টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে র‌্যাব পরিচয়ে চাঁদা নিতে এসে হানিফ খান ওরফে সোহেল রানা (৪৫) নামে অবসরপ্রাপ্ত এক আনসার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার রাতে উপজেলার তরফপুর ইউনিয়নের চকবাজার এলাকায় থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। হানিফ বাসাইল উপজেলার হাবলা উত্তরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, হানিফ মির্জাপুরের তরফপুর চকবাজার এলাকায় একটি গুম ও হত্যা মামলার তদন্তের নাম করে রোববার সেখানে যান। একপর্যায়ে তিনি কৌশলে আসামির কাছে চাঁদা দাবি করেন। তিনি ২ লাখ টাকায় মামলা নিষ্পত্তির প্রতিশ্রুতি দেন। তার কথাবার্তা এবং আচরণে সন্দেহ হলে স্থানীয় লোকজন পরিচয় জানতে চান। 

প্রথমে হানিফ নিজেকে টাঙ্গাইল র‌্যাব-১৪ এর সদস্য বলে জানালেও পরে অবসরপ্রাপ্ত আনসার সদস্য বলে স্বীকার করেন। তাঁর সঙ্গে থাকা পরিচয়পত্র দেখে তাঁর পরিচয় নিশ্চিত হয়ে স্থানীয় জনতা তাঁকে আটকে রাখেন। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে মানুষের ভিড় জমে যায়। এক এক করে তাঁর অপকর্ম প্রকাশ হতে থাকে।

হানিফ আগেও এলাকায় নিজেকে র‌্যাব, পিবিআই ও সেনা সদস্য পরিচয় দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। পুলিশের চাকরি দেওয়া, পাওনা টাকা তুলে দেওয়াসহ বিভিন্ন কাজের কথা বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে জানান ভুক্তভোগীরা। খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাঁকে গ্রেপ্তার করে।

তরফপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান সাঈদ আনোয়ার বলেন, কয়েকদিন আগে অবসরপ্রাপ্ত এ আনসার সদস্য র‌্যাব পরিচয় দিয়ে মোবাইল ফোনে স্থানীয় কয়েকজনের কাছে টাকা দাবি করেন। রোববার টাকা দেওয়ার কথা বলে কৌশলে তাঁকে এলাকায় আনা হয়। তাঁকে আটকে পুলিশে দেওয়া হয়েছে।

এ ঘটনায় হানিফ খানসহ দুজনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতপরিচয় দুই-তিন জনকে আসামি করে মির্জাপুর থানায় মামলা করেছেন টাকিয়া কদমা গ্রামের ভুক্তভোগী আমিনুর সিকদার। 

মির্জাপুর থানার ওসি মো.

মোশারফ হোসেন বলেন, জনতার হাতে আটক র‌্যাব সদস্য পরিচয় দেওয়া হানিফের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। সোমবার তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আনস র সদস য গ র প ত র কর এল ক য়

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ