ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান বর্বরতার প্রতিবাদে এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সোমবার (৭ এপ্রিল) দিনব্যাপী বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছিলেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তবে তাদের এ প্রতিবাদী কর্মসূচি থেমে নেই।

মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) সকাল থেকেই বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে নানা প্রতিবাদী কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। রাইজিংবিডির বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতাদের পাঠানো খবরে থাকছে বিস্তারিত-

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) 

ইসরাইলের লাগাতার বর্বর আগ্রাসন, গণহত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদে এবং নির্যাতিত গাজাবাসীর প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে মুখে কালো পতাকা বেধে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে রাবি শাখা ছাত্রদল। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে তারা এ কর্মসূচি পালন করে।

সর্দার জহুরুল ইসলামের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, রাবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ রাহী, যুগ্ম আহ্বায়ক এস.

এম মিঠু, কর্মী মাহমুদুল হাসান প্রমুখ।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি)

বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনের সড়কে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে মানববন্ধন করেছে জাবি শিক্ষক সমিতি। 

এতে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ এবং উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান। 

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আবদুর রব, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক সোহেল রানা, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আইরিন আক্তার প্রমুখ।

অন্যদিকে, একই দাবিতে বেলা ১১টায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক সংলগ্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন জাবি শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। 

শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব ওয়াসিম আহমেদ অনিকের সঞ্চালনায় এ সময় বক্তব্য দেন, শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর, যুগ্ম-আহ্বায়ক রায়হান হোসেন মিল্টন,সদস্য তানজিলা বৈশাখী, 

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ফিলিস্তিনিদের মুক্তি সংগ্রামের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল।

প্রধান ফটকের সামনে সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন শেখ বাজার প্রদক্ষিণ করে তারা। পরে শেখপাড়া বাজার হয়ে পুনরায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে এসে ফিলিস্তিনিদের দোয়া ও মোনাজাত করেন তারা।

এ কর্মসূচিতে ইবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ ও সদস্য সচিব মাসুদ রুমী মিথুনের নেতৃত্বে উপস্থিত ছিলেন, ইবি ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ওমর ফারুক, সাধারণ সম্পাদক রাশিদুল ইসলাম রাশেদ, যুগ্ম-সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, রিপন হোসেন, বর্তমান কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার পারভেজ, আহসান হাবীব, আনারুল ইসলাম, রোকন উদ্দিন, সদস্য সাব্বির হোসেন, রাফিজ আহমেদ, নুর উদ্দিন, উল্লাস, রোকন, সাক্ষর, সাবিক, রিয়াজ, আলিনুর প্রমুখ।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি)

দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে গাজায় গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রবিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে শাবিপ্রবি শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা মুখে কালো কাপড় বেঁধে প্রতিবাদ জানান।

শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলামের সঞ্চালনায় এ সময় বক্তব্য দেন, সভাপতি রাহাত জামান, সাধারণ সম্পাদক নাঈম সরকার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান আশিক, সহ সাধারণ সম্পাদক আবু আফসার মোজাম্মেল, ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক রিমকাতুল রাশেদ অথৈ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান চাঁদ প্রমুখ।

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি)

বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে ‘স্টপ জেনোসাইড, সেভ গাজা’ প্রতিপাদ্যে মানববন্ধন করেছেন নোবিপ্রবি শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এ সময় তারা ‘ফ্রম দ্যা রিভার টু দ্যা সি, ফিলিস্তিন উইল বি ফ্রি’, ‘আমেরিকার আগ্রাসন, ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’, ‘ইসরাইল নিপাত যাক, ফিলিস্তিন মুক্ত পাক’ ইত্যা স্লোগান দিতে থাকেন।

মানববন্ধনে অন্যদের মাঝে বক্তব্য দেন, উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইসমাইল, উপ-উপাচার্য ড. মোহাম্মদ রেজওয়ানুল হক, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড.  মোহাম্মদ হানিফ, আইন বিভাগের চেয়ারম্যান মো: জামশেদুল ইসলাম প্রমুখ।

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (সিকৃবি)

সোমবার (৭ এপ্রিল) রাত ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল প্রাঙ্গণ ইসরাইল কর্তৃক আগ্রাসন ও বর্বর গণহত্যার প্রতিবাদে সিকৃবি শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি ক্যাম্পাসের মুল সড়ক প্রদক্ষিণ করে টিএসসির সামনে এসে শেষ হয়। বিক্ষোভ মিছিল শেষে শিক্ষার্থীরা ফিলিস্তিনিদের জন্য দোয়া করেন।

মিছিলে তারা ‘নারায়ে তাকবীর’, ’আল্লাহু আকবার’, ‘ফ্রম দ্য রিভার টু দ্য সি’, ’প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি’, ‘ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন’, ‘ফ্রি ফ্রি গাজা’ প্রভৃতি স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।

ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড ইউনিভার্সিটির (আইএসইউ)

ইসরায়েলি আগ্রাসন, নিপীড়ন ও গণহত্যার প্রতিবাদে সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়টির মহাখালী ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন আইএসইউ এর শিক্ষার্থীরা। 

ইসরায়েলি বাহিনীর গণহত্যার নিন্দা জানিয়ে আইএসইউ শিক্ষার্থীদের এ কর্মসূচিতে যোগদান করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল আউয়াল খান।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. আবুল কাশেম, আইকিউএসি পরিচালক অধ্যাপক মো. একরামুল হক, ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী, রেজিস্ট্রার মো. ফাইজুল্লাহ কৌশিক প্রমুখ।

মহাখালী ক্যাম্পাসে আয়োজিত সমাবেশ শেষে তারা একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে গুলশান ১ প্রদক্ষিণ করে আবার ক্যাম্পাসে ফিরে আসেন। মিছিলে শিক্ষার্থীদের হাতে ইসরাইলের আগ্রাসনবিরোধী নানা স্লোগান, পোস্টার, প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার দেখা যায়।

ঢাকা/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপস থ ত ছ ল ন ছ ত রদল র উপ চ র য ম হ ম মদ ল ইসল ম গণহত য ব প রব সদস য এ সময় আহম দ

এছাড়াও পড়ুন:

২ মে ঢাকায় এনসিপির বিক্ষোভ, প্রচারপত্রে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ৭ অপরাধ

‘গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের বিচার ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে’ আগামী ২ মে (শুক্রবার) রাজধানী ঢাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ করবে নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। রাজধানীর গুলিস্তানে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ ফটকে এনসিপির ঢাকা মহানগর শাখার উদ্যোগে এই সমাবেশ হবে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের উদ্যোগে গঠিত দল এনসিপি।

সমাবেশ উপলক্ষে তৈরি করা প্রচারপত্রে আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের শাসনামলের সাতটি অপরাধের কথা উল্লেখ করেছে এনসিপি। এগুলো হলো ২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহ দমনের নামে ৫৭ সেনা কর্মকর্তার হত্যাকাণ্ড; গুম, খুন ও ক্রসফায়ারের মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহরণ; ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে তিনটি অবৈধ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার হরণ; ২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে চালানো হত্যাযজ্ঞ; লাখ লাখ কোটি টাকার দুর্নীতি, লুটপাট ও পাচার; ২০২১ সালে নরেন্দ্র মোদিবিরোধী আন্দোলনে চালানো হত্যাকাণ্ড এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় চালানো নজিরবিহীন গণহত্যা।

এরপর চারটি দাবিও উল্লেখ করা হয়েছে প্রচারপত্রে। এগুলো হলো প্রতিটি অপরাধের জন্য আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ট্রাইব্যুনাল বা কমিশন গঠন করে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিচারের ব্যবস্থা; আগামী নির্বাচনের আগেই আওয়ামী লীগ প্রশ্নের মীমাংসা তথা আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল; বিচার চলাকালে আওয়ামী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ রাখা এবং ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে জড়িত ব্যক্তিদের বিচার ও তাঁদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা।

দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব আজ মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, সমাবেশে প্রায় ২০ হাজার মানুষের জমায়েত হতে পারে। এই সমাবেশে এনসিপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।

দলগতভাবে আওয়ামী লীগের বিচার, দলটির নিবন্ধন বাতিল ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে গত ২১ এপ্রিল থেকে ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানায় বিক্ষোভ, সমাবেশ ও মশালমিছিল করছে এনসিপি। এর ধারাবাহিকতায় এবার কিছুটা বড় পরিসরে ঢাকা মহানগর শাখার ব্যানারে সমাবেশ হতে যাচ্ছে।

এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব জয়নাল আবেদীন শিশির। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা মহানগরের থানা পর্যায়ে কিছুদিন ধরে এনসিপির যে কর্মসূচিগুলো হচ্ছে, এগুলোরই চূড়ান্ত সমাবেশটা হবে আগামী ২ মে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৫১ ফিলিস্তিনি নিহত
  • রাজধানীতে পরপর তিন দিনে তিন জনসমাবেশ
  • বিশ্বনেতাদের সতর্ক দৃষ্টির সামনেই ঘটছে গণহত্যা
  • ইসলামবিরোধী প্রস্তাবনা রুখে দেওয়া হবে: মামুনুল হক
  • ২ মে ঢাকায় এনসিপির বিক্ষোভ, প্রচারপত্রে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ৭ অপরাধ
  • শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরে মামলা মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ মির্জা ফখরুলের
  • ‘বিশ্বের নজরদারির মধ্যেই ফিলিস্তিনিদের ওপর গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েল’
  • রাখাইনে করিডর দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ হেফাজতের
  • ইয়েমেনে মার্কিন হামলাকে ‘যুদ্ধাপরাধ’ আখ্যা দিয়ে নিন্দা ইরানের
  • নির্বাচনের আগেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি