মঞ্চে ঐতিহ্যবাহী লাল-হলুদ পোশাক পরে তরুণীরা নৃত্যরত। তাদের হাতে হলুদ রঙের ছাতা। মঞ্চ সাজানো হয়েছে নানা রঙের বেলুন দিয়ে। মূলত পাহাড়ের সবচেয়ে বড় উৎসবকে স্বাগত জানাতেই রঙিন এ আয়োজন।
গতকাল বুধবার খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের উদ্যোগে এ আয়োজন করা হয়। জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে শিল্পীরা গান ও নৃত্য পরিবেশন করে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বৈসু, মারমা সম্প্রদায়ের সাংগ্রাই, চাকমা সম্প্রদায়ের বিজু ও বাঙালির চৈত্রসংক্রান্তি এবং বর্ষবরণ উৎসবকে (বৈসাবি) স্বাগত জানান। এর আগে সকালে জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে বৈসাবি উৎসবের প্রাথমিক আয়োজনের উদ্বোধন করেন খাগড়াছড়ি রিজিয়নের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ মো.
পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি সম্প্রদায়ের প্রধান এ উৎসব সামনে রেখে বুধবার রাঙামাটিতে বর্ণাঢ্য র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তারা পুরোনো বছরের সব দুঃখ-কষ্ট-গ্লানি মুছে দিয়ে বাংলার নতুন বছরে সবার সুখ-শান্তির প্রত্যাশা করেন।
বিজু-সাংগ্রাই-বৈসুক-বিষু-বিহু উদযাপন কমিটির উদ্যোগে রাঙামাটি পৌরসভা প্রাঙ্গণে বেলুন উড়িয়ে র্যালির উদ্বোধন করেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কাজল তালুকদার। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চাকমা সার্কেল চিফ দেবাশীষ রায়। উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক প্রকৃতি রঞ্জন চাকমার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহসভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য উষাতন তালুকদার। স্বাগত বক্তব্য দেন উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ইন্টুমণি তালুকদার।
অনুষ্ঠানের শুরুতে আদিবাসী পাহাড়ি শিল্পীরা মনোমুগ্ধকর নৃত্য পরিবেশন করেন। পরে পৌরসভা প্রাঙ্গণ থেকে জেলা শিল্পকলা একাডেমি চত্বর পর্যন্ত একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়। আদিবাসী পাহাড়ি নারী-পুরুষ র্যালিতে অংশ নেন তাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে চাকমা সার্কেল চিফ দেবাশীষ রায় বলেন, দেশে বিভিন্ন সংস্কার কমিশন গঠিত হয়েছে। অধিকাংশ কমিশন প্রতিবেদনে আদিবাসীদের স্বকীয়তা ও বাংলাদেশের বহুত্ববাদের কথা প্রতিফলিত হবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন। কিন্তু এসব প্রতিবেদন তাঁর আশা পূরণে সক্ষম হয়নি। সামনের বিজু সাংগ্রাইং বৈসুক উৎসবটি সবার বাড়িতে সমৃদ্ধি বয়ে আনবে ও পাহাড়ে শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠা পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঊষাতন তালুকদার বিজু, সাংগ্রাই, বৈসুক উৎসবের শুভদিনে যাতে সবাই একসঙ্গে নাচ-গানে, সুন্দর ও সাবলীলভাবে উদযাপন করতে পারে, সে জন্য সবার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
বিজু-সাংগ্রাই-বৈসু-বিষু-বিহু-চাংক্রান পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী পাহাড়ি সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী প্রধান সামাজিক উৎসব। বাংলা বর্ষের শেষ দু’দিন ও নতুন বছরের প্রথম দিন এ উৎসব উদযাপন করে থাকে পাহাড়িরা। উৎসবটি উচ্চারণগতভাবে বিভিন্ন নামে উদযাপন করলেও এর নিবেদন একই। তাই উৎসবটি আদিবাসী পাহাড়িদের শুধু আনন্দের নয়; পার্বত্য চট্টগ্রামের সব সম্প্রদায়ের সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ঐক্য ও মৈত্রী বন্ধনের প্রতীক বটে।
বিজু-সাংগ্রাই-বৈসু উৎসব উপলক্ষে নানা আয়োজন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে উদ্বোধনী দিনে খেলাধুলা, বলিখেলা ও কাপ্তাই হ্রদের পানিতে ফুল নিবেদন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। পরদিন রয়েছে আপ্যায়ন ও ঘুরে বেড়ানোর আয়োজন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
পূজাকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলায় বাহিনী তৎপর : ডিসি
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, আইনসৃঙ্খলা স্বাভাবিক রয়েছে, বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজাকে ঘিরে সকল ধর্মমত, সকল সম্প্রদায় তারা একত্রিত হয়েছে।
সকলেই সার্বিক সহয়তা করছে যাতে করে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা উৎসব সুন্দর ভাবে পজলন করতে পারে। পূজাকে ঘিরে একটি গোষ্ঠি চাইবে পূজা উৎসব নষ্ট করে দেয়ার জন্য।
সে জন্য আমাদের তৎপরতা রয়েছে। আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। তার পাশাপাশি র্যাব, বিজিবি, সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশবাহিহনী সবাই কাজ করছে যাতে করে সুন্দর ভাবে পূজা উৎসব শেষ করতে পারি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে ৫নং ঘাটে দূর্গা পূজার প্রতিমা বিসর্জনের স্থান পরিদর্শনকালে তিনি এ নির্দেশনা দেন।
দূর্গা পূজা বিজয়া দশমী শেষে প্রতিমা বিসর্জনের সময় যেকোনো অপ্রীতিকর দূর্ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সুন্দর ভাবে প্রতিমা বিসর্জনের স্থান নিরাপদ রাখতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন জেলা প্রশাসক।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, নারায়ণগঞ্জের ২২৩টি পূজা মণ্ডপে সুষ্ঠুভাবে পূজা উদযাপনে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে এবং সম্প্রীতি বজায় রেখে বর্তমানে পূজা উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে।
এসময় তিনি প্রতিটি মণ্ডপে সুষ্ঠুভাবে ও নির্বিঘ্নে পূজা অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে যথাযথ সহযোগিতার নির্দেশনা দেন।
তিনি বলেন, সকলে মিলে সব উৎসব উদযাপন করাই বাংলার ঐতিহ্য ও গৌরব।
এসময় জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিআইডব্লিউটিএ, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।