নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ফেসবুকে স্ট্যাটাস নিয়ে ছাত্রদলের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অন্তত চারজন আহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) উপজেলার চৌমুহনী সরকারি সালেহ আহমেদ কলেজে ঘটনাটি ঘটে।  

চৌমুহনী সরকারি সালেহ আহমেদ কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. শাকের আহমেদ সবুজ অভিযোগ করে জানান, কয়েকদিন আগে তিনি চৌমুহনী সরকারি সালেহ আহমেদ কলেজ ছাত্রদলের নতুন কমিটির সমালোচনা করে ফেসবুক একটি স্ট্যাটাস দেন। ওই স্ট্যাটাসে কমেন্ট করেন কলেজ ছাত্রদলের বর্তমান সভাপতি হৃদয়। আজ সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি হৃদয়ের নেতৃত্বে কলেজ প্রাঙ্গণে ফিলিস্তিনের গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ হয়। 

আরো পড়ুন:

ক্যারাম খেলা নিয়ে ২ গ্রামবাসীর সংঘর্ষ, আহত ২০

লক্ষ্মীপুরে স্বেচ্ছাসেবক দল ও কৃষক দলের সংঘর্ষে নিহত ১

সবুজ বলেন, ‍“দুপুর ১২টার দিকে ছাত্রদল নেতা প্রান্ত, রাফি ও তমাল কলেজ প্রাঙ্গণে পাল্টা কর্মসূচি পালন করে। এতে দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ফেসবুক স্ট্যাটাস ও পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির জেরে হৃদয় আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। এক পর্যায়ে হৃদয়ের নেতৃত্বে তার সমর্থকরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে কলেজের পাশে আমার দোকানে হামলা-ভাঙচুর চালায়। তারা আমাকে আহত করে। খবর পেয়ে পুলিশ এলে পুনরায় পুলিশের সামনে হৃদয়ের অনুসারীরা আমার দোকানে হামলা চালায়।” 

চৌমুহনী সরকারি সালেহ আহমেদ কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি ইয়াসিন হৃদয় অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, “কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আমার নেতৃত্বে কলেজ প্রাঙ্গণে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংস গণহত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। ওই কর্মসূচিতে বহিরাগত সবুজের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়। এতে আমিসহ ছাত্রদলের তিনজন নেতাকর্মী আহত হন।”  

বেগমগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামাক্ষা চন্দ্র দাস বলেন, “বহিরাগত কয়েকজন যুবক কলেজে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায় বলে শুনেছি। এর বেশি কিছু আমার জানা নেই।”  

বেগমগঞ্জ মডেল থানার ওসি লিটন দেওয়ান বলেন, “কলেজ ছাত্রদলের নতুন কমিটি নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাসের জেরে বিশৃঙ্খলা হয়। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” 

ঢাকা/সুজন/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ ছ ত রদল আহত চ ম হন ফ সব ক স ঘর ষ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩০ জন শিক্ষক-কর্মকর্তাকে বরখাস্ত ও ৩৩ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ১৯ জন শিক্ষক ও ১১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ৩৩ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার ও তাঁদের সনদ বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭১তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে জড়িত অভিযোগে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মনজুরুল হক প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বিপরীতে ভূমিকা নেওয়া শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করতে গত ১৫ মার্চ আল-হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আকতার হোসেনকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ, তথ্যচিত্র, ভিডিও ও পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কমিটি ওই শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের জুলাই-আগস্ট বিপ্লববিরোধী ও দমনমূলক কার্যকলাপে সংশ্লিষ্টতা পায়। পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। সর্বশেষ কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সিন্ডিকেট সভায় তাঁদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মনজুরুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে এখনো রেজল্যুশন আকারে হয়নি। কাউকে চিঠিও দেওয়া হয়নি। রেজল্যুশন হলে, চিঠি দেওয়া হলে অফিসিয়ালি জানাতে পারব।’

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক আকতার হোসেন বলেন, ‘উপাচার্য জুলাই গণ-অভ্যুত্থানবিরোধী ভূমিকা চিহ্নিত করতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। আমাকে আহ্বায়ক করেন। সে অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্পিত দায়িত্ব পালন করে তদন্ত শুরু করি। বিভিন্ন বিভাগ ও দপ্তর থেকে তথ্য-উপাত্ত চাওয়া হয়। লিখিত অভিযোগ, পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত ছবি ও প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আমরা সর্বশেষ প্রতিবেদন তৈরি করতে সক্ষম হই।’

উপাচার্য অধ্যাপক নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে বিতর্কিত ভূমিকার জন্য শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে আরও একটি কমিটি গঠন করা হবে। সেই কমিটি বিবেচনা করবে, কাকে কতটুকু শাস্তি দেওয়া যায়। তবে ফ্যাসিস্টের প্রশ্নে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’

এদিকে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানবিরোধী ভূমিকায় থাকা আইন বিভাগের দুই শিক্ষক শাহজাহান মণ্ডল ও রেবা মণ্ডলকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। গতকাল বেলা একটার দিকে প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে ‘অযৌক্তিক’ দাবি করে তাঁরা মানববন্ধন করেন। পরে উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দেন।

ইংরেজি, ল অ্যান্ড ল্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, আল-ফিকহ অ্যান্ড ল–সহ কয়েকটি বিভাগের শিক্ষার্থীরাও তাঁদের শিক্ষকদের পক্ষে আন্দোলনে নামার পরিকল্পনা করছেন বলে জানা গেছে।

মানববন্ধনে আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা তদন্ত কমিটির কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করে বলেন, ‘তদন্ত কমিটি পক্ষপাতিত্ব করে রাঘববোয়ালদের বাদ দিয়ে চুনোপুঁটিদের ধরায় ব্যস্ত। সিদ্ধান্তটি পক্ষপাতমূলক ও অযৌক্তিক।’

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মির্জা আল শাহরিয়ার বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনের সময় আমি ১২ দিন জেলে ছিলাম। তখন রেবা মণ্ডল ছিলেন বিভাগের চেয়ারম্যান, আর সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন শাহজাহান মণ্ডল। আন্দোলনের সময় আমাদের বিভাগ থেকে কাউকে যেতে নিষেধ করা হয়নি। এই দুজন শিক্ষক সব সময় রাজনীতির ঊর্ধ্বে থেকে শিক্ষার্থীবান্ধব কাজ করেছেন। আমরা তাঁদের শ্রেণিকক্ষে ফেরত চাই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাদ্রাসা সভাপতির বিরুদ্ধে চোরাচালান মামলা, প্রত্যাহারের দাবিতে শিশুশিক্ষার্থীদের দিয়ে মানববন্ধন
  • ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের বামরাইল সেতু সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন
  • শাহরুখ খান: গণহত্যার সময় বিলিয়নিয়ার হওয়ার অর্থ কী
  • সুদানের এল-ফাশের শহরে ‘চরম বিপদে’ বাসিন্দারা: ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস
  • সুদানে গণহত্যার প্রতিবাদে জাবি ও জবিতে মানববন্ধন
  • জুলাইবিরোধী শক্তির শাস্তি দাবিতে ইবিতে বিক্ষোভ
  • সুদানে আরএসএফের গণহত্যায় আরব আমিরাত ইন্ধন দিচ্ছে কেন
  • ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩০ জন শিক্ষক-কর্মকর্তাকে বরখাস্ত ও ৩৩ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত
  • সুদানে ‘গণহত্যা’ হয়েছে
  • একাত্তরের গণহত্যার জন্য জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে: আলাল