চলতি বছরের বলিউডের অন্যতম প্রত্যাশিত চলচ্চিত্র মনে করা হচ্ছিল সালমান খানের ‘সিকান্দার’। ঈদে ধুমধাম করে মুক্তি পায় সিনেমাটি। এ আর মুরুগাদস পরিচালিত অ্যাকশনধর্মী ছবিকে ঘিরে দর্শকের প্রত্যাশা ছিল তুঙ্গে। অগ্রিম টিকিট বিক্রিতেও সে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছিল। কিন্তু প্রথম দিনের বাজে শুরু সিনেমার ভাগ্য ভালো ফল বয়ে আনতে পারেনি। প্রথম দিনে ‘সিকান্দার’ আয় করেছিল মাত্র ২৬ কোটি রুপি। যা শুধু সালমানের নয়, বর্তমানে বলিউডের যেকোনো বড় ছবির ক্ষেত্রে বাজে শুরু। বক্স অফিসের এ ফল নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে, কেউ কেউ মনে করছেন আয়োজনের ঘাটতি, আবার কেউ মনে করছেন পাইরেসির কারণেই সুবিধা করতে পারেননি বলিউড ভাইজান। ঠিক কী কারণে ‘সিকান্দার’ সুবিধা করতে পারেনি, তা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।
বলিউড ভাইজানের ছবি, তা-ও আবার ঈদের সময়। ‘সিকান্দার’ নিয়ে তাই প্রত্যাশা বেশি হওয়া স্বাভাবিক। তবে তা যে এভাবে হোঁচট খাবে, কেউ তা ঘুণাক্ষরেও চিন্তা করতে পারেনি। সিনেমাটি শুধু ভক্তদের পাশাপাশি হতাশ করেছে ভারতীয় চলচ্চিত্র বিশ্লেষকদেরও। বক্স অফিসে এ ভাটার নেপথ্যে কিছু কারণ জানিয়েছে চলচ্চিত্র বিশ্লেষকেরা।
দুর্বল চিত্রনাট্য ও বিষয়বস্তু
‘সিকান্দার’ সিনেমার বিষয়বস্তুতে সমস্যা ছিল মনে করছেন একাধিক চলচ্চিত্র বিশ্লেষক। তাই সালমান খানের উপস্থিতিও এটিকে বাঁচাতে পারেনি। চলচ্চিত্র–বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ তরণ আদর্শ বলেন, ‘আমার মনে হয়, ভরাডুবির মূল কারণটি ছিল চিত্রনাট্য ও বিষয়বস্তু। বিষয়বস্তু এতটাই দুর্বল ছিল যে প্রাথমিক কৌতূহলের পরেও সিনেমাটির ভাগ্যে ভালো কিছু আসেনি। প্রথম দিন ভালো ছিল, দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন ছিল ঈদ, তাই এটি ব্যবসার যথেষ্ট সুবিধা পেয়েছিল, কিন্তু এরপরই তা হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে। ছবিটির আয় ক্রমে নিম্নমুখী হচ্ছিল।’
হল–ফেরত দর্শকের খারাপ রিভিউ
সালমানের সিনেমা নিয়ে আমজনতার মধ্যে একটা উৎসব দেখা যায় সব সময়। অনেকেই মনে করেন এরাই সালমানের পাওয়ার হাউস। ভাইজানের সিনেমা মুক্তি মানেই গেইটি গ্যালাক্সিসহ সিঙ্গেল স্ক্রিনের সামনে উৎসব, দর্শকদের উচ্ছ্বাস। তবে এবারের চিত্র অবাক করেছে জি৭ মাল্টিপ্লেক্স (গেইটি গ্যালাক্সি) ও মারাঠা মন্দির সিনেমার নির্বাহী পরিচালক মনোজ দেশাইকে। ইটাইমসকে তিনি বলেন, ‘এটি অন্য কোনো ছবির অনুলিপি ছিল, আর মনে হয়েছে নায়িকাকে তাড়াতাড়ি হত্যা করা হয়েছিল। বিশ্বাস করেন, আমি ছবির একটিও ফ্রেম দেখিনি। কিন্তু দর্শকেরা হল থেকে বের হয়ে আমাকে এমনই বলেছেন, যা আমি আপনাকে বলছি।’
পাইরেসি
পাইরেসির কারণেও সিনেমাটির ব্যবসায় ভাটা পড়েছে বলে মনে করছেন মনোজ দেশাই। তিনি বলেন, ‘সালমানের জন্য মানুষ সিনেমা হলে আসে, কিন্তু পাইরেসির কারণে অনেকেই হলে আসেননি। এখন ওটিটির সময়, মানুষের মনে এই মনোভাব তৈরি হয়েছে যে আমরা ঘরে বসে ছবিটি দেখব।’
গানগুলো আলোচনা তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে
সিনেমায় ‘সিকান্দার নাচে’, ‘জোহরা জাবিন’ ও ‘হাম আপকে বিনা’র মতো ভালো গান ছিল, যেগুলো ছবিটিকে হয়তো ব্যর্থতা থেকে কিছুটা বাঁচাতে পারত। তবে ভুলে যাওয়ার মতো গানের কথা, দুর্বল সংগীত আয়োজন আলোচনা তৈরি করতে পারেনি। তবে প্রয়োজনীয় প্রচারণা হলে এগুলোও তুরুপের তাস হতে পারত বলে মনে করছেন অনেকেই।
১০ দিনে ভারতীয় বাজার থেকে সিকান্দার আয় করেছে মাত্র ১০৬ কোটি রুপি। মুক্তির প্রথম দিন ২৬ কোটি রুপি আয় করেছিল সিনেমাটি। পরদিন ঈদের দিন আয় করেছিল ২৯ কোটি রুপি। তবে এপ্রিলের প্রথম দিন থেকেই আয় নিম্নমুখী হতে থাকে। এদিন সিনেমাটি আয় করেছিল ১৯ কোটি রুপি। এপ্রিলের ৪ তারিখ সিনেমার আয় নেমে আসে মাত্র ৩ কোটি ৫০ লাখ রুপিতে। এ সিনেমার মধ্য দিয়ে  প্রথমবার সালমানের বিপরীতে অভিনয় করেছেন দক্ষিণ ভারতের জনপ্রিয় তারকা রাশমিকা মান্দানা। ‘গজনি’খ্যাত নির্মাতা এ আর মুরুগাদসের সঙ্গেও এর মাধ্যমে প্রথমবার কাজ করেন সালমান। সিনেমাটি আরও অভিনয় করেছেন সত্যরাজ, শরমন যোশী, কাজল আগারওয়াল, প্রতীক বাব্বর, অঞ্জিনী ধাওয়ানসহ আরও অনেকে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চলচ চ ত র ব প রথম দ ন ব ষয়বস ত করছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

‘ফাতেমা রানীর তীর্থোৎসবে’ আলোয় ভাসল গারো পাহাড়

হাতে মোমবাতি, ঠোঁটে প্রার্থনার সুর—এভাবেই দুই কিলোমিটারেরও বেশি আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথ পাড়ি দিলেন হাজারো ভক্ত। গন্তব্য ছিল মা মারিয়ার আশীর্বাদপ্রাপ্ত স্থান শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার গারো পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ‘বারোমারি সাধু লিওর খ্রিষ্টধর্মপল্লি’। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এখানে শুরু হয়েছে খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের ‘ফাতেমা রানীর তীর্থোৎসব’।

দুই দিনব্যাপী এই তীর্থোৎসব আজ শুক্রবার শেষ হচ্ছে। শুধু ক্যাথলিক খ্রিষ্টানই নন, অন্য ধর্মাবলম্বীরাও প্রতিবছর অংশ নেন এই উৎসবে। আয়োজক ক‌মি‌টি সূত্রে জানা যায়, প্রতিবছর অক্টোবর মাসের শেষ বৃহস্পতি ও শুক্রবারে এই তীর্থযাত্রার আয়োজন করা হয়।

গতকাল বিকেল চারটায় পবিত্র খ্রিষ্টযোগের মধ্য দিয়ে শুরু হয় তীর্থোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা। এরপর রাত সা‌ড়ে আটটার দিকে অনুষ্ঠিত হয় বর্ণাঢ্য আলোক শোভাযাত্রা। রাত ১১টায় মা মারিয়ার মূর্তিকে সামনে রেখে বিশাল প্যান্ডেলে অনুষ্ঠিত হয় আরাধনা, আর রাত ১২টায় নিরাময় অনুষ্ঠান ও নিশিজাগরণের মধ্য দিয়ে শেষ হয় প্রথম দিনের ধর্মীয় কার্যক্রম।

আজ শুক্রবার সকাল আটটায় জীবন্ত ক্রুশের পথ অতিক্রম এবং সকাল ১০টায় মহাখ্রিষ্টযোগের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের তীর্থোৎসব। এ বছরের উৎসবের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভ্যাটিকান সিটির রাষ্ট্রদূত কেভিন এস র‌্যান্ডেল। এ সময় জেলা প্রশাসক (ডি‌সি) তরফদার মাহমুদুর রহমান ও পু‌লিশ সুপার (এস‌পি) আমিনুল ইসলাম প্রমুখ উপ‌স্থিত ছি‌লেন।

১৯৪২ সালে ৪২ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয় বারোমারি সাধু লিওর ধর্মপল্লি। ১৯৯৮ সালে প্রয়াত বিশপ ফ্রান্সিস এ গমেজ স্থানটিকে ‘ফাতেমা রানীর তীর্থস্থান’ হিসেবে ঘোষণা করেন। তখন থেকেই প্রতিবছর আয়োজিত হয়ে আসছে এই ধর্মীয় উৎসব।
এ বছর প্রায় ৩০-৪০ হাজার দেশি-বিদেশি রোমান ক্যাথলিক তীর্থযাত্রী অংশ নিয়েছেন উৎসবে। সার্বিকভাবে উৎসব এলাকা ছিল আলো, প্রার্থনা ও শান্তির আবহে মোড়ানো।
খাগড়াছড়ি থেকে আসা তীর্থযাত্রী জুয়েল ত্রিপুরা বলেন, ‘আমি প্রথমবারের মতো এখানে এসেছি। এসে খুব ভালো লাগছে। এর পর থে‌কে প‌রিবা‌রের সবাইকে নি‌য়ে প্রার্থনায় আস‌ব।’

মুক্তাগাছা থেকে আসা কারিশমা চাম্বুগং বলেন, ‘মারিয়ার কাছে এলে মনে একধরনের শান্তি পাই। আমরা প্রার্থনা করি যেন জীবনের দুঃখ-কষ্ট দূর হয়। প্রতিবছর এই সময়টার অপেক্ষায় থাকি।’

তীর্থোৎস‌বে মা মা‌রিয়ার মূ‌তি নি‌য়ে মোমবা‌তি প্রজ্বালন ক‌রে আলোক শোভাযাত্রা বের করা হয়। গতকাল বৃহস্প‌তিবার রাতে শেরপু‌রের না‌লিতাবাড়ী‌র বা‌রোমা‌রি সাধু‌লিও ধর্মপ‌ল্লি থে‌কে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কে হবে নারী বিশ্বকাপের নতুন চ্যাম্পিয়ন
  • ভারত নাকি দক্ষিণ আফ্রিকা, কে হবে নতুন নারী বিশ্বকাপ চ‌্যাম্পিয়ন
  • বিশ্বকাপ ফাইনালের প্রতি টিকিটের দাম দেড় লাখ টাকার বেশি
  • গোল্ডেন বুট হাতে এমবাপ্পে বললেন, রিয়ালে আরও বহু বছর থাকতে চাই
  • টগি ফান ওয়ার্ল্ডে উদযাপিত হলো হ্যালোইন উৎসব
  • উদ্ভাবন–আনন্দে বিজ্ঞান উৎসব
  • নবীনদের নতুন চিন্তার ঝলক
  • বিজ্ঞান উৎসব উদ্বোধন করল রোবট নাও
  • ‘ফাতেমা রানীর তীর্থোৎসবে’ আলোয় ভাসল গারো পাহাড়
  • সব মাধ্যমে কাজ করতে চান জৌপারী