ভোট দিতে নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে হবে, ডাকযোগে আসা ভোট গণনায়ও নিষেধাজ্ঞা
Published: 26th, March 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জালিয়াতি ঠেকাতে মঙ্গলবার নতুন নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই আদেশ অনুযায়ী, ভোট প্রদানে এখন থেকে পাসপোর্ট, জন্মসনদ বা কোনো নথির মাধ্যমে নাগরিকত্বের প্রমাণ দেখাতে হবে। এছাড়া, নির্বাচনের দিন নির্ধারিত সময়ের পর ডাকযোগে আসা ভোট গণনা করতে নিষেধ করা হয়েছে ওই আদেশনামায়। এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্বাচন সহায়তা পরিষদকে নির্দেশনা দিয়েছেন ট্রাম্প।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ট্রাম্প নিয়মিতই মার্কিন নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ২০২০ সালের নির্বাচনে সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে হেরে যাওয়ার পর নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে বলে দাবি করেন। এমনকি ভোটদান পদ্ধতির বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে গিয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় এবার নির্বাচনী ব্যবস্থা নিয়ে নির্বাহী আদেশ জারি করলেন ট্রাম্প।
হোয়াইট হাউসে নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করার সময় ট্রাম্প বলেন, ‘হয়তো কিছু লোক মনে করে আমার অভিযোগ করা উচিত নয়, কারণ আমরা গত নভেম্বরে বিপুল ভোটে জিতেছি। এটি নির্বাচনী কারচুপি বন্ধের পথে বড় একটি পদক্ষেপ। সামনে আরও ব্যবস্থা নেওয়া হবে, যেন সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা যায়। দেশ ভুয়া ও দুর্নীতিগ্রস্ত নির্বাচনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’ যদিও গবেষকরা তাঁর এই দাবিকে চ্যালেঞ্জ করে বলেছেন, অভিবাসীদের দেওয়া ভুয়া ভোটের সংখ্যা খুবই অল্প।
ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন ডেমোক্র্যাট ও প্রগতিশীলরা। তাদের অভিযোগ, নতুন আদেশের কারণে ভোট দিতে মানুষকে এখন থেকে পাসপোর্ট, জন্মনিবন্ধন বা অন্য কোনো সরকারি নথি দেখিয়ে নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে হবে। জনস্বার্থ নিয়ে কাজ করা একটি সংস্থা পাবলিক সিটিজেনের সহসভাপতি লিসা গিলবার্ট এক বিবৃতিতে ট্রাম্পের আদেশকে ‘গণতন্ত্রের ওপর সরাসরি আক্রমণ’ এবং ‘একনায়কসুলভ ক্ষমতা কুক্ষিগত করার প্রচেষ্টা’ বলে মন্তব্য করেছেন। খবর বিবিসি ও রয়টার্সের।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সোনারগাঁয়ে কারখানা চালু করল সুইজারল্যান্ডের সিকা
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে নতুন কারখানা চালু করেছে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক রাসায়নিক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সিকা বাংলাদেশ। আজ সোমবার দুপুরে সোনারগাঁয়ের টিপরদী এলাকায় মেঘনা অর্থনৈতিক অঞ্চলে (এমআইইজেড) প্রতিষ্ঠানটির কারখানা আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়।
কারখানার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রেটো রেংগলি। বিশেষ অতিথি ছিলেন মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের (এমজিআই) চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল। এ ছাড়া সিকা বাংলাদেশের প্রধান সঞ্জীবন রায়, সিকা এশিয়া প্যাসিফিক ম্যানেজমেন্টের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক ইউমি কানসহ মেঘনা গ্রুপ ও সিকা বাংলাদেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সিকা বাংলাদেশের কান্ট্রি হেড সঞ্জীবন রায় বলেন, ‘সিকা বাংলাদেশ’ হলো সিকার ১০০তম সহযোগী প্রতিষ্ঠান, যা আমাদের জন্য এক গৌরবের মাইলফলক। সিকা এখন বিশ্বজুড়ে টেকসই উন্নয়ন ও উদ্ভাবনের প্রতীক। নির্মাণ ও শিল্প খাতে স্থায়িত্ব, শক্তি এবং উপকরণের দক্ষতা বৃদ্ধিতে আমরা নিরন্তরভাবে কাজ করে যাচ্ছি। বাংলাদেশের নির্মাণ খাতের রাসায়নিক বাজার বর্তমানে প্রায় ১০ কোটি মার্কিন ডলারের। এ বাজারে সিকার অবস্থান আরও শক্তিশালী করতে প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ৫০ কোটি সুইস ফ্রাঁ বিনিয়োগে নতুন কারখানা করেছে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রায় ৮ হাজার বর্গমিটার জায়গাজুড়ে স্থাপিত কারখানাটিতে দুটি আধুনিক উৎপাদন লাইন রয়েছে। যার মধ্যে একটি লিকুইড অ্যাডমিক্সচার ও অন্যান্য কংক্রিট পণ্য উৎপাদনের জন্য এবং অপরটি পাউডারভিত্তিক পণ্য তৈরির জন্য। বিশ্বজুড়ে নির্মাণ ও মোটরগাড়ি শিল্পের জন্য বন্ডিং, সিলিং, রিইনফোর্সিং, প্রটেকশন ও ড্যাম্পিং পণ্যে শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান সিকা বর্তমানে ১০০টিরও বেশি দেশে কার্যক্রম রয়েছে।
সিকা বাংলাদেশকে শুভেচ্ছা জানিয়ে রাষ্ট্রদূত রেটো রেংগলি বলেন, সিকা মানেই গুণগত মান, উদ্ভাবন এবং আধুনিক প্রযুক্তির সংমিশ্রণ। ‘সিকা’ বিশ্বজুড়ে নির্মাণ খাতে উচ্চমানের উদ্ভাবনী পণ্য এবং সমাধান দিয়ে আসছে। বাংলাদেশ ও সুইজারল্যান্ডের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের জন্য বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকার।
সিকার এই যাত্রা মেঘনা অর্থনৈতিক অঞ্চল ও বাংলাদেশের জন্য গর্বের বলে উল্লেখ করেন এমজিআইয়ের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল। তিনি বলেন, ‘নির্মাণ খাতে সিকা বিশ্বে নেতৃত্বদানকারী একটি প্রতিষ্ঠান। সিকার বিনিয়োগ আমাদের অঞ্চলের সমৃদ্ধি বয়ে আনতে সহায়ক হবে। মেঘনা অর্থনৈতিক অঞ্চল বিনিয়োগ নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য অবকাঠামোসহ যাবতীয় সুযোগ–সুবিধা নিয়ে বিনিয়োগকারীদের পাশে থাকবে।’