Samakal:
2025-06-16@05:16:02 GMT

বড় উৎসবের আগে রঙিন পাহাড়

Published: 10th, April 2025 GMT

বড় উৎসবের আগে রঙিন পাহাড়

মঞ্চে ঐতিহ্যবাহী লাল-হলুদ পোশাক পরে তরুণীরা নৃত্যরত। তাদের হাতে হলুদ রঙের ছাতা। মঞ্চ সাজানো হয়েছে নানা রঙের বেলুন দিয়ে। মূলত পাহাড়ের সবচেয়ে বড় উৎসবকে স্বাগত জানাতেই রঙিন এ আয়োজন। 

গতকাল বুধবার খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের উদ্যোগে এ আয়োজন করা হয়। জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে শিল্পীরা গান ও নৃত্য পরিবেশন করে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বৈসু, মারমা সম্প্রদায়ের সাংগ্রাই, চাকমা সম্প্রদায়ের বিজু ও বাঙালির চৈত্রসংক্রান্তি এবং বর্ষবরণ উৎসবকে (বৈসাবি) স্বাগত জানান। এর আগে সকালে জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে বৈসাবি উৎসবের প্রাথমিক আয়োজনের উদ্বোধন করেন খাগড়াছড়ি রিজিয়নের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ মো.

আমান হাসান। আগামী ১২ এপ্রিল থেকে তিন দিনের মূল উৎসব শুরু হওয়ার কথা।

পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি সম্প্রদায়ের প্রধান এ উৎসব সামনে রেখে বুধবার রাঙামাটিতে বর্ণাঢ্য র‍্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তারা পুরোনো বছরের সব দুঃখ-কষ্ট-গ্লানি মুছে দিয়ে বাংলার নতুন বছরে সবার সুখ-শান্তির প্রত্যাশা করেন।

বিজু-সাংগ্রাই-বৈসুক-বিষু-বিহু উদযাপন কমিটির উদ্যোগে রাঙামাটি পৌরসভা প্রাঙ্গণে বেলুন উড়িয়ে র‍্যালির উদ্বোধন করেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কাজল তালুকদার। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চাকমা সার্কেল চিফ দেবাশীষ রায়। উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক প্রকৃতি রঞ্জন চাকমার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহসভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য উষাতন তালুকদার। স্বাগত বক্তব্য দেন উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ইন্টুমণি তালুকদার। 

অনুষ্ঠানের শুরুতে আদিবাসী পাহাড়ি শিল্পীরা মনোমুগ্ধকর নৃত্য পরিবেশন করেন। পরে পৌরসভা প্রাঙ্গণ থেকে জেলা শিল্পকলা একাডেমি চত্বর পর্যন্ত একটি বর্ণাঢ্য র‍্যালি বের করা হয়। আদিবাসী পাহাড়ি নারী-পুরুষ র‍্যালিতে অংশ নেন তাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে চাকমা সার্কেল চিফ দেবাশীষ রায় বলেন, দেশে বিভিন্ন সংস্কার কমিশন গঠিত হয়েছে। অধিকাংশ কমিশন প্রতিবেদনে আদিবাসীদের স্বকীয়তা ও বাংলাদেশের বহুত্ববাদের কথা প্রতিফলিত হবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন। কিন্তু এসব প্রতিবেদন তাঁর আশা পূরণে সক্ষম হয়নি। সামনের বিজু সাংগ্রাইং বৈসুক উৎসবটি সবার বাড়িতে সমৃদ্ধি বয়ে আনবে ও পাহাড়ে শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠা পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। 

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঊষাতন তালুকদার বিজু, সাংগ্রাই, বৈসুক উৎসবের শুভদিনে যাতে সবাই একসঙ্গে নাচ-গানে, সুন্দর ও সাবলীলভাবে উদযাপন করতে পারে, সে জন্য সবার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান। 

বিজু-সাংগ্রাই-বৈসু-বিষু-বিহু-চাংক্রান পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী পাহাড়ি সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী প্রধান সামাজিক উৎসব। বাংলা বর্ষের শেষ দু’দিন ও নতুন বছরের প্রথম দিন এ উৎসব উদযাপন করে থাকে পাহাড়িরা। উৎসবটি উচ্চারণগতভাবে বিভিন্ন নামে উদযাপন করলেও এর নিবেদন একই। তাই উৎসবটি আদিবাসী পাহাড়িদের শুধু আনন্দের নয়; পার্বত্য চট্টগ্রামের সব সম্প্রদায়ের সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ঐক্য ও মৈত্রী বন্ধনের প্রতীক বটে।

বিজু-সাংগ্রাই-বৈসু উৎসব উপলক্ষে নানা আয়োজন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে উদ্বোধনী দিনে খেলাধুলা, বলিখেলা ও কাপ্তাই হ্রদের পানিতে ফুল নিবেদন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। পরদিন রয়েছে আপ্যায়ন ও ঘুরে বেড়ানোর আয়োজন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প র ঙ গণ অন ষ ঠ

এছাড়াও পড়ুন:

বকুলতলায় বৃষ্টির সুর

নীল-সাদা পোশাকে সজ্জিত হয়ে নানা বয়সী মানুষ এসে জড়ো হতে থাকেন। যেন শহরের হৃদয়ে নেমে আসে গ্রামবাংলার ঘ্রাণ। মেঘলা আকাশের নিচে কণ্ঠে সুর, পায়ে তাল, কল্পনায় বর্ষার রূপই দেখা যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় গতকাল রোববার এভাবে উদযাপন হলো ‘বর্ষা উৎসব ১৪৩২’।
বর্ষা উৎসব উদযাপন পরিষদের আয়োজনে আষাঢ়ের প্রথম দিনে রাগ, রস ও রং মিলে তৈরি হলো এক বর্ষামুখর ক্যানভাস। এবারের আয়োজনে সহযোগিতায় ছিল সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন নবীন সংগীতশিল্পী সোহানী মজুমদার। সেতারের কোমল তারে বেজে ওঠে রাগ ‘আহীর ভৈরব’। রাগভিত্তিক এ পরিবেশনার মধ্য দিয়ে মিলে যায় প্রাচ্যের সংগীত ঐতিহ্য ও বর্ষার আধ্যাত্মিকতা। সেই মুহূর্তে বকুলতলায় যেন ভেসে বেড়ায় বৃষ্টির সুর আর আকাশের নরম আলো।
‘বর্ষাকথন’ পর্বে বর্ষার ভাবনা, পরিবেশ ও সময়ের প্রেক্ষাপটে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ গণসংগীত সমন্বয় পরিষদের সভাপতি শিল্পী কাজী মিজানুর রহমান।
ঘোষণা পাঠ করেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী সুইট এবং সভাপতিত্ব করেন লেখক ও গবেষক অধ্যাপক ড. নিগার চৌধুরী। সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন সংস্কৃতিকর্মী নুসরাত ইয়াসমিন রুম্পা।
ঘোষণাপত্র পাঠে জানানো হয়, ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশে আজ ঋতুচক্রে দেখা দিচ্ছে অসামঞ্জস্য। গ্রীষ্ম হয়ে উঠছে খরতর, বর্ষা রুষ্ট, বসন্ত ক্ষীয়মাণ। এই পরিবর্তনের মূলে রয়েছে মানুষের সীমাহীন ভোগবাদী আচরণ, প্রকৃতির ওপর অনবরত অনাচার। ভূপৃষ্ঠ উত্তপ্ত, সমুদ্রজল স্ফীত, ওজোনস্তর ক্ষতিগ্রস্ত– প্রকৃতি আজ সংকটে।
এ প্রসঙ্গে মানজার চৌধুরী সুইট সমকালকে বলেন, এ উৎসব শহুরে জীবনে আমরা প্রায় ১৮ বছর ধরে পালন করে আসছি। উৎসবের শিকড় নিহিত রবীন্দ্রনাথের ‘বর্ষামঙ্গল’-এ। আমরা তারই উত্তরসূরি হয়ে আষাঢ়ের প্রথম দিনটিকে উদযাপনের সিদ্ধান্ত নিই। এতে শুধু প্রকৃতির সৌন্দর্য নয়, বরং তার সংকটও তুলে ধরা হয়। আমরা চাই, আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম প্রকৃতির সঙ্গে সম্পর্ক 
গড়ুক, তার বিপন্নতাকে বুঝুক এবং তা রক্ষায় সক্রিয় হোক।
তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা যে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলাম, এ ধরনের উৎসবই সেই স্বপ্নের বাস্তব রূপ। শিকড়ের দিকে ফিরে যাওয়ার মধ্যে নিহিত আমাদের সংস্কৃতি ও চেতনার পুনর্জাগরণ।
বর্ষা মানে নতুন জন্মের বারতা। সেই বারতা ছড়িয়ে দিতে উৎসবে প্রতীকীভাবে শিশু-কিশোরের হাতে তুলে দেওয়া হয় বনজ, ফলদ ও ঔষধি গাছের চারা। এই চারাগুলো শুধু বৃক্ষ নয়, বরং হয়ে উঠেছে সবুজ ভবিষ্যতের আশ্বাস।
উৎসবে একক সংগীত পরিবেশন করেন ইয়াসমিন মুশতারী, সালাউদ্দিন আহমেদ, বিজন চন্দ্র মিস্ত্রী ও নবনীতা জাইদ চৌধুরী অনন্যা।
রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশন করেন অণিমা রায়, শামা রহমান, মকবুল হোসেন ও ফেরদৌসী কাকলি। লোকসংগীত পরিবেশন করেন বিমান চন্দ্র বিশ্বাস, শ্রাবণী গুহ রায় ও এস এম মেজবাহ। আধুনিক গান গাইতে মঞ্চে ওঠেন রত্না সরকার।
দলীয় সংগীতে অংশ নেয় সীমান্ত খেলাঘর আসর (শিশু-কিশোর), সুর বিহার, বহ্নিশিখা, সুর নন্দন এবং সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী। আবৃত্তি পরিবেশন করেন নায়লা তারাননুম চৌধুরী কাকলি ও আসান উল্লাহ তমাল। শিল্পবৃত্ত শিশু-কিশোর দল পরিবেশন করে আবৃত্তি ও নৃত্য কোলাজ।
নৃত্য পরিবেশনায় অংশ নেয় ধৃতি নর্তনালয়, নৃত্যাক্ষ, স্পন্দন, বেমুকা ললিতকলা কেন্দ্র, সিনথিয়া একাডেমি অব আর্টস ও নৃত্যম।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বকুলতলায় বৃষ্টির সুর
  • নির্বাচন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রস্তুতি রয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • ১০ দিন পর বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে বাণিজ্য শুরু 
  • ঈদের ছুটি শেষে ব্যাংক খুলেছে, ভিড় নেই তেমন
  • ছুটি শেষে ব্যাংক ও শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হচ্ছে কাল
  • টানা ১০ দিনের ছুটি শেষ, রবিবার খুলছে সরকারি অফিস
  • চেনা রূপে বরিশাল নদীবন্দর, ঈদফেরত যাত্রীদের ভিড়
  • রাজশাহীতে ঢাকাগামী টিকিটে বাড়তি ভাড়া আদায়, ৩ কাউন্টারকে জরিমানা
  • কাহালুর জামাই মেলায় মানুষের ঢল
  • ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ে ঈদের সেরা চার নাটক