নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার কুতুবপুরে পাগলা বাজার এলাকায় দেশের সকল ধর্ষণের বিচার ও ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে এক বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) জুমার নামাজের পর পাগলা বাজার জামে মসজিদের সামনে থেকে সর্বজনীন ঐক্য ফোরামের ব্যানারে এই বিক্ষোভ শুরু হয়। সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি এম সোহাগ হোসাইন এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মাদ সাজ্জাদ হোসেন শাওন।

সমাবেশ শেষে কুতুবপুরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে সংগঠনের নেতাকর্মীরা মিছিল করেন। এতে সর্বজনীন ঐক্য ফোরামের উপদেষ্টাগণ, কুতুবপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় জনগণ অংশ নেন।

বক্তারা বলেন, দেশে ধর্ষণের ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। ন্যায়বিচার নিশ্চিত না হওয়ায় অপরাধীরা বারবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি করছে। যদি অতীতের ধর্ষণের ঘটনার সঠিক বিচার হতো, তবে আজ বাংলাদেশকে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হতো না। তারা সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করেন এবং আইন উপদেষ্টা ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি জানান।

সর্বজনীন ঐক্য ফোরামের সভাপতি এম সোহাগ হোসাইন তার বক্তব্যে বলেন, বাংলার মাটিতে কোনো ধর্ষকের ঠাঁই হবে না। ধর্ষণের বিরুদ্ধে নতুন আইন করে প্রকাশ্যে ফাঁসির বিধান চালু করতে হবে এবং দ্রুত বিচার সম্পন্ন করতে হবে। অন্যথায় আরও কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন সর্বজনীন ঐক্য ফোরামের উপদেষ্টা মাজহারুল আলম মিথুন, আনোয়ার হোসেন জিহাদি, হাসান শরীফ, মহিউদ্দিন খানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। এছাড়া সংগঠনের সিনিয়র সভাপতি শফিকুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক নাজমুল হুদা, সাংগঠনিক সম্পাদক আফফান, প্রচার সম্পাদক ফাহিমসহ অন্যান্য দায়িত্বশীল নেতারা অংশ নেন।

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ উপদ ষ ট স গঠন র

এছাড়াও পড়ুন:

একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা

হবিগঞ্জে ছোট-বড় মিলেয়ে চা বাগানের সংখ্যা প্রায় ৪১টি। এসব বাগানের বাসিন্দা প্রায় দেড় লাখ। এর মধ্যে, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ৩২ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ চা পাতা উত্তোলনে জড়িত।

চা বাগানে একজন শ্রমিককে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়। এর বিনিময়ে মজুরি পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো বাগানে নিয়মিত এই মজুরিও দেওয়া হয় না।

শ্রমিকদের দাবি, দৈনিক মজুরি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করতে হবে। বর্তমানে যে মজুরি পাওয়া যায় তা দিয়ে সংসার চলে না। প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সেই সঙ্গে চা শ্রমিকদের নৈমিত্তিক ছুটির ব্যবস্থা করতে হবে।

আরো পড়ুন:

বৈষম্য কেন? নারী শ্রমিকেরা পান না সমান মজুরি

ধান কাটায় আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার, পেশা বদলাচ্ছেন কৃষি শ্রমিকেরা

সরেজমিনে কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিকরা ছোট্ট কুঠুরিতে গাদাগাদি করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসবাস করেন। পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, দু-বেলা পেটভরে খেতে পারেন না।

শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘‘দুই বছর অন্তর চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি ও সমস্যা নিয়ে চা বাগান মালিক পক্ষের সংগঠনের সঙ্গে চা শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিনিধির বৈঠক হয়। সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে বৈঠক হয়েছে। সে সময় ৮ টাকা ৫০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়ে মজুরি ১৭৮ টাকা ৫০ নির্ধারিত হয়েছে।’’

শ্রমিকদের কষ্টের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এই টাকায় চলা যায় না। দেশের কোথাও এতো সস্তা শ্রমের দাম নেই। বর্তমানে একজন কৃষিশ্রমিক দিনে ৫০০-১০০০ টাকা আয় করেন, একজন  রিকশাচালকের প্রতিদিনের আয় ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। সেখানে একজন চা শ্রমিক পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। এজন্য তাকে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়।’’

চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে নাটক ও গানের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসা জেলার চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘দৈনিক ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা মজুরিতে শ্রমিকদের চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। অচিরেই মজুরি ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হোক। এছাড়া, শ্রমিকদের আরো সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’’

ঢাকা/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ