ফরিদপুরে শিশুকে যৌন হয়রানির অভিযোগে এক ব্যবসায়ীকে (৫৮) তাঁর দোকানে ঘেরাও করে রাখেন এলাকাবাসী। একপর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে তাঁরা ওই ব্যবসায়ীকে পিটুনি দেন। খবর পেয়ে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। ফরিদপুর সদরের ডিক্রির চর ইউনিয়নের সিঅ্যান্ডবি ঘাট এলাকায় গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সিঅ্যান্ডবি ঘাট এলাকায় নদীবন্দরে দীর্ঘদিন ধরে কার্গো ও ডর্ক ইয়ার্ডের ব্যবসা করে আসছেন অভিযুক্ত ওই ব্যবসায়ী। গতকাল বিকেলে সিঅ্যান্ডবি–সংলগ্ন এলাকায় ১০-১১ বছরের দুটি শিশুকে ডেকে নিয়ে নিজের মুঠোফোনে অশ্লীল ভিডিও দেখান ওই ব্যবসায়ী। এ সময় তিনি শিশুদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাত দেন।

পরে বাড়িতে গিয়ে শিশু দুটি তাদের পরিবারের সদস্যদের কাছে ওই ঘটনার কথা জানায়। রাত সাড়ে ১০টার দিকে পরিবারের সদস্যরা ও এলাকাবাসী ওই ব্যবসায়ীর তেলের দোকানে অবরুদ্ধ করে রাখেন। এ সময় উত্তেজিত জনতা ওই ব্যবসায়ীকে পিটুনি দেন। খবর পেয়ে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানা-পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ওই ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন।

ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.

আসাদউজ্জামান জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সেনাবাহিনীর সহায়তায় ওই ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পুলিশ-সেনাবাহিনীর সদস্যরা সেখানে যাওয়ার আগেই উত্তেজিত জনতা তাঁকে মারধর করেন। এতে তিনি কিছুটা আহত হয়েছেন। শিশু দুটির পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দেওয়া হলে এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র সদস

এছাড়াও পড়ুন:

অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ

দীর্ঘ ৯ মাস পর শনিবার থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু প্রথম দিন কোনো জাহাজ সেন্ট মার্টিনে না যাওয়ার কারণে পর্যটকেরা দ্বীপে যেতে পারেননি। হাজারো পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। অন্যদিকে জাহাজমালিকেরা বলছেন, সরকারের বিভিন্ন শর্তের কারণে পর্যটকদের আগ্রহ না থাকায় জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্বীপটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলে সরকারের কোনো বাধা নেই। লিখিতভাবে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে দিনে গিয়ে দিনেই চলে আসতে হবে; রাতে থাকা যাবে না।

এদিকে রাতে থাকার সুযোগ না থাকায় পর্যটকেরা যেতে আগ্রহী হচ্ছেন না। কারণ, দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করে দ্বীপে গিয়ে আবার সেদিনই চলে আসতে হবে। এ কারণে জাহাজমালিকেরাও জাহাজ চালাতে অনীহা প্রকাশ করছেন। তাঁদের দাবি, দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত বাস্তবসম্মত নয়।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, জাহাজমালিকেরা যদি জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখেন, সেটা তাঁদের ব্যাপার। সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২টি নির্দেশনা এবার কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে জেলা প্রশাসন।

শাহিদুল আলম বলেন, আগে টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও নিরাপত্তার কারণে এখন কক্সবাজার শহর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াত করবে।

সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে জাহাজ ছেড়ে গেলে সেন্ট মার্টিন পৌঁছাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে পর্যটকেরা কিছুই ঘুরে দেখতে পারবেন না। দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি ব্যবসার জন্যও তা অলাভজনক। এ কারণেই অনেক পর্যটক সেন্ট মার্টিন যেতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।

হোসাইন ইসলাম আরও বলেন, রাতযাপন করার সুযোগ না থাকলে সেন্ট মার্টিনের পর্যটন মৌসুম জমে না। পর্যটকেরা রাতের সৈকত দেখতে চান, ঢেউয়ের শব্দ শুনতে চান। সেটাই তো সেন্ট মার্টিনের আসল আকর্ষণ।

পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে। এ লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনসেন্ট মার্টিনে নিষেধাজ্ঞা উঠছে কাল, তবে জাহাজ চলবে কি৩১ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ