মুন্সীগঞ্জ শহরের আফতাবউদ্দিন কমপ্লেক্সে ঈদের পোশাক কিনতে এসেছিলেন কাজী প্রভাত। তিনি বলছিলেন, ‘ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে, দাম তত বাড়ছে। পছন্দসই জিনিসও কমছে। তাই যত তাড়াতাড়ি কেনাকাটা করা যায়, ততই ভালো। এ কারণে এসেছি। প্রথমে শিশুদের, পরে নারীদের জন্য পোশাক কিনেছি। এখন বাকি পুরুষদের। আমরা কিছু পাঞ্জাবি কিনব।’
জিনিয়া ফেরদৌস নামে আরেক ক্রেতার ভাষ্য, ‘মেয়ের জন্য জামা কিনলাম। গতবারের তুলনায় এবার দাম তুলনামূলক বেশি। জামার সঙ্গে মিলিয়ে বিভিন্ন ধরনের জুতাও কেনা হচ্ছে।’ প্রভাত ও জিনিয়ার মতো হাজারো ক্রেতার পদচারণায় মুখর মুন্সীগঞ্জ শহরের বিপণিবিতান। পুরোদমে জমে উঠেছে ঈদের বেচাকেনা। 
ঈদে ক্রেতাদের দৃষ্টি কারতে বিপণিবিতানে বাহারি রঙের লাইটিং দিয়ে সাজানো হয়েছে। ঈদ এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে সব বয়সের নারী-পুরুষের উপচে পড়া ভিড় দেখা যাচ্ছে। ফুটপাতেও কেনায় ব্যস্ত স্বল্প আয়ের মানুষ। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলছে বেচাকেনা। নিজের কিংবা প্রিয়জনের জন্য ঈদের পোশাক কিনতে আসছেন ক্রেতা।
জেলা শহরের মসজিদ মার্কেট, জিএইচ সিটি সেন্টার, আফতাব উদ্দিন শপিং কমপ্লেক্স, শহর জামে মসজিদ মার্কেট ও জেলা পরিষদ মার্কেটে ক্রেতার বেশি ভিড় দেখা গেছে। সব বয়সী মেয়ের পাশাপাশি ছেলেরাও দেশি-বিদেশি পছন্দের পোশাক বেছে কিনছেন। রেডিমেড ও তৈরি পোশাকের পাশাপাশি ভিড় বেড়েছে জুতা, স্যান্ডেল ও কসমেটিকসের দোকানে। বাড়তি দাম নিয়ে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের অভিযোগ থাকলেও শেষ পর্যন্ত কিনেই ফিরছেন ক্রেতা।
রেডিমেড আধুনিক ডিজাইনের পোশাকের চাহিদা বেশি থাকার পরও ব্যস্ততার শেষ নেই জেলার দর্জিপাড়ায়। বিপণিবিতানগুলোয় বেশি বিক্রি হচ্ছে বাচ্চাদের পোশাক। সেই সঙ্গে বিক্রি হচ্ছে নারীদের থ্রিপিস। তুলনামূলক কম দামে বিক্রি হচ্ছে পুরুষের পোশাক। দোকানি মো.

হানিফ বলেন, এবার নারীদের ৪-৫ হাজার টাকা দামের পোশাক বেশি বিক্রি হচ্ছে। দাম কিছুটা বেশি। ডলারের দামও বেশি। কিনতে খরচ বেশি পড়ছে।
বিক্রেতারা বলছেন, এবার বিক্রি ভালো হচ্ছে। দাম একটু বেশি হলেও ক্রেতারা পছন্দমতো কাপড় কিনতে পেরে খুশি। বিপণিবিতানে নারীর ভিড় বেশি দেখা যাচ্ছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মেয়েদের থ্রিপিস ২ থেকে সাড়ে ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। জুতার দোকানেও ক্রেতার ভিড়ে দাঁড়ানোর জায়গা খুঁজে পাওয়া কঠিন।
ফুটপাতেও ক্রেতার উপচেপড়া ভিড়। বৃহস্পতিবার দুই নারী টঙ্গিবাড়ীর একটি গ্রাম থেকে এসেছিলেন ছেলে ও মেয়েসহ পরিবারের সবার জন্য ঈদের পোশাক কিনতে। তাদের একজন বলেন, তিনি ছেলে ও মেয়ের জন্য পোশাক কিনতে এসেছেন। কিন্তু সবকিছুর দাম দ্বিগুণ।
হাতিমারা এলাকার এক নারী নিজের ও দুই ছেলে-মেয়ের পোশাক কিনতে ৬ হাজার টাকা নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু সন্তানের কেনাকাটা করতেই সব টাকা শেষ। নিজের জন্য কিছু কেনা হয়নি তাঁর।
ব্যবসায়ীরা জানান, মুন্সীগঞ্জে কয়েকটি আধুনিক বিপণিবিতান হওয়ায় এবার ক্রেতাদের ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে যেতে হয়নি। তারা মুন্সীগঞ্জেই কেনাকাটা করছেন। পোশাক কিনতে আসা সুরাইয়া আক্তার বলেন, এবার দাম অনেক বেশি। ঈদের জন্য ৩ হাজার টাকা দামের থ্রিপিস কিনেছেন। কফিলউদ্দিন নামে আরেক ক্রেতা পাঞ্জাবি ও পায়জামা কিনেছেন ২ হাজার টাকায়। তিনি বলেন, দাম বেশি। তারপরও কিনতে হবে।
শহর জামে মসজিদ মার্কেটের ব্যবসায়ী মো. জনি। তাঁর ভাষ্য, অন্য জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বাড়ছে, তার প্রভাব পোশাক-পরিচ্ছদেও পড়েছে। পাইকারি বেশি দামে কেনা পড়ছে। ব্যবসায়ী নাজমুল হোসেন বলেন, এবার বেচাকেনা বেশ জমজমাট। ভালো বিক্রি হচ্ছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

গজারিয়ায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় পুলিশ সদস্য নিহত

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় জিলু মিয়া (৪২) নামের পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (১ আগস্ট) উপজেলার বালুয়াকান্দি এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত জিলু মিয়া উপজেলার ইমামপুর ইউনিয়নের রসুলপুর নয়াকান্দি গ্রামের ওহিদ মিয়ার ছেলে। তিনি নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার কার্যালয়ে কনস্টেবল পদে কর্মরত ছিলেন।

ভবেরচর হাইওয়ে থানার ডিউটি অফিসার শফিউল ইসলাম বলেন, “জিলু মোটরসাইকেলে করে কুমিল্লার দিকে যাচ্ছিলেন। পথে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের মধ্যবর্তী ডিভাইডারে ধাক্কা খেলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।”

আরো পড়ুন:

ঠাকুরগাঁওয়ে ট্রাক চাপায় নারী নিহত, আহত শাশুড়ি-ননদ

লোহাগড়ায় ট্রাক চাপায় মোটরসাইকেলচালক নিহত

ঢাকা/রতন/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ