পৃথিবীর ইতিহাসে সেরা বিজ্ঞানী হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে আলবার্ট আইনস্টাইনকে। আজ ১৪ মার্চ তাঁর জন্মদিন। ১৮৭৯ সালের ১৪ মার্চ জার্মানির উলম শহরে জন্ম নিয়েছিলেন তিনি। তাঁর বিখ্যাত ইকুয়েশন (E=mc2) এবং থিওরি অব রিলেটিভিটি বা আপেক্ষিকতা তত্ত্ব প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জে করেছিল এবং বিশ্ব সম্পর্কে আমাদের জানাকে পাল্টে দিয়েছে। কোয়ান্টাম তত্ত্বের সাহায্যে আলোক তড়িৎ ক্রিয়া ব্যাখ্যার তত্ত্ব দেওয়ার জন্য ১৯২১ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন জগদ্বিখ্যাত এই বিজ্ঞানী।

কিন্তু মজার বিষয় হলো, আইনস্টাইন জন্মদিন পালন পছন্দ করতেন না। তাই তিনি জন্মদিন পালন নিয়ে মাথাও ঘামাতেন না। কিংবদন্তি তাত্ত্বিক পদার্থবিদ আইনস্টাইনের মতে, জন্মদিন পালন অর্থ মানুষের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা। তিনি জন্মদিন পালনের বিরোধিতা করে বলতেন, জন্মদিন পালন কেবল শিশুদের জন্য। কিন্তু একবার আইনস্টাইন তাঁর মতের বিরুদ্ধে গিয়েও জন্মদিন পালন করেছিলেন। ১৯৫৩ সালের ১৪ মার্চ, ওই বছর তাই দিনটি ছিল ব৵তিক্রম।

ওই বছর নিউইয়র্কের ইয়েশিভা বিশ্ববিদ্যালয় আইনস্টাইনের কাছে একটি প্রস্তাব নিয়ে গিয়েছিল, তা তিনি ফেলতে পারেননি। ইয়েশিভা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আইনস্টাইনের নামে একটি মেডিকেল স্কুল তৈরির অনুমতি চেয়েছিল। একই সঙ্গে আইনস্টাইনের জন্মদিন পালন করে সে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথিদের দাওয়াত দিয়ে মেডিকেল স্কুলের জন্য তহবিল সংগ্রহের প্রস্তাব দিয়েছিল। আইনস্টাইন এ প্রস্তাবে সম্মতি দেন। তিনি বলেন, তাঁকে সম্মান জানানোর জন্য এই আয়োজন করা হচ্ছে। তাই তিনি তহবিল সংগ্রহের মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেন।

আইনস্টাইন নিউইয়র্কের ইয়েশিভা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তাঁর ব্যাগি সোয়েটার এবং স্ল্যাকস ছেড়ে ধূসর স্যুট পরেছিলেন। তবে তিনি আজীবন যে লাজুক ছিলেন, ওই জন্মদিনে তিনি খুব সাবলীল থাকতে পারেননি। তাঁকে উদ্দেশ্য করে কেক বেকার্স ইউনিয়ন লোকাল ৫১ যে তিন স্তরের জন্মদিনের কেক এনেছিল, সেটিও তিনি খেয়াল করেননি। তাঁর চোখ পড়ে গরুর মাংসের রোস্টের ওপর। তিনি এ রোস্ট নিয়ে বলেন, এটি সিংহের জন্য।

সবকিছু শেষ হওয়ার পর ওই মধ্যাহ্নভোজ থেকে ৩৫ লাখ ডলার তহবিল সংগ্রহ করা হয়েছিল, যা থেকে বর্তমানে অ্যালবার্ট আইনস্টাইন কলেজ অব মেডিসিন গড়ে তোলা হয়। অতিথি হিসেবে আইনস্টাইন শুধু বলেছিলেন, ‘আমি খুশি যে এটি শেষ হয়েছে।’ এ ঘটনার দুই বছর পর ১৯৫৫ সালের ১৮ এপ্রিল তিনি মারা যান।

আইনস্টাইনের জীবনী

সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ পদার্থবিদ হিসেবে পরিচিত আলবার্ট আইনস্টাইন ছিলেন অত্যন্ত প্রতিভাবান। মাত্র ১২ বছর বয়সেই তিনি মাত্র এক গ্রীষ্মে বীজগণিত এবং ইউক্লিডীয় জ্যামিতি শিখে ফেলেছিলেন। আপেক্ষিকতা তত্ত্ব এবং ভর-শক্তি সমতা সূত্র E = mc2, যাকে প্রায়ই বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত সমীকরণ বলা হয়, বিকাশের জন্য সর্বাধিক পরিচিত।

আইনস্টাইন তাত্ত্বিক পদার্থবিদ্যায় তাঁর অবদান এবং আলোক তড়িৎ প্রভাবের সূত্র আবিষ্কারের জন্য ১৯২১ সালে পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন। তিনি মাত্র ১২ বছর বয়সে পিথাগোরিয়ান উপপাদ্যের নিজস্ব মূল প্রমাণও নিজের চেষ্টায় আবিষ্কার করেছিলেন এবং ১৪ বছর বয়সে ইন্টিগ্রাল ও ডিফারেনশিয়াল ক্যালকুলাসে দক্ষতা অর্জন করেছিলেন। তাঁর জীবদ্দশায় তিনি ১৫০টির বেশি অন্যান্য কাজসহ ৩০০টির বেশি বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছিলেন।

আলবার্ট আইনস্টাইন জার্মানির উলমে আশকেনাজি ইহুদি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা হারমান আইনস্টাইন ছিলেন একজন বিক্রয়কর্মী ও প্রকৌশলী। ১৮৮০ সালে তাঁর পরিবার জার্মানির মিউনিখে চলে আসে। আইনস্টাইন ভাষা ও অন্যান্য বিষয়ে সমস্যায় পড়েন। তাই তিনি স্কুল ছেড়ে দেন। ১৬ বছর বয়সে আইনস্টাইন চুম্বকত্বের বল সম্পর্কে তাঁর প্রথম প্রবন্ধ লেখেন। এ নিবন্ধ তাঁর বাবার উপহার দেওয়া কম্পাস থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি লিখেছিলেন।

১৯০০ সালে আইনস্টাইন তাঁর প্রথম প্রবন্ধ কনক্লুশনস ফ্রম দ্য ক্যাপিলারিটি ফেনোমেনা প্রকাশ করেন। ১৯০৫ সালে তিনি পদার্থবিদ্যায় পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। ওই বছরই তিনি আলোক তড়িৎ প্রভাব, ব্রাউনিয়ান গতি, বিশেষ আপেক্ষিকতা এবং ভর ও শক্তির সমতা সম্পর্কে চারটি যুগান্তকারী প্রবন্ধ প্রকাশ করেন। সেই বছরটি আইনস্টাইনের জন্য ‘অলৌকিক ঘটনা’ হিসেবে পরিচিতি পায়। ১৯২৫ সালে তিনি আপেক্ষিকতা তত্ত্ব এবং কোয়ান্টাম তত্ত্বে অবদানের জন্য রয়্যাল সোসাইটি অব লন্ডনের মর্যাদাপূর্ণ কোপলি পদক লাভ করেন।

১৯০৩ সালের জানুয়ারিতে এই বিজ্ঞানী মিলেভা ম্যারিককে বিয়ে করেন। তবে ম্যারিক এবং আইনস্টাইনের সম্পর্ক স্থায়ী হয়নি। ১৯১৯ সালে তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। আইনস্টাইন মূলত তাঁর চাচাতো বোন এলসার প্রেমে পড়েন। পাঁচ বছর সম্পর্কে থাকার পর আইনস্টাইন ১৯১৯ সালে এলসা লোয়েন্থালকে বিয়ে করেন। এলসা ১৯৩৬ সালে কিডনি রোগে মারা যান। ১৯৯৯ সালে টাইম ম্যাগাজিন তাঁকে ‘পারসন অব দ্য সেঞ্চুরি’ (শতাব্দীর সেরা ব্যক্তিত্ব) হিসেবে অভিহিত করে।

শান্তিকামী আইনস্টাইন

আজীবন শান্তিবাদী বিশ্বাস সত্ত্বেও ১৯৩৯ সালে তিনি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন ডি রুজভেল্টকে একদল বিজ্ঞানীর পক্ষে একটি চিঠি লিখতে সম্মত হন, যাঁরা পারমাণবিক অস্ত্র গবেষণায় যুক্তরাষ্ট্রের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন। অন্যান্য বিজ্ঞানীর মতো তিনি শুধু জার্মানির হাতে এমন অস্ত্র থাকার সম্ভাবনায় ভয় পেয়েছিলেন। অবশ্য তিনি পরবর্তী ম্যানহাটান প্রকল্পে কোনো ভূমিকা পালন করেননি এবং পরে জাপানের বিরুদ্ধে পারমাণবিক বোমা ব্যবহারের নিন্দা জানান।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আইনস্টাইন একটি বিশ্ব সরকার প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান, যা পারমাণবিক প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণ করবে এবং ভবিষ্যতে সশস্ত্র সংঘাত প্রতিরোধ করবে। বিশ্বজুড়ে সম্মানিত ও গ্রহণযোগ্য নাম হিসেবে আইনস্টাইনের নাম ছড়িয়ে পড়েছিল। তিনি ইসরায়েলের নাগরিক না হওয়া সত্ত্বেও দেশটির প্রথম প্রেসিডেন্ট হওয়ার প্রস্তাব পেয়েছিলেন। ইসরায়েলি নেতা চেইম ওয়েজমানের মৃত্যুর পর আইনস্টাইনকে এ পদে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। তবে তিনি এই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেন। কারণ হিসেবে জানান, তার এই পদ ধারণের যোগ্যতা, ইচ্ছা কিংবা ধৈর্য—কোনোটিই নেই।
তবে আইনস্টাইনকে চোখে চোখে রেখেছিল যুক্তরাষ্ট্র। তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জে এডগার হুভারের প্রশাসন আইনস্টাইনের বিষয়ে খুবই সন্দিহান ছিল। বিভিন্ন সামাজিক বিষয়ে সমর্থনের কারণে ১৯৩২ সালের ডিসেম্বর থেকে আইনস্টাইনকে নজরদারিতে রাখে এফবিআই। তারা মনে করত, আইনস্টাইন একজন সমাজতান্ত্রিক অথবা বিদ্রোহী মানসিকতার মানুষ এবং এ কারণে তিনি সামাজিক অবিচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। ফলে তাঁকে এফবিআই বিপজ্জনক মানুষ হিসেবে বিবেচনা করত এবং তাঁর নামে তৈরি করা প্রতিবেদনে পৃষ্ঠার সংখ্যা ১ হাজার ৪০০ ছাড়িয়ে গিয়েছিল।

তথ্যসূত্র: টাইম ম্যাগাজিন

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর ছ ল ন র জন য ন র জন তত ত ব ই বছর

এছাড়াও পড়ুন:

উচ্চশিক্ষার জন্য কেন জার্মানিকে বেছে নেবেন

জার্মানিকে বলা হয় ‘ল্যান্ড অব আইডিয়াস’ অর্থাৎ চিন্তা ও উদ্ভাবনের দেশ। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে জ্ঞান, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিচর্চার অন্যতম তীর্থস্থান এই দেশটি। বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় যুগান্তকারী অবদান রাখা অসংখ্য মহান বিজ্ঞানী ও মনীষীর জন্মভূমি জার্মানি। আলবার্ট আইনস্টাইন, ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক, রবার্ট কখ, ভার্নার হাইজেনবার্গ কিংবা জোহান উলফগ্যাং ফন গ্যোথের মতো বিশ্ববিখ্যাত ব্যক্তিত্বরা এখানকার শিক্ষা ও গবেষণার ঐতিহ্যের সাক্ষী।

আধুনিক বিশ্বের যেসব প্রযুক্তি আজ মানবজীবনকে বদলে দিয়েছে, তার অনেকগুলোর গবেষণা ও উন্নয়নের সূতিকাগারও এই জার্মানি। বিজ্ঞানমনস্ক সমাজ, উদ্ভাবনপ্রিয় সংস্কৃতি এবং শক্তিশালী শিক্ষা অবকাঠামো—সব মিলিয়ে জার্মানি হয়ে উঠেছে আধুনিক জ্ঞানের এক শক্ত ঘাঁটি। তাই নিঃসন্দেহে বলা যায়, উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার স্বপ্ন পূরণের জন্য জার্মানি হতে পারে বিশ্বের যেকোনো শিক্ষার্থীর কাঙ্ক্ষিত গন্তব্য।

এ ক্ষেত্রে প্রথমেই একটি সুখবর হলো, এ দেশের প্রায় ৯০ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে দিতে হয় না কোনো টিউশন ফি। শুধু দিতে হয় সেমিস্টার ফি, যার পরিমাণ ১৫০ থেকে ৪০০ ইউরো, ক্ষেত্রবিশেষে এটা ৫০০ থেকে ৭০০ ইউরো হতে পারে।

তাই ইউরোপে উচ্চশিক্ষার জন্য পৃথিবীজুড়ে স্নাতক-স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের অন্যতম পছন্দ জার্মানি। শিক্ষা ও গবেষণার উন্নত মান, নামমাত্র টিউশন ফি, শিক্ষাবৃত্তির সুবিধাসহ নানা কারণে শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকায় ওপরের দিকে থাকে জার্মানি। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরাও দিন দিন ঝুঁকছেন দেশটিতে শিক্ষা গ্রহণের প্রতি।

জার্মানির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি মাধ্যমে ফার্মেসি, বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং, পলিমার সায়েন্স, ফটো ভোলাটিকস, ইলেকট্রনিকস, মেকাট্রনিকস, জিওলজি ও মাইনিং, পলিটিক্যাল সায়েন্স, অ্যাডভান্সড ম্যাটেরিয়ালস, অ্যাডভান্সড অনকোলজি, কমিউনিকেশন টেকনোলজি, এনার্জি সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, ফিন্যান্স, মলিকিউলার সায়েন্স, পদার্থবিজ্ঞান, গণিত, কম্পিউটার সায়েন্সসহ প্রকৌশল ও জীববিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ে পড়ার সুযোগ আছে। এ ছাড়া রাষ্ট্রনীতি, রাজনীতি, ভাষা, ধর্ম, আইন ইত্যাদি বিষয়েও পড়াশোনার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।

আরও পড়ুনজাপানে উচ্চশিক্ষা ও ক্যারিয়ার গঠনের সুযোগ কেমন১৫ ঘণ্টা আগে

বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রোগ্রাম নির্বাচন

জার্মানিতে প্রায় ৪০০ পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এখানে বিভিন্ন স্তরের ডিগ্রি ও বিষয়ভিত্তিক প্রোগ্রাম পাওয়া যায়। জার্মানিতে উচ্চশিক্ষার জন্য সঠিক বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রোগ্রাম নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে বিভিন্ন ধরনের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যেমন গবেষণামূলক ও তত্ত্বভিত্তিক শিক্ষার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়, ব্যবহারিক ও কর্মমুখী শিক্ষার জন্য কারিগরি বা ব্যবহারিক বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয় এবং সৃজনশীল ও পারফর্মিং আর্টসের জন্য কলা, চলচ্চিত্র ও সংগীত কলেজ।

আরও পড়ুননিউজিল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা ও ক্যারিয়ারের সুযোগ এবং সম্ভাবনা কেমন২৯ অক্টোবর ২০২৫

র‌্যাঙ্কিং যাচাই

টাইমস হায়ার এডুকেশন এবং কিউএস ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র‌্যাঙ্কিং থেকে আপনার প্রোগ্রামের জন্য সেরা বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন করতে পারেন। সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে প্রোগ্রামের কনটেন্ট, ভাষা, ফি এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে পারবেন। জার্মানির সেরা কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্য রয়েছে মিউনিখের লুডভিগ ম্যাক্সিমিলিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়, মিউনিখের প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়, বার্লিনের হুমবোল্ট বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি।

আরও পড়ুনযুক্তরাজ্যে উচ্চশিক্ষার সুযোগ: আবেদন, খরচ ও বৃত্তির খোঁজ১৪ ঘণ্টা আগে

জার্মানিতে স্কলারশিপ

‘ডাড’ হলো জার্মানির সবচেয়ে বড় স্কলারশিপ প্ল্যাটফর্ম। এতে বেসিক সায়েন্স যেমন ফিজিকস, ম্যাথ, কেমিস্ট্রি, বায়োকেমিস্ট্রি, বায়োটেকনোলজি এবং ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ের ওপর স্কলারশিপ বেশি দেওয়া হয়। মেডিকেল বিষয়ে মোটামুটি কম। এ ছাড়া রয়েছে ইরাসমাস-মুন্ডাস স্কলারশিপ, আইনস্টাইন ইন্টারন্যাশনাল ফেলোশিপ, হামবোল্ট রিসার্চ ফেলোশিপ, হেনরিখ বোল স্কলারশিপ ইত্যাদি। স্কলারশিপে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি ফ্রি থাকে। এ ছাড়া রয়েছে ইউনিভার্সিটি বেজড স্কলারশিপ, যেগুলো জার্মান সম্পর্কে জানা এবং জার্মান ল্যাঙ্গুয়েজ লেভেল কতটুকু—তার ওপর নির্ভর করে। তবে ডাডই সবচেয়ে বড় স্কলারশিপ। এ ছাড়া জার্মান একাডেমিক এক্সচেঞ্জ সার্ভিস স্কলারশিপ, ক্যাড জার্মানি রিসার্চ ফেলোশিপ প্রোগ্রাম, গ্যোটে গোজ গ্লোবাল মাস্টার্স স্কলারশিপ, ইমএমএমআইআর আফ্রিকান-ইউরোপিয়ান স্কলারশিপ, ইউনিভার্সিটি অব স্টুটগার্ট স্কলারশিপ, জ্যাকবস ইউনিভার্সিটি ডাইভারসিটি স্কলারশিপ, ক্যাথলিক ইউনিভার্সিটি ইচস্টাট-ইঙ্গোলস্ট্যাড স্কলারশিপ, হ্যামবুর্গ ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপ্লায়েড সায়েন্সেস স্কলারশিপ ও হকস্কুল হফের বাভারিয়ান সরকারি স্কলারশিপ উল্লেখযোগ্য।

আরও পড়ুনহার্ভার্ডের গবেষণা বলছে, মূল্য হারাতে বসেছে ১০ ডিগ্রি২৮ অক্টোবর ২০২৫

ক্যারিয়ার ও গবেষণার সুযোগ

জার্মানি শুধু শিক্ষার জন্য নয়, ক্যারিয়ারের দিক থেকেও আকর্ষণীয়। দেশটির শক্তিশালী শিল্পখাত—বিশেষত অটোমোবাইল, ইঞ্জিনিয়ারিং, বায়োটেক ও তথ্যপ্রযুক্তি নতুন গ্র্যাজুয়েটদের জন্য অফুরন্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে। পড়াশোনা শেষে শিক্ষার্থীরা সেখানে থেকে কাজের অনুমতি বা ‘পোস্ট স্টাডি ওয়ার্ক ভিসা’ পাওয়ার সুযোগও পান।

জীবনযাপন ও নিরাপত্তা

বিশ্বের অন্যতম আধুনিক শহর, পরিচ্ছন্ন পরিবেশ, দক্ষ পরিবহনব্যবস্থা এবং শিক্ষার্থীবান্ধব নীতিমালার কারণে জার্মানিতে জীবনযাপন অনেক স্বাচ্ছন্দ্যময়। পাশাপাশি দেশটির সমৃদ্ধ সংস্কৃতি, সংগীত, সাহিত্য ও স্থাপত্য শিক্ষার্থীদের জন্য এক অনন্য অভিজ্ঞতা এনে দেয়।

যাঁরা আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা, গবেষণার সুযোগ ও ক্যারিয়ারের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ একসঙ্গে খুঁজছেন—তাঁদের জন্য জার্মানি হতে পারে সেরা গন্তব্য। কম খরচে উচ্চমানের শিক্ষা, প্রযুক্তিনির্ভর পাঠক্রম ও বৈচিত্র্যময় অভিজ্ঞতা—সব মিলিয়ে জার্মানি এখন শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে।

আরও পড়ুনবিদেশে উচ্চশিক্ষার পাশাপাশি কাজের সুযোগ২৮ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • উচ্চশিক্ষার জন্য কেন জার্মানিকে বেছে নেবেন