মাত্র আট বছরের ছোট্ট জীবনে কোনো পাপ তোকে ছোঁয়নি বলেই হয়তো আমাদের মতো পাপীদের তুই চোখে আঙুল দিয়ে দেখাচ্ছিস ক্ষমতা নয়, রাজপথই নির্ধারক। তুই কিছুই পেলি না তীব্র যন্ত্রণা আর অসহায়ত্ব ছাড়া। অথচ আমাদের জন্য নতুন মানবিক সমাজ বিনির্মাণের পথে আন্দোলনের অবলম্বন হয়ে আছিস।

আমরা এখানে ইনক্লুসিভিটির কথা বলছি, অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের কথা বলছি। অথচ এখানে অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্যাতনের কাঠামো গড়ে উঠেছে। এখানে শ্রেণি, পেশা, জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে কেউ নিরাপদ নয়। মেয়ে শিশু শুধু নয়, ছেলে শিশুও এখানে ধর্ষণের শিকার হয়। যদিও এ অপরাধকে বলাৎকার বলে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু তা আদতে ধর্ষণ। অন্যকিছু বলে এ অপরাধ লঘু করার অবকাশ নেই। এখানে বাইরে গেলে নির্যাতনের শিকার হলে আক্রান্তকেই আক্রমণ করা হয়। নারীর পোশাক দেখে তার চারিত্রিক সনদ প্রদান করেন কেউ কেউ। আবার কেউ বা উচ্চশিক্ষাকে দায়ী করেন। কিন্তু তুই তো মা শিশু, এখনও কিছু বোঝার বয়সটুকুও হয়নি। তুই তো বাইরেও যাসনি। তবু কেন আক্রান্ত আমার মা?

সহ-নাগরিকদের বলছি, এভাবে আক্রান্তকে দোষ দেওয়া আর সবকিছুতে ‘কিন্তু’ খোঁজা বন্ধ করুন। দোহাই লাগে, মানসিক ট্রমা হ্রাস করতে না পারেন, বাড়াবেন না।

মা জানিস, আমরা নারী-পুরুষসহ সব মানুষের মানবিক মর্যাদার কথা বলছি, অথচ তা পূরণ করছি কবরে বা শ্মশানে। এমনকি হাসপাতালে মরদেহও নিরাপদ নয়।
 
তুই আমাদের মতো পাপীদের দেখিয়েছিস রাজপথ। এখান থেকেই গণঅভ্যুত্থানের সূচনা। রাজপথই ছাত্র-জনতার ক্ষমতার উৎস। নতুন গণতান্ত্রিক, মানবিক বাংলাদেশ রাষ্ট্র নির্মাণের পথে যে রাজপথ আমাদের পাঠশালা।

উত্তাল জুলাইয়ের মতো আওয়াজ তুলুন-
ক্ষমতা না রাজপথ
রাজপথ রাজপথ.

..
সব ধর্ষক, যৌন নিপীড়কের বিরুদ্ধে সোচ্চার হোন....

বাংলাদেশে ধর্ষণ নতুন কোনো বিষয় নয়। কোনো পুরুষতান্ত্রিক সমাজ যখন অস্থিরতার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়, তখন প্রথমেই আক্রান্ত হয় নারী ও শিশু। ‘শিশুটি’ এ দুটো শর্তই পূরণ করে। সে মেয়ে ও শিশু।

গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে যে অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনের অভিপ্রায় ব্যক্ত হয়েছিল; তা সম্ভব হয়নি। আর এ কারণেই চরম পুরুষতান্ত্রিক লোকজন বিভিন্ন ফায়দা নেওয়ার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে। 

ধান্ধাবাজরা একটা ফ্যাসিস্ট, ধর্ষকামী ব্যবস্থায় নারী বিদ্বেষের বেসাতি ছড়িয়েছে; তারা ধর্ষণ করছে, ধর্ষণের পক্ষে মতামত গড়ে তুলছে। যে কারণে এ ব্যবস্থার পরিবর্তন আবশ্যক। আর তাতে রাজনৈতিক সদিচ্ছা সবচেয়ে বেশি জরুরি।

আমি, আমরা নিপীড়কের বিচার চাই অবশ্যই। সেই সঙ্গে যার সঙ্গে একটা অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, তাকে যেন আজীবন সেই অপরাধের জন্য কথা শুনতে না হয়, তাকে যেন সেই ট্রমা নিয়ে দিন কাটাতে না হয়; তেমন একটা মানবিক সমাজ চাই। এ ছাড়া ওই ধর্ষকের যে বিচারই হোক না কেন; আক্রান্ত মানুষটা আজীবন সেই ক্ষত বহন করবে। আর সেটা এই অমানবিক ব্যবস্থা বিলোপ করে নতুন গণতান্ত্রিক কাঠামো বিনির্মাণের মধ্য দিয়েই কেবল সম্ভব।

শেষে বলতে চাই- এই ধর্ষকামিতা আমার দেশ নয়। যে কারণে এখানে আমরা নারী-পুরুষ, জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে শিশুটির জন্য রাস্তায় নেমে আন্দোলন করতে দেখি। আমরা হারতে পারি না। গণঅভ্যুত্থানের অভিপ্রায়, গোটা ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থার বিলোপ করতে আমরা জেগে আছি!!

রাত্রি যেথা গভীর, সেথায় আলোর হাতছানি!!
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবস থ আম দ র র জন য র জপথ অপর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

লন্ডনে ড. ইউনূস-তারেক রহমানের বৈঠককে স্বাগত জানাল জেএসডি

লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের আলোচনা ও ঐকমত্যের সূচনাকে স্বাগত জানিয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি)। দলটি বলেছে, আমরা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, জনগণ শুধু কথায় নয়, বাস্তবে সংস্কার ও বিচারের দৃশ্যমান অগ্রগতির পদক্ষেপ দেখতে চায়।

শুক্রবার জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব ও সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন।

তারা বলেন, এই উচ্চপর্যায়ের সংলাপ দেশে রাজনৈতিক সমঝোতা ও জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থানের কাঙ্ক্ষিত অভিপ্রায় অনুযায়ী রাষ্ট্র সংস্কার, শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর এবং গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠার পথে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।

বিবৃতিতে নেতারা বলেন, অধ্যাপক ইউনূস এবং তারেক রহমানের বৈঠক ও বিবৃতিতে আগামী বছরের পবিত্র রমজানের আগেই একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ এবং তার পূর্বশর্ত হিসেবে কাঙ্ক্ষিত সংস্কার ও ফ্যাসিস্ট সরকারের বিচারের প্রক্রিয়ায় দৃশ্যমান অগ্রগতি অর্জনের ঘোষিত প্রত্যয়ে রাজনীতিতে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে।

বিবৃতিতে বলা হয়, গণমানুষের রক্তস্নাত গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম দাবি- গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য কাঠামোগত মৌলিক সংস্কার এবং গণহত্যাকারী ফ্যাসিবাদী শক্তির বিচারের ব্যবস্থা। এই বিষয় দুটির দৃশ্যমান অগ্রগতিই কেবল একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ভিত্তি রচনা করতে পারে।

রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি সমাজের শ্রমজীবী, কর্মজীবী ও পেশাজীবীদের মতামত, আকাঙ্ক্ষা ও অংশগ্রহণে রাষ্ট্রীয় রাজনীতির মৌলিক সংস্কারের লক্ষ্যে দ্রুত ‘জাতীয় সনদ’ প্রণয়নের আহ্বান জানায় জেএসডি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নাগরিক সমাজ শাসকদের পক্ষে থাকে কেন?
  • আবু সাঈদ হত্যা: এক মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ ট্রাইব্যুনালের
  • রংপুরে আবু সাঈদ হত্যা: এক মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ ট্রাইব্যুনালের
  • গণঅভ্যুত্থানে আহত সামিউলের দিন কাটছে অনিশ্চয়তায়
  • লন্ডনে ড. ইউনূস-তারেক রহমানের বৈঠককে স্বাগত জানাল জেএসডি