Risingbd:
2025-09-18@04:28:30 GMT

বৈসাবি উৎসব ঘিরে রঙিন পাহাড়

Published: 11th, April 2025 GMT

বৈসাবি উৎসব ঘিরে রঙিন পাহাড়

পাহাড়ের সবচেয়ে বড় সামাজিক উৎসব বৈসাবি। কাপ্তাই হ্রদের পানিতে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে শনিবার (১২ এপ্রিল) রাঙামাটিতে শুরু হচ্ছে এই উৎসবের মূল আয়োজন। নতুন বছরকে বরণের এই বৈসাবি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের কাছে প্রাণের উৎসব হিসেবেই পরিচিত।

চাকমাদের ভাষায় বৈসাবি উৎসবকে ‘বিঝু’, ত্রিপুরাদের ভাষায় ‘বৈসুক’, মারমাদের ভাষায় ‘সাংগ্রাই’, তংচঙ্গ্যাদের ভাষায় ‘বিসু’ এবং অহমিয়াদের ভাষায় ‘বিহু’ নামে আখ্যায়িত করা হয়। নামের আদ্যক্ষর নিয়েই এই মহান উৎসবকে বলা হয় ‘বৈসাবি’ উৎসব। 

চাকমা, মারমা, ত্রিপুরাসহ পার্বত্য অঞ্চলের প্রায় প্রতিটি জনগোষ্ঠী নিজেদের সংস্কৃতি ও বিশ্বাস থেকে নববর্ষের অনুষ্ঠান আয়োজন করে। প্রতিটি জনগোষ্ঠীর অনুষ্ঠানে জড়িত থাকে তাদের নিজেদের প্রথা ও সংস্কার। চৈত্র মাসের শেষ দুইদিন এবং বৈশাখ মাসের প্রথম দিন অনুষ্ঠান পালন করেন তারা। 

আরো পড়ুন:

মুন্সীগঞ্জের ধলেশ্বরীতে অষ্টমী স্নানোৎসব 

কর্মস্থলে ফিরছেন উত্তরাঞ্চলের মানুষ 

উৎসবের প্রথম দিন পানিতে ফুল ভাসানোর পর বাসায় গিয়ে ফুল ও নিমপাতা দিয়ে ঘর সাজান পাহাড়ের তরুণ-তরুণীরা। তারা বৃদ্ধ ঠাকুরদা-ঠাকুরমাকে স্নান করিয়ে তাদের কাছ থেকে আশীর্বাদ নেন। চৈত্র মাসের শেষ দিন অর্থাৎ ১৩ এপ্রিল পালন করা হয় মূল বিঝু। এদিন সকালে বুদ্ধমূর্তি স্নান করিয়ে পূজা করেন চাকমারা।

চাকমাদের বিঝুর প্রথম দিনের নাম ফুল বিঝু। দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ চৈত্রের শেষ দিন থেকে শুরু হয় খাওয়াদাওয়া, অতিথি আপ্যায়নের মূল পর্ব। এদিন, ঘরে ঘরে চলে পাঁজন আতিথেয়তা। বিঝু আর পাঁজন এই দুটি শব্দ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। 

বিভিন্ন ধরনের সবজি যেমন- আলু, পেঁপে, গাজর, বরবটি, কচু, লাউ, কাঁচকলা, কচি কাঁঠাল, সজনে ডাটা, বন থেকে সংগ্রহ করা নানা প্রকারের সবজি কেটে ধুয়ে নিয়ে শুটকি বা চিংড়ি মাছ দিয়ে ঐতিহ্যবাহী পাঁজন তোন বা তরকারি রান্না করেন চাকমা নারীরা। ১১টি পদ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৪১টি পদ দিয়ে রান্না করা হয় পাঁজন। এই পাঁজন খেলে শারীরিকভাবে সুস্থ ও রোগ থেকে মুক্ত থাকা যায় বলে বিশ্বাস করেন পাহাড়ের অধিবাসীরা। তাই বছর শেষে নতুন বছরে সুস্থ থাকার প্রত্যয়ে পাঁজন খাওয়া হয়। বিঝুর দিনে সাতটি বাসায় পাঁজন খাওয়া শুভ বলে বিশ্বাস করেন চাকমারা।

নতুন বছর বিহারে গিয়ে প্রার্থনা করেন চাকমারা। এদিন ঐতিহ্যবাহী খাবার যেমন থাকে, তেমনি থাকে বিভিন্ন ধরনের পিঠাও। বিন্নি চালের বড়া পিঠা এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য।

চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা-এই তিন জনগোষ্ঠীর অনুষ্ঠান প্রায় একই ধরনের হলেও মারমা জনগোষ্ঠী নববর্ষে পানিখেলা খেলে থাকে। মূলত তরুণ-তরুণীদের অংশগ্রহণে এ পানিখেলা হয়। বড় কোনো গাছের নিচে প্রদীপ জ্বালিয়ে তাকে সম্মান প্রদর্শন করে জীবন ও প্রতিবেশকে রক্ষা করার জন্য। 

গৃহপালিত পশুদের বিশ্রাম দেওয়ার রেওয়াজও রয়েছে এদিন। বিঝু উৎসব চলাকালে চাকমারা কোনো জীবিত প্রাণী হত্যা করেন না। 

১২ এপ্রিল থেকে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত বৈসাবি’র মূল আনুষ্ঠানিকতা হলেও পাহাড়ে এই উৎসব আয়োজনের প্রস্তুতি শুরু হয় এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ থেকে। সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা ও মেলাসহ নানা আয়োজন চলতে থাকে এসময়। 

গত ৩ এপ্রিল রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে সপ্তাহব্যাপী মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়। এছাড়া ৯ এপ্রিল থেকে বিঝু-সাংগ্রাই-বৈসু-বিষু-বিহু-সাংক্রাই-চাংক্রান-পাতা উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে চার দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, নদীতে ফুল ভাসানোসহ বিভিন্ন উৎসবের আয়োজন করে।

বিঝু-সাংগ্রাই-বৈসু-বিষু-বিহু-সাংক্রাই-চাংক্রান-পাতা উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব ইন্টু মনি তালুকদার বলেন, “পাহাড়ের ১৪টি ভাষাভাষী ও জাতিগোষ্ঠীর মানুষের মধ্যে যে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ঐতিহ্যগত মেলবন্ধন আছে সেটি তুলে ধরার জন্যই আমরা প্রতিবছর এই আয়োজন করি। প্রতিবছর আমাদের একটি প্রতিপাদ্য থাকে। আমরা আমাদের দাবিগুলোও সরকারের কাছে তুলে ধরি। আমি মনে করি, আমাদের দাবি পূরণের মাধ্যমে পাহাড়ে বসবাসকারীদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন হবে এবং সরকারেরও ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে।”

রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ বলেন, “পাহাড়ের বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে। তাদের বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি ও উৎসব রয়েছে। বহু সংস্কৃতির পীঠস্থান রাঙামাটির সংস্কৃতিকে আমরা বিশ্ববাসীর কাছে যাতে তুলে ধরতে পারি সে চেষ্টা করা হচ্ছে।  উৎসবকে ঘিরে ইতোমধ্যে পার্বত্য রাঙামাটি উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে।”

রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজল তালুকদার বলেন, “পার্বত্যাঞ্চলের ১৩টি জনগোষ্ঠী তাদের স্ব স্ব নামে বাংলা বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়ে থাকে। এই উৎসব ঘিরে এখানকার মানুষের মধ্যে  ভ্রাতৃত্ববোধ তৈরি হয়। উৎসবের রঙ ছড়িয়ে দিতে জেলা পরিষদ সাত দিনব্যাপী মেলার আয়োজন করেছে।”

ঢাকা/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উৎসব অন ষ ঠ ন র প রথম জনগ ষ ঠ উৎসব র চ কম র

এছাড়াও পড়ুন:

‎পূজাকে  ঘিরে আইনশৃঙ্খলায় বাহিনী তৎপর : ডিসি

‎নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, আইনসৃঙ্খলা স্বাভাবিক রয়েছে, বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজাকে ঘিরে সকল ধর্মমত, সকল  সম্প্রদায় তারা একত্রিত হয়েছে।

সকলেই সার্বিক সহয়তা করছে যাতে করে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা উৎসব সুন্দর ভাবে পজলন করতে পারে। পূজাকে ঘিরে  একটি গোষ্ঠি চাইবে পূজা উৎসব নষ্ট করে দেয়ার জন্য। 

সে জন্য আমাদের তৎপরতা রয়েছে। আমাদের  গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। তার পাশাপাশি র‍্যাব, বিজিবি,  সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশবাহিহনী সবাই কাজ করছে যাতে করে সুন্দর ভাবে পূজা উৎসব শেষ করতে পারি।

‎‎মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর)  শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে ৫নং ঘাটে দূর্গা পূজার প্রতিমা বিসর্জনের স্থান পরিদর্শনকালে তিনি এ নির্দেশনা দেন।

‎দূর্গা পূজা বিজয়া দশমী শেষে প্রতিমা বিসর্জনের সময় যেকোনো অপ্রীতিকর দূর্ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সুন্দর ভাবে প্রতিমা বিসর্জনের স্থান নিরাপদ রাখতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন জেলা প্রশাসক।

‎‎জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, নারায়ণগঞ্জের ২২৩টি পূজা মণ্ডপে সুষ্ঠুভাবে পূজা উদযাপনে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে এবং সম্প্রীতি বজায় রেখে বর্তমানে পূজা উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে।

‎‎এসময় তিনি প্রতিটি মণ্ডপে সুষ্ঠুভাবে ও নির্বিঘ্নে পূজা অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে যথাযথ সহযোগিতার নির্দেশনা দেন।

‎‎তিনি বলেন, সকলে মিলে সব উৎসব উদযাপন করাই বাংলার ঐতিহ্য ও গৌরব।

‎‎এসময় জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিআইডব্লিউটিএ, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • উৎসব ঘুরে প্রেক্ষাগৃহে ‘বাড়ির নাম শাহানা’
  • কেইনের জোড়া গোলে চেলসিকে হারাল বায়ার্ন, চ্যাম্পিয়ন পিএসজির গোল উৎসব
  • কারও কোনো অপরাধ নাই
  • বিশ্বকর্মা পূজা: গাঙ্গেয় শিল্পের উৎসব
  • আজ থেকে বুসান উৎসব, নানাভাবে রয়েছে বাংলাদেশ
  • ‎সকলে মিলে সব উৎসব উদযাপন করাই বাংলার ঐতিহ্য ও গৌরব : ডিসি
  • ‎পূজাকে  ঘিরে আইনশৃঙ্খলায় বাহিনী তৎপর : ডিসি
  • ঘুম থেকে অনন্ত ঘুমে অস্কারজয়ী রবার্ট রেডফোর্ড
  • ২০০ বছরের ঐতিহ্য নিয়ে ভোলার বৈষা দধি
  • শেষ হলো সপ্তম যোসেফাইট ম্যাথ ম্যানিয়া ২০২৫