কলকাতায় দোল উৎসবে ডেকে এনে তৃণমূলের ছাত্রনেতাকে হত্যা
Published: 14th, March 2025 GMT
পশ্চিমবঙ্গে কলকাতার উপকণ্ঠ উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহে আজ শুক্রবার দোল উৎসবে ডেকে এনে তৃণমূলের এক ছাত্রনেতাকে ক্ষুরের আঘাতে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহত ছাত্রনেতার নাম অমর চৌধুরী। তিনি তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পবন রাজভর নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অন্যদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
আজ দুপুরে যখন দোল উৎসবের আনন্দে রং নিয়ে খড়দহে জয়শ্রী কেমিক্যালসের সামনে সবাই হোলি উৎসবে মেতে উঠেছিলেন, তখনই খুন হন অমর চৌধুরী ওরফে আকাশ চৌধুরী। দোল খেলতে তাঁকে ডেকে আনা হয়েছিল। একপর্যায়ে তাঁকে মারধর করা হয়। পরে ক্ষুরের আঘাতে তাঁকে মারা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
রক্তাক্ত অবস্থায় অমর চৌধুরীকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হলে বিকেলেই তাঁকে কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্মরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃতের ঘাড়ের কাছে গভীর ক্ষত রয়েছে। ময়নাতদন্তে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
জানা গেছে, হত্যাকারীরা মোটরসাইকেলে চড়ে ঘটনাস্থলে আসে। এর মধ্যে পবন রাজভর নামের এক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কানাইয়া নামের অপর এক যুবককে ধরতে চেষ্টা করছে পুলিশ। পবন রাজভর সম্প্রতি কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত হয়েই এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন।
অমর চৌধুরীর পরিবারের দাবি, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তিন ব্যক্তি জড়িত। পুলিশ পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু করেছে।
পুলিশের ধারণা, পূর্বশত্রুতার জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। নিহত অমর চৌধুরী স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর বিকাশ সিংহের ঘনিষ্ঠ ছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অমর চ ধ র
এছাড়াও পড়ুন:
ভালো ফলনের আশায় গাছকে খাওয়ান তাঁরা
চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পাহাড়ি প্রদেশ গুইঝৌতে প্রাচীনকাল থেকে ‘গেলাও’ জনগোষ্ঠীর বসবাস। ভিয়েতনামেও এই জনগোষ্ঠীর মানুষ বাস করেন। চীনে তাঁদের সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ ৭৭ হাজার।
কৃষিনির্ভর গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা আজও প্রাচীনকালের পুরোনো এক ঐতিহ্য আগলে রেখেছেন। বছরের নির্দিষ্ট দিনে তাঁরা গাছকে খাওয়ান, যা চীনা ভাষায় ‘ওয়েই শু’ রীতি নামে পরিচিত।
এই প্রাচীন রীতি মূলত একধরনের প্রার্থনা। স্থানীয় অধিবাসীদের বিশ্বাস, এতে প্রকৃতি তুষ্ট হয়, ফসল ভালো হয়, পরিবারে শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে। প্রতিবছর দুটি উৎসবের সময় এই অনুষ্ঠান পালন করা হয়—চীনা নববর্ষে, যা বসন্ত উৎসব নামে পরিচিত। আর গেলাও নববর্ষে, যা চান্দ্র পঞ্জিকার তৃতীয় মাসের তৃতীয় দিনে পালিত হয়।
অনুষ্ঠানের দিন সকালে আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসী পাহাড়ের ঢালে জড়ো হন। তাঁরা সঙ্গে করে চাল থেকে তৈরি মদ, শূকরের মাংস, মাছ ও লাল আঠালো চাল নিয়ে আসেন। পাহাড়ে পৌঁছে প্রথমে আতশবাজি পোড়ানো হয়। এতে করে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
এর মধ্যেই একটি পুরোনো ও শক্তিশালী গাছ বাছাই করা হয়। এরপর সবাই ধূপ জ্বালিয়ে নতজানু হয়ে প্রার্থনা করেন। সবশেষে মূল পর্ব ‘গাছকে খাওয়ানো’ শুরু হয়।
একজন কুঠার বা ছুরি দিয়ে গাছে তিনটি জায়গায় ছোট করে কেটে দেন। সেই ক্ষতস্থানে চাল, মাংস ও মদ ঢেলে দেওয়া হয়, যাতে গাছ তাঁদের দেওয়া ভোগ গ্রহণ করতে পারে। পরে ওই জায়গা লাল কাগজে মুড়ে দেওয়া হয়।
এ ছাড়া গাছের গোড়া ঘিরে আগাছা পরিষ্কার করা হয়, মাটি আলগা করে দেওয়া হয়। এতে নতুন জীবনের বার্তা মেলে বলে মনে করেন গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা।
যে গাছকে খাওয়ানো হয়, সেটি যদি ফলদ হয়, তাহলে ভোগ দানকারীরা একটি আশাব্যঞ্জক শ্লোক উচ্চারণ করেন। বলেন, ‘তোমায় চাল খাওয়াই, ফল দিয়ো গুচ্ছ গুচ্ছ; তোমায় মাংস খাওয়াই, ফল দিয়ো দলা দলা।’