ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় মাইক্রোবাসের শ্রমিকদের হামলায় তিন ছাত্র আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একজন নিজেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সরাইল উপজেলার প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। গতকাল রোববার রাত ১০টার দিকে উপজেলা সদরের হাসপাতাল মোড় এলাকায় হামলার ঘটনা ঘটে। এতে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ছয়জনকে আটক করেছে।

হামলায় আহতরা হলেন ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইরফান খান (২২), সরাইল সরকারি কলেজের ছাত্র আরিফ মোহাম্মদ নাঈম (২০) ও মোহাম্মদ মোজাম্মেল (২০)। তাঁরা সবাই সরাইল উপজেলা সদরের সৈয়দটুলা গ্রামের বাসিন্দা।

এ ঘটনায় ইরফান খান বাদী হয়ে দ্রুত বিচার আইনে সরাইল থানায় মামলা করেছেন। মামলায় ১৩ জনের নাম উল্লেখ ও ৮ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। এজাহারে নিজেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সরাইল উপজেলার প্রধান সমন্বয়কারী পরিচয় দিয়েছেন ইরফান। নাঈম ও মোজাম্মেলকে আন্দোলনে নিজের সহযোদ্ধা হিসেবে উল্লেখ করেছেন তিনি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত নয়টার দিকে মোটরসাইকেল নিয়ে উপজেলা সদরের সৈয়দটুলা গ্রামের পারভেজ মিয়া (৩৩) ও রাজীব মিয়া (২৫) নামে দুজন সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই আঞ্চলিক মহাসড়কের ধরন্তী এলাকা অতিক্রম করছিলেন। এ সময় পেছন দিক থেকে একটি মাইক্রোবাস তাঁদের মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেয়। এতে তাঁরা আহত হন। বিষয়টি তাঁরা উপজেলা সদরের কয়েকজনকে অবহিত করেন। পরে স্থানীয় লোকজন উপজেলা সদরের হাসপাতাল মোড়ে গিয়ে মাইক্রোবাসটিকে চিহ্নিত করেন। বিষয়টি জানতে মাইক্রোবাস স্ট্যান্ডে যান ইরফান খানসহ তিন ছাত্র। সেখানে মাইক্রোবাস স্ট্যান্ডের শ্রমিক-মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল মিয়া ও চালক ভাবন মিয়ার সঙ্গে এই তিন ছাত্রের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। এ সময় কয়েকজন শ্রমিক ছাত্রদের মারধর করেন এবং ইট দিয়ে আঘাত করেন। এতে তাঁরা গুরুতর আহত হন। তাঁদের উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ইরফান খানের বাবা সরাইল উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক উছমান খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ছেলেসহ তিনজন বিষয়টি জানতে সেখানে গিয়েছিল। সেখানে তাদের মারধর করে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করেছে মাইক্রোবাস স্ট্যান্ডের লোকজন। ওই সময়ে ছাত্রদের ব্যবহৃত মুঠোফোনের সেট ও টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে শ্রমিকেরা।’

অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে মাইক্রোবাস স্ট্যান্ডের শ্রমিক-মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল মিয়ার মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও তিনি সাড়া দেননি।
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

রফিকুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, মাইক্রোবাস স্ট্যান্ডের লোকজন ছাত্রদের মারধর করেছে। পরে তারা নিজেরাই একটি মাইক্রোবাসের কাচ ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় ভাবন মিয়াসহ ছয়জনকে আটক করা হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইরফ ন খ ন সদর র

এছাড়াও পড়ুন:

জকসুসহ তিন দফা দাবি মেনে নিল প্রশাসন, ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন শিক্ষার্থীরা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা ও সম্পূরক বৃত্তিসহ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি মেনে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের আশ্বাসে ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভেঙে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

বুধবার রাত দশটার দিকে প্রশাসনের পক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিলে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় অনশনরত শিক্ষার্থীদের ফলের রস খাইয়ে অনশন ভাঙানো হয়। শিক্ষার্থীদের অনশন ভঙ্গ করান করান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক ও সিন্ডিকেট সদস্য বিলাল হোসাইন।

এর আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক শেখ গিয়াসউদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী ২৭ নভেম্বর জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই মোতাবেক নির্বাচনের রূপরেখাও ঘোষণা করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আগামী জানুয়ারি থেকে আবাসন ভাতা পাবেন শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে বৃত্তির জন্য উপযুক্ত শিক্ষার্থীদের নভেম্বরের মধ্যে যাচাই-বাছাই করার কাজ শেষ করা হবে।

অনশনকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী ২৭ নভেম্বরের আগেই কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপন করা হবে। ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের মানোন্নয়নে প্রশাসন কাজ করবে।

আরও পড়ুনতিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৪ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ১২ ঘণ্টা আগে

এ সময় অনশনে বসা উদ্ভিদ বিজ্ঞানের বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব বলেন, আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। জকসুর রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছে। আবাসন ভাতার জন্য প্রতিশ্রুত সময়ও দিয়েছে প্রশাসন। কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এ কারণে আমরা অনশন ভেঙে আন্দোলন প্রত্যাহার করেছি।

সতর্ক করে দিয়ে এ কে এম রাকিব আরও বলেন, যদি প্রশাসন ঘোষিত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবিগুলো পূরণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সমস্ত দায় মাথায় নিয়ে সম্পূর্ণ প্রশাসনকে পদত্যাগ করতে হবে।

এর আগে তিন দফা দাবি আদায়ে গত মঙ্গলবার বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেন চারজন শিক্ষার্থী। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) পক্ষ থেকে অনশন কর্মসূচি শুরুর কথা জানানো হয়। অনশনে বসা চার শিক্ষার্থীর মধ্যে তিনজন বাগছাসের নেতা।

আরও পড়ুনজকসু নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা, ভোট ২৭ নভেম্বর২ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ