিকভাবে মোকাবিলা না করে হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, জেল-জুলম, গুপ্তহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। তারা মনে করেছিল যে তাদের এমন অপশাসন ও দুঃশাসন কিয়ামত পর্যন্ত স্থায়ী হবে। কিন্তু আল্লাহ জালিমদের ছাড় দিলেও ছেড়ে দেন না।’
ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের প্রসঙ্গে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই, যেখানে ন্যায়বিচার থাকবে, বেকারত্ব ও চাঁদাবাজি থাকবে না। যেখানে মা-বোনেরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবে না। আমরা সাম্যের ও মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চাই।’
খানজাহান আলী থানা জামায়াতের আমির সৈয়দ হাসান মাহমুদের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি গাজী মোর্শেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা জেলা সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি মিয়া গোলাম কুদ্দুস ও বায়তুল মাল সেক্রেটারি হাফেজ আমিনুল ইসলাম। গণসংযোগের সময় স্থানীয় মার্কেটের ব্যবসায়ী, পথচারী, স্থানীয় বাসিন্দা, গাড়িচালকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে দাওয়াত দেওয়া হয়।