যুদ্ধবিরতি ভেঙে লেবাননে ইসরায়েলের হামলা, নিহত ৮
Published: 23rd, March 2025 GMT
যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে লেবাননে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। শনিবার দক্ষিণ লেবাননের বিভিন্ন এলাকায় চালানো এ হামলায় দুই শিশুসহ অন্তত ৮ জন নিহত হয়েছেন।
এক বছর ধরে ইসরায়েলি বাহিনী এবং লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর মধ্যে চলা সংঘাতের পর গত নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। তবে সেই চুক্তির পর এবারই প্রথমবার লেবাননে হামলা চালাল ইসরায়েল।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর দাবি, শনিবার সকালে লেবানন থেকে ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ছয়টি রকেট ছোড়া হয়। এর মধ্যে তিনটি সীমান্ত অতিক্রম করে ইসরায়েলে প্রবেশ করে। রকেট হামলার জবাবে ইসরায়েল হিজবুল্লাহর ঘাঁটি লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে।
তবে হিজবুল্লাহ রকেট হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। গোষ্ঠীটির দাবি, তারা যুদ্ধবিরতি মেনে চলছে এবং ইসরায়েলে কোনো হামলা চালায়নি। শনিবারের রকেট হামলার দায় স্বীকার করেনি কোনো সশস্ত্র গোষ্ঠী।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দক্ষিণাঞ্চলের বিনত্ জাবেলি ও তুলিনে ইসরায়েলি হামলায় তিনজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া বন্দরনগরী টায়ারে পাঁচজনের প্রাণহানি হয়েছে। নিহতদের মধ্যে দুইজন শিশু রয়েছে।
লেবাননের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, ইসরায়েল সীমান্তবর্তী এলাকায় বিমান হামলার পাশাপাশি কামান থেকে গোলাবর্ষণও করেছে।
কাতারের হামাদ বিল খলিফা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুলতান বারাকাত মনে করেন, ইসরায়েল এই হামলা চালিয়ে লেবাননের সরকারকে চাপে রাখতে চাইছে। তিনি আল-জাজিরাকে বলেন, "যত দিন লেবাননে ইসরায়েলি দখলদারি চলবে, তত দিন প্রতিরোধ চালিয়ে যাবে হিজবুল্লাহ।"
এর আগে সোমবার ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায়ও যুদ্ধবিরতি ভেঙে হামলা চালায় ইসরায়েল। পাঁচ দিনে ইসরায়েলি হামলায় ৬৩৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শতাধিক শিশু রয়েছে।
ইসরায়েলের এ ধরনের হামলার নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও দেশ। তবে এই নিন্দার মধ্যেই লেবাননে নতুন করে হামলা চালাল ইসরায়েল।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ল ব নন ইসর য় ল ইসর য় ল র ল ব নন র
এছাড়াও পড়ুন:
চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা
‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’
এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন।
এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’
প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’
প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।