লক্ষ্মীপুরে ক্রেতার পছন্দ দেশি পোশাক
Published: 22nd, March 2025 GMT
লক্ষ্মীপুরে ক্রেতার প্রথম পছন্দ দেশি পোশাক। তাদের কথা, বিদেশি পোশাকের দাম বেশি, মানও আহামরি কিছু নয়। বিত্তবানদের ঝোঁক ঠিকই বাইরের পোশাকের দিকে। তারা ঘুরছেন সারারা, গারারার পেছনে।
সরেজমিন লক্ষ্মীপুর পৌর হকার্স মার্কেট, আউট লুক, মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট, পৌর সুপারমার্কেট, মেগা গ্যালারি, বুটিক হাউস, রামগঞ্জ জিয়া কমপ্লেক্স, রায়পুরের গাজী কমপ্লেক্স, হায়দরগঞ্জ গাজী মার্কেটে ক্রেতার ভিড় দেখা গেছে।
লক্ষ্মীপুর পৌর বণিক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল আজিজ বলেন, ‘এবার বাজার পরিস্থিতি অনেক ভালো।’
ঈদে মেয়েদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে পাকিস্তানি সুতির থ্রি পিস, সারারা, গারারা। এসব পোশাক কিনতে বেশি ভিড় দেখা গেছে লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের ওয়েলকাম ও অঙ্গশোভা মার্কেটে। নারী ক্রেতার সমাগম বেশি। রায়পুর বামনী এলাকার বাসিন্দা স্কুলশিক্ষিকা তাসলিমা আক্তার বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় থ্রি পিসের দাম প্রায় দ্বিগুণ। গত বছর যে থ্রি পিসের দাম দুই হাজার টাকা ছিল এ বছর তা তিন থেকে সাড়ে তিন হাজারে ঠেকেছে। শাড়ির দামও কিছুটা বেড়েছে।’ হাউজিং এলাকার বাসিন্দা সৌদি প্রবাসী সেকান্তর মিয়া তাঁর চার মেয়েকে নিয়ে এসেছেন পৌর মার্কেটে। তিনি বলেন, ‘মার্কেটে অনেক ভিড়। সব জিনিসের দাম বেশি।’
একই মার্কেটে কথা হয় স্কুলশিক্ষিকা নুর নাহার বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘৫০ হাজার টাকা নিয়ে এসেছি শপিং করতে। তিন মেয়ে, এক ছেলেসহ আর আমার জামা কেনাতেই সব টাকা শেষ। জুতা কিনতে পারিনি।’ সদর উপজেলার হাটবাজার মার্কেটের ক্রেতা ফখর উদ্দিন, সাজু বেগম ও নুর নাহার আক্তার জানান, গত বছরের তুলনায় এবার পোশাকের কালেকশন ভালো। তবে দামও বেশি।
চরলরেঞ্চ বাজারের চমক টেইলার্স অ্যান্ড ক্লথ স্টোরের স্বত্বাধিকারী মাকছুদুর রহমান জানান, এখন দোকানের কারিগররা দিন-রাত সমানে কাজ করছেন। সবচেয়ে বেশি সেলাই হচ্ছে বোরকা ও থ্রি পিস। ফ্রেন্ড মার্টের ম্যানেজার আরজু মোল্লাহ্ বলেন, ‘সাধারণত শবেবরাতের পর থেকেই আমাদের ঈদের বিক্রি শুরু হয়। এ বছর একটু দেরিতে শুরু হয়েছে। ঈদের সময় যত ঘনিয়ে আসবে বিক্রির পরিমাণ তত বাড়বে।’
ফুটপাতের বিক্রেতা আজাদ, সাদ্দাম, মফিজ সরদার বলেন, ‘শিশুদের পোশাক বেশি চলছে। মার্কেটে যে পোশাকের দাম ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকা, সেটি ফুটপাতে ৫০০-৭০০ টাকায় মিলছে।’
ঈদবাজারে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার। তিনি বলেন, ‘জেলা প্রশাসন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ অনেক প্রতিষ্ঠান মাঠে কাজ করছে। দাম বেশি নেওয়ার অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
শ্রমিকের সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত ও নিপীড়ন বন্ধের দাবি সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের
গণতান্ত্রিক শ্রম আইন, শ্রমিকের সামাজিক সুরক্ষা, ন্যায্য মজুরি, অবাধ ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার নিশ্চিত ও শ্রমিক নিপীড়ন বন্ধের দাবিতে সমাবেশ ও মিছিল করেছে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট। একই সঙ্গে তারা বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেপ্তারকৃত শ্রমিকনেতাদের মুক্তির দাবিও জানায়।
মে দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়।
সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন দলটির সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জুলফিকার আলী, আইনবিষয়ক সম্পাদক বিমল চন্দ্র সাহা, নির্বাহী সদস্য আফজাল হোসেন, নির্বাহী সদস্য ও বোম্বে সুইটস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রতন মিয়া প্রমুখ।
সমাবেশে নেতারা বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন করার চেষ্টার অপরাধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দিয়ে গার্মেন্টস উইংয়ের সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, রবিনটেক্স শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সীমা আক্তারসহ ৭ জনকে নারায়ণগঞ্জ কারাগারে এবং রিকশা শ্রমিকদের রুটি–রুজির আন্দোলনে সংহতি জানানোর অপরাধে চট্টগ্রামে রিকশা সংগ্রাম পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি আল কাদেরি জয়, মিরাজ উদ্দিন ও রোকন উদ্দিনকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। অথচ সরকার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, তারা শ্রমক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক শ্রমমান বাস্তবায়ন করবে।
এ সময় নেতারা শ্রম সম্পর্ক উন্নয়নে সরকারের প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত হচ্ছে কি না, তা জানতে চান। তাঁরা বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করার অধিকার চর্চায় বাধা দেওয়া বন্ধ না হলে, শ্রমিকের ওপর নিপীড়ন বন্ধ না হলে অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র পরিচালনা বা বৈষম্য নিরসনের প্রতিশ্রুতি শ্রমজীবী মানুষের কাছে প্রতারণা হিসেবে পরিগণিত হবে।
মে দিবসের ইতিহাস তুলে ধরে নেতারা আরও বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও দেশের শ্রমজীবী মানুষের ৮৫ শতাংশ শ্রম আইনের সুরক্ষার বাইরে। শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের শ্রম খাতের দুর্দশার যে ভয়ানক চিত্র ফুটে উঠেছে, তা প্রমাণ করে স্বাধীনতা–পরবতী প্রতিটি সরকার শ্রম শোষণকে তীব্র থেকে তীব্রতর করার ক্ষেত্র তৈরি করেছে।
এ সময় গ্রেপ্তার সব শ্রমিকের মুক্তি, শ্রমিক নিপীড়ন বন্ধ এবং মে দিবসের প্রকৃত চেতনায় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের নেতারা।