প্রথমবারের মতো মাইনরিটি দলকে নিবন্ধন দিলো ইসি, নাম বিএমজেপি
Published: 9th, April 2025 GMT
দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মাইনরিটি সম্প্রদায়ের কোনো দলকে নিবন্ধন দিলো নির্বাচন কমিশন (ইসি)। দলটির নাম বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি (বিএমজেপি), প্রতীক হচ্ছে রকেট।
বুধবার (০৯ এপ্রিল) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ইসি সচিব আখতার আহমেদ দলটির নেতাদের হাতে নিবন্ধন সনদ তুলে দেন।
পরে বিএমজেপির সভাপতি সুকৃতি কুমার মণ্ডল সাংবাদিকদের বলেন, ২০১৮ সালে নিবন্ধন পেতে আবেদন করেছিলাম। বিশেষ কারণে নিবন্ধন ওই সময় পাইনি। বাছাইয়ে ১০টি দলের মধ্যে আমরা ছিলাম। কিন্তু ইসি দুটি দলকে নিবন্ধন দেয়। আমরা প্রতিবাদ জানাই।
তিনি বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর হাইকোর্টে রিট করেছিলাম। ১১ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট নিবন্ধন দেওয়ার আদেশ দেন। আজকে কাঙ্ক্ষিত নিবন্ধন সনদ পেলাম।
সুকৃতি কুমার আরো বলেন, আজ স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। ৫৪ বছরে আমরা রাজনীতির স্বাদ গ্রহণ করতে যাচ্ছি। তিন কোটির মতো মাইনরিটি সম্প্রদায়ের মানুষ আছে। এখন আমরা রাজনীতি করার অধিকার পেলাম। আমরা রাজনৈতিকভাবে সচেতন। ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত আমাদের সমর্থন আছে। আমাদের প্রতীক হচ্ছে রকেট।
ইসি সচিব স্বাক্ষরিত নিবন্ধন সনদে বলা হয়েছে, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট-এর মাননীয় হাইকোর্ট বিভাগের রিট পিটিশন নম্বর- ১০৪৫৩/২০২৪ এর সূত্রে বিগত ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে প্রদত্ত রায় ও আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান কার্যালয়: ৪৩/এ, ইন্দিরা রোড, তেজগাঁও, শের-ই বাংলা নগর, ঢাকা-১২১৫ -এ অবস্থিত বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টিকে (বিএমজেপি) রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন করিয়াছে। নিবন্ধন নম্বর ৫৫। দলটি রাজহাঁস প্রতীক চাইলেও ইসি সেটি দেয়নি বলে জানান বিএমজেপি সভাপতি সুকৃতি।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মাইনরিটিদের কোনো দল এবারই প্রথম নিবন্ধন পেল। এ নিয়ে ইসিতে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা দাঁড়াল ৫০টি। এর আগে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এবি পার্টি, নুরুল হক নুরের গণঅধিকার পরিষদ (জিওপি), মাহমুদুর রহমানের নাগরিক ঐক্য এবং গণসংহতি আন্দোলন নিবন্ধন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। দলগুলোর প্রায় প্রতিটিই আবেদনের পাঁচ থেকে ছয় বছর পর আদালতের আদেশে নিবন্ধন পেয়েছে। এর আগে ২০১৮ সালেও শর্ত পূরণ না করার কারণ দেখিয়ে ৭৬টি দলের কোনোটিকেই নিবন্ধন দেয়নি ইসি। পরে ২০১৯ সালে ববি হাজ্জাজের দল এনডিএম আদালতের আদেশে নিবন্ধন পেয়েছিল।
নবম সংসদ নির্বাচনের আগে ২০০৮ সালে নিবন্ধন প্রথা চালু হয়। এ পর্যন্ত ৫৪টি দল ইসির নিবন্ধন পেলেও পরবর্তীতে শর্ত পূরণ, শর্ত প্রতিপালনে ব্যর্থতা এবং আদালতের নির্দেশে পাঁচটি দলের নিবন্ধন বাতিল করে ইসি। দলগুলো হলো- জামায়াতে ইসলামী, ফ্রিডম পার্টি, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন, পিডিপি ও জাগপা।
ঢাকা/হাসান/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এমজ প ম ইনর ট র জন ত
এছাড়াও পড়ুন:
জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে গণঅধিকার পরিষদ
সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলোর আলোকে জাতীয় ঐক্য গঠনের জন্য জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে গণঅধিকার পরিষদ। আজ সোমবার জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূরের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল এ বৈঠকে অংশ নেয়। শুরুতে বক্তব্য দেন জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রিয়াজ।
তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালের কোটাবিরোধী আন্দোলন ছিল ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সূচনা। সেই সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় আজ আমরা একটি অভূতপূর্ব রাজনৈতিক পরিবর্তনের মুখোমুখি। এই পরিবর্তনকে অর্থবহ করতে কেবল সংস্কার কমিশনের সুপারিশ যথেষ্ট নয়, বরং সব রাজনৈতিক দলের সম্মিলিত অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি নতুন বাংলাদেশ গঠন করতে হবে।’
কমিশনের সহসভাপতি বলেন, এই আলোচনা কেবল কথার মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে রাজপথে ও রাজনৈতিক চর্চার মাধ্যমে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে একটি জাতীয় সনদ গঠনের লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হবে।
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর তার বক্তব্যে বলেন, গত ১৬ বছর ধরে দেশের মানুষ ফ্যাসিবাদী শাসনের চাপে নিপীড়নের শিকার হয়েছে। ভবিষ্যতে কেউ যেন এমন দমন-পীড়ন চালাতে না পারে, সে লক্ষ্যে জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের মাধ্যমে একটি কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি।
তিনি বলেন, ২০১৮ সালের কোটাবিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যে লড়াই শুরু হয়েছিল, সেটি আট মাসেরও বেশি সময় ধরে চলেছে। হামলা-মামলা ও গ্রেপ্তার সত্বেও আমরা আন্দোলন চালিয়ে গিয়েছি। ব্যক্তি দল গোষ্ঠীর চেয়ে জাতীয় স্বার্থ ও রাষ্ট্রের স্বার্থকে আমরা যেন প্রাধান্য দেই এটিই আমাদের চাওয়া।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের মুখপাত্র ও জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ফারুক হাসান, সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান, কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার ও ইফতেখারুজ্জামান।