ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়া ইউনিয়নের আব্দুল্লাহপুরে করেরগাঁও এলাকায় একটি অবৈধ সিসা কারখানায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এই অভিযানে কারখানা মালিককে দুই লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়।

শনিবার (২২ মার্চ) দুপুরে কেরানীগঞ্জ রাজস্ব সার্কেল (দক্ষিণ) সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে এই ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করা হয়।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে এসব সিসা গলানোর কারাখানা। এসব কারখানায় নষ্ট ও বাতিল ব্যাটারি এবং পুরনো লোহার বর্জ্য গলানো হতো। বর্জ্য গলানোর সময় এতে ক্ষতিকারক ধোঁয়ায় ক্ষতি হয় স্থানীয় মানুষের। দূষিত হয় চারপাশের পরিবেশ, নষ্ট হয় ফসল ও জমি। পাশাপাশি এখানে কর্মরত কর্মচারীরাও মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে থাকে। শুধু তাই-ই নয়, সিসা কারখানার আশপাশে জন্মানো ঘাস খেয়ে হুমকির মুখে পড়ড়ে গবাদি পশুও। 

তিনি বলেন, “প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে দীর্ঘ সময় থেকে চলে আসছে এই সব কারখানা। এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে কারখানাটিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করে কারখানার মালিককে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। যেখানেই অবৈধ কারখানা গড়ে উঠবে সেখানেই ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করা হবে।”

ঢাকা/শিপন/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না

মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।

আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।

বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’

এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।

জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।

গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্‌স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ