অনৈক্য-সংঘাতে ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থান ঘটলে তা হবে দুঃখজনক: এবি পার্টি
Published: 18th, March 2025 GMT
আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, এত দিন যারা নিপীড়িত ও অত্যাচারে জর্জরিত ছিল, এখন তাদের অনৈক্য ও সংঘাতে ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থান ঘটলে তা খুবই দুঃখজনক হবে। একই সঙ্গে তাতে হাজারো মানুষের বিশ্বাস ভঙ্গ হবে।
মজিবুর রহমান বলেন, সংস্কারের মহৎ উদ্যোগগুলোকে ত্বরান্বিত করা এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে দেশকে পুনর্গঠনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার, রাজনৈতিক দল, নাগরিক এবং বিপ্লবী ছাত্রসমাজকে ঐকমত্যে পৌঁছাতে হবে।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে আয়োজিত আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির ইফতার মাহফিলে স্বাগত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দেশের শীর্ষ রাজনীতিবিদ, ঢাকায় কর্মরত বিদেশি কূটনীতিক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সম্মানে এ ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে দলটি। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন দলের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ।
বিগত আওয়ামী সরকারের সময় ইফতার বা কোনো অনুষ্ঠান আয়োজন করতে হলে গোয়েন্দা বাহিনীর কাছে অতিথিদের তালিকা দিতে হতো জানিয়ে এবি পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, এবার তা হয়নি। বিগত সময়ে কোনো আয়োজন করলেও গোয়েন্দা সংস্থার লোকেরা ছবি তুলে নিয়ে যেত।
মজিবুর রহমান বলেন, ‘আমাদের পূর্বপুরুষদের খুব বেশি চাওয়া ছিল না, সাম্য, মানবিক মর্যাদা আর সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার সামান্য চাওয়া ছিল তাদের। সে চাওয়া পূরণ করতে তাদের বারবার লড়াই করতে হয়েছে, সংগ্রাম করতে হয়েছে। ’২৪–এর এ লড়াই যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে তা হবে আমাদের সবার জন্যই দুঃখজনক।’
এবি পার্টির পথচলা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আপনাদের চোখের সামনেই আমাদের যাত্রা শুরু এবং আপনাদের সামনেই আমরা এক পা, এক পা করে এগিয়ে যাচ্ছি। আপনাদের ভালোবাসা নিয়ে আমরা এগিয়ে যেতে চাই।’
ইফতার অনুষ্ঠানে অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহ উদ্দিন আহমদ ও ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, ১২–দলীয় জোটের প্রধান ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আকতার হোসেন, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনীম জারা, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আব্দুল কাদের, এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানা, এলডিপি মহাসচিব রেদোয়ান আহমদ, গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খান, এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান, গণফোরাম সভাপতি মোস্তফা মহসিন মন্টুসহ অনেকে।
রাজনীতিবিদদের পাশাপাশি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশে অবস্থানরত বিভিন্ন দূতাবাস ও হাইকমিশনের কূটনীতিকেরাও। তাঁদের মধ্যে ছিলেন সুইস রাষ্ট্রদূত এইচ ই রেটো রেংগালী, কোরিয়ান রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়াং সিক, পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত এইচ ই সায়েদ মারুফ। আরও ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জামার্নি, অস্ট্রেলিয়া, চীন, মালয়েশিয়া, নেদারল্যান্ডস, কানাডা, জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা।
বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে ছিলেন সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী দিলারা চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য মামুন আহমেদ, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মোজাহেরুল হক, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ, দৈনিক যুগান্তর সম্পাদক আব্দুল হাই শিকদার, দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আব্দুল্লাহ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নকীব মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন র রহম ন ইফত র
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’
তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’
অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’
পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’
আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’
ঢাকা/আসাদ/রাজীব