মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত কয়েক সপ্তাহে ওয়াশিংটনজুড়ে যে বিপ্লবের বিস্তৃতি ছড়িয়ে দিয়েছেন, তার সবচেয়ে স্পষ্ট বৈশিষ্ট্য হলো– এটা প্রথমে পুড়িয়ে ফেলবে, পরে বেপরোয়া আচরণের পরিণতি খুঁজে বের করবে। তাঁর এ ধরনের আচরণের মূল্য এখন স্পষ্ট হয়ে উঠছে।

গতকাল বুধবার দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের এক বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পণ্য আমদানিতে শুল্ক আরোপের প্রভাব নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানতেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যখন তাঁর দীর্ঘ প্রতিশ্রুতিলব্ধ আনুপাতিক পাল্টা শুল্ক বা রিসিপ্রক্যাল ট্যারিফ ঘোষণা করলেন, তখন বিভিন্ন দেশের বাজার ডুবে যাবে; পাশাপাশি অন্য দেশগুলোও প্রতিশোধ নিতে মাঠে নামবে। কিন্তু চাপের মুখে বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন, তারা অর্থনৈতিক ভূমিকম্পের দ্বিতীয়-ক্রমের প্রভাব কেমন হতে পারে, তা যাচাইয়ের জন্য মাত্র কয়েক দিন সময় পেয়েছিলেন। অর্থাৎ, এ নিয়ে তারা গভীরভাবে চিন্তা করা বা বুঝে ওঠার সুযোগ পাননি। 

ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা এখনও যুক্তরাষ্ট্রের প্রাথমিক ধাক্কা কেটে যাওয়ার পর অভূতপূর্ব জটিলতার একটি বৈশ্বিক ব্যবস্থা পরিচালনার কৌশল বাতলাতে পারেননি। এ অবস্থায় বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির নেতা ট্রাম্প কেবল অন্য সবাইকে হুমকি-ধমকি আর আলোচনাই চালিয়ে যাচ্ছেন। 

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি এবং অর্থনৈতিক, প্রযুক্তিগত ও সামরিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ জানাতে সক্ষম একমাত্র পরাশক্তি চীনের সঙ্গে আপাতদৃষ্টিতে অব্যবস্থাপিত উত্তেজনার কথাই ধরুন। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের বর্ণনা অনুযায়ী, বাণিজ্যযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আগে ট্রাম্প ও চীনের শীর্ষ নেতা শি জিনপিংয়ের মধ্যে কোনো বাস্তব কথোপকথন বা তাদের ঊর্ধ্বতন সহযোগীদের মধ্যে কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না।

গত বুধবার ট্রাম্পের তাড়াহুড়া করে তৈরি করা দেশভিত্তিক শুল্ক নির্ধারণের সূত্রে চীনের সব পণ্যের ওপর ৩৪ শতাংশ কর আরোপ করা হয়েছিল। গাড়ির যন্ত্রাংশ থেকে শুরু করে আইফোন, ওয়ালমার্ট ও অ্যামাজনের অ্যাপে যা আছে তার বেশির ভাগই এসেছে এর আওতায়। যখন জিনপিং পাল্টা পদক্ষেপ নেন, তখন ট্রাম্প তাঁকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আলটিমেটাম দেন। এমন একজন নেতার সামনে তিনি লাল পতাকা তুলে ধরেন, যিনি কখনও ওয়াশিংটনের সামনে নতজানু বা পিছু হটতে চান না। গতকাল বুধবার উত্তেজনা হ্রাসের জন্য কোনো দৃশ্যমান কৌশল ছাড়াই শুল্ক ১০৪ শতাংশে পৌঁছে যায়।

বিশ্লেষকরা জানান, ট্রাম্প প্রশাসনের এ শুল্ক আরোপের জেরে চীনে থাকা মার্কিন কোম্পানিগুলোকে মূল্য দিতে হবে। চীন এখনও মার্কিন শুল্কের প্রতিক্রিয়া পুরোপুরি স্পষ্ট করেনি। তবে তাদের হাতে কেবল একের পর এক শুল্ক আরোপ করার চেয়েও বেশি কিছু রয়েছে। ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের নিক মারোর মতে, উদাহরণস্বরূপ বেইজিং চীনে কর্মরত মার্কিন কোম্পানিগুলোর জীবনকে আরও কঠিন করে তুলতে পারে।

মারো আলজাজিরাকে বলেন, বেইজিংয়ের কর্মকর্তারা এখনও বিশ্বাস করেন, মার্কিন করপোরেট খাত এ উত্তেজনা কমাতে ভূমিকা রাখতে পারে। আমি মনে করি, বাস্তবে মার্কিন কোম্পানিগুলোর প্রভাব আগের তুলনায় অনেক কম এবং বেইজিং তাদের যে কৃতিত্ব দেয়, তার চেয়ে অনেক কম।

তিনি বলেন, এর অর্থ হলো, চীন যদি মনে করে মার্কিন ব্যবসায়িক খাত এ উত্তেজনা কমানোর জন্য যথেষ্ট চেষ্টা করছে না, তাহলে তারা আরও বেশি উগ্র প্রতিক্রিয়া ও কোম্পানিগুলোকে শাস্তি দেওয়ার জন্য আরও কঠোর প্রতিক্রিয়ার কথা ভাবতে পারে। মারো জানান, ট্রাম্পের প্রথম বাণিজ্যযুদ্ধের সময় বেইজিং একই ধরনের কৌশল নিয়েছিল। কিন্তু এর প্রভাব সম্পূর্ণরূপে পরিমাপ করা কঠিন ছিল। কারণ, তখন অনেক মার্কিন কোম্পানি নীরব ছিল; তারা চীনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে আলোচনা করে কিছু বিষয় সঠিক জায়গায় রেখেছিলেন। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কর মকর ত র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

শিশু ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন, মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা 

ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার উত্তমপুর গুচ্ছগ্রাম এলাকায় দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া এক ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে আদর্শগ্রাম নূরানী মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও শিক্ষক শাহাদাৎ হোসেনের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিকালে মাদ্রাসায় কোচিংয়ে পড়তে গেলে শিক্ষক শাহাদাৎ হোসেন ওই শিক্ষার্থীর উপর যৌন নির্যাতন চালান বলে জানিয়েছেন শিশুটির মা।

শিশুটির পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার বিকেলে বৃষ্টি হওয়ায় মাদ্রাসার কোচিংয়ে মাত্র চারজন শিক্ষার্থী উপস্থিত হয়। তাদের মধ্যে দুইজনকে ছুটি দিয়ে দুইজনকে মাদ্রাসায় রেখে দেন শিক্ষক শাহাদাৎ হোসেন। তাদের মধ্যে একজন ছেলে ও ভুক্তভোগী ছিল মেয়ে। শিক্ষক শাহাদাৎ হোসেন ছেলেটিকে কৌশলে মাদ্রাসার রুম ঝাড়ু দিতে পাঠিয়ে দেন। মেয়েটিকে তার কোলের উপর বসিয়ে অশালীন আচরণ করেন। মাদ্রাসার পাশের ভবনের কক্ষ থেকে একটি মেয়ে সেই দৃশ্য দেখে ফেলেন।  

আরো পড়ুন:

অপারেশনের পর শিশুর মৃত্যু: তদন্ত কমিটি গঠন, থানায় মামলা

বানরের সহযোগিতায় ধর্ষণের হাত থেকে বাঁচলো শিশু

পরে শিক্ষক শাহাদাৎ হোসেন ওই শিশুকে মাদ্রাসায় তার বিশ্রাম কক্ষে নিয়ে যৌন নির্যাচন চালান। এ সময় শিশুটি চিৎকার করলে তাকে ট্যাবলেট খাইয়ে দিয়ে মুখের ভিতরে কাপড় ঢুকিয়ে আবারো যৌন নির্যাচন চালান। এরপর কক্ষটি তালা দিয়ে অন্যত্র চলে যান। শিশুটি চিৎকার করলে অপর শিক্ষার্থী তালা খুলে তাকে বাইরে বের করে আনে।

এ ঘটনা জানাজানি হলে স্থানীয়রা ক্ষিপ্ত হয়ে মাদ্রাসায় ভাঙচুর চালায়। এর আগেও শাহাদাৎ হোসেন কয়েকবার শিশু শিক্ষার্থীর সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছেন বলে স্থানীয়রা জানান। 

শিক্ষক শাহাদাৎ হোসেন তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, পূর্বশত্রুতার জের ধরে তাকে ফাঁসাতে এবং প্রতিষ্ঠানটি শেষ করে দেয়ার জন্য ষড়যন্ত্র চলছে।

রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন জানান, খবর পেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। 
 

ঢাকা/অলোক/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজায় ত্রাণ নেওয়ার কয়েক মিনিট পর হত্যা করা হয় ক্ষুধার্ত শিশুটিকে: সাবেক মার্কিন সেনা কর্মকর্তা
  • থানা হোক ন্যায়বিচারের প্রথম ঠিকানা: আইজিপি
  • থানায় হয়রানিমুক্ত সেবা দেওয়ার আহ্বান আইজিপির
  • ট্রাম্পবিরোধী স্লোগান দিয়ে উড়োজাহাজে গ্রেপ্তার ভারতীয় বংশোদ্ভূত যুক্তরাজ্যের নাগরিক
  • শিক্ষার গতিপথ ও উন্নয়ন নিয়ে ঢাবিতে সেমিনার
  • শিশু ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন, মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা 
  • ‘আমি কী অপরাধ করেছি’— সবাই জানেন শিরোনামটা...
  • ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি ট্রাম্পের
  • মেসি বনাম ইয়ামাল: ফিনালিসিমার সময়-সূচি ঘোষণা
  • গংগাচড়ায় হিন্দুদের ঘরবাড়ি মেরামতের উদ্যোগ, আতঙ্ক কাটেনি এখনও