গ্যাগারিন বিজ্ঞান উৎসবে রকেট মডেল তৈরি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত
Published: 11th, April 2025 GMT
ঢাকাস্থ রাশিয়ান হাউজের আয়োজনে গ্যাগারিন বিজ্ঞান ও শিল্প উৎসব-২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে। উৎসবের তৃতীয় দিনে মহাকাশ বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবন উদযাপনের জন্য একটি আকর্ষণীয় রকেট মডেল তৈরি প্রতিযোগিতা এবং সনদ বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়।
ঢাকাস্থ রাশিয়ান হাউজ বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতায় এই প্রাণবন্ত প্রতিযোগিতার আয়োজন করে যেখানে অংশগ্রহণকারীদের উদ্ভাবনী দক্ষতা, কারিগরি দক্ষতা এবং মহাকাশ গবেষণায় উৎসাহ তুলে ধরা হয়।
এতে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থী, ঢাকা ও আশপাশের শিক্ষক, এনজিও সদস্য এবং প্রবীণ নাগরিকরা অংশ নেন। তাদের কাগজের রকেট মডেলগুলি কেবল প্রযুক্তিগত জ্ঞানই নয়, কল্পনা, দলবদ্ধভাবে কাজ করা এবং ইউরি গ্যাগারিনের ঐতিহাসিক মহাকাশ যাত্রার দ্বারা অনুপ্রাণিত একটি অগ্রণী মনোভাবকেও প্রতিফলিত করে।
আরো পড়ুন:
বৃহস্পতিবার তুরস্কে আবারো বৈঠকে বসছে রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র
জেলেনস্কির শহরে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত ১৮
অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশে ঢাকাস্থ রাশিয়ান হাউজের পরিচালক পাভেল দভোইচেনকভ তাদের অসামান্য সৃজনশীলতা ও অংশগ্রহণের জন্য সবাইকে অভিনন্দন জানান।
তিনি বলেন, “আজকের কাগজের রকেট তৈরির কার্যক্রমের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীরা একদিন সত্যিকারের রকেট বা আরো উন্নত মহাকাশযান তৈরিতে অনুপ্রাণিত হতে পারে।”
তিনি আরো বলেন, “এ ধরনের উদ্যোগ তরুণদের মনকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির আকর্ষণীয় জগতের কাছাকাছি নিয়ে আসে। অনুসন্ধানের চেতনা পরবর্তী প্রজন্মের অনুসন্ধানকারী, প্রকৌশলী এবং উদ্ভাবকদের মধ্যে বেঁচে আছে।”
পরিচালক শিক্ষামূলক উদ্যোগে সমর্থন এবং বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের রাশিয়ায় উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে সাংস্কৃতিক ও শিক্ষাগত সম্পর্ক জোরদারে প্রতিষ্ঠানটির আত্মনিবেদনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
দভোইচেনকভ ব্যক্তিগতভাবে সব অংশগ্রহণকারীকে তাদের উদ্ভাবন এবং সাফল্যের স্বীকৃতি হিসাবে সনদপত্র প্রদান করে অনুষ্ঠানটি শেষ হয়।
ঢাকা/হাসান/এসবি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
রাঙামাটি রাজবন বিহারে দুদিনের কঠিন চীবর দানোৎসব শুরু
রাঙামাটির রাজবন বিহারে বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান উৎসব কঠিন চীবর দানোৎসব শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিকেলে দুদিনব্যাপী এ উৎসবের উদ্বোধন করেন রাজবন বিহারের আবাসিক প্রধান প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবির।
উদ্বোধনের পর চরকায় সুতা কেটে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের চীবর (পরার কাপড়) তৈরি কার্যক্রমের সূচনা করেন বিশিষ্ট নারী উদ্যোক্তা মঞ্জুলিকা খীসা। এটি রাজবন বিহারের ৪৯তম কঠিন চীবর দানোৎসব।
এর আগে, বেইন ঘরে পঞ্চশীল প্রদান করেন প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবির। এ সময় পূণ্যার্থীদের সাধু সাধু ধ্বনিতে মুখরিত হয় পুরো রাজবন বিহার প্রাঙ্গণ।
রাজবন বিহারের কার্যকরী কমিটি সূত্রে জানা গেছে, রাজবন বিহারের বিশাল এলাকা জুড়ে প্রায় ২০০টি বেইন স্থাপন করা হয়েছে। এতে হাজারো নারী-পুরুষ চীবর প্রস্তুত কাজে অংশগ্রহণ করেছেন। সারারাত ব্যাপী চীবর তৈরির কার্যক্রম চলবে।
বৌদ্ধ শাস্ত্র মতে, দীর্ঘ আড়াই হাজার বছর পূর্বে গৌতম বুদ্ধের উপাসিকা বিশাখা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চীবর তৈরির প্রচলন করেছিলেন। তিন মাস বৌদ্ধ ভিক্ষুদের বর্ষাবাস শেষে আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে কার্তিকী পূর্ণিমার মধ্যে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের চীবর দান করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বনভান্তের অনুপ্রেরণায় ১৯৭৬ সাল থেকে বুদ্ধের উপাসিকা বিশাখা প্রবর্তিত নিয়মে রাঙামাটি রাজবন বিহারে কঠিন চীবর দানোৎসব উদযাপিত হয়ে আসছে।
রাজবন বিহারের উপাসক-উপাসিক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অমিয় খীসা বলেন, ‘‘বৌদ্ধ যুগের আদলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চরকায় তুলা থেকে সুতা বের করে তাঁতে বুনে কাপড় তৈরি করা হয়। এই কাপড় বিশেষ কায়দায় সেলাই করে চীবর তৈরি করা হয়। তারপর তা বৌদ্ধ ভিক্ষুদের দান করা হয়। দান বছরের যেকোনো সময় করা যায়। কিন্তু, কঠিন চীবরদান করতে হয় আশ্বিনী পূর্ণিমা থেকে কার্তিকী পূর্ণিমার মধ্যে।’’
কঠিন চীবরদান উৎসবকে ঘিরে তিন পার্বত্য জেলা এবং চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বৌদ্ধধর্মাবলম্বীরা রাজবন বিহারে এসেছেন। তারা সঙ্গে নিয়ে আসছেন কাঠ ও বাঁশ দিয়ে তৈরি কৃত্রিম গাছে ঝোলানো নগদ টাকা, বই-খাতা, সুঁই-সুতাসহ নানা দানসামগ্রী। এটিকে তারা ‘কল্প তরু’ বলে ডাকে। অনেকে দল বেঁধে বাদ্য বাজিয়ে, বৌদ্ধধর্মীয় সংগীত গেয়ে বিহার প্রাঙ্গণে এসেছেন। রাতব্যাপী বুদ্ধ নাটক, পালা কীর্তন নানান অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয় বিহার প্রাঙ্গণে। দুদিনের অনুষ্ঠানে লাখো পূণ্যার্থী অংশগ্রহণ করবেন। এই উৎসব ঘিরে বিহার প্রাঙ্গণ জুড়ে গ্রামীণ মেলা বসেছে।
রাঙামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জাহেদুল ইসলাম বলেন, ‘‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সদস্যরা তৎপর রয়েছেন। পুরো অনুষ্ঠান ঘিরে তিন স্তরের নিরাপত্তা প্রদান করা হয়েছে। অনুষ্ঠান ঘিরে কোনো নাশকতার আশঙ্কা নেই।’’
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে বৌদ্ধ সাধকদের চীবর দান এবং সন্ধ্যায় হাজার বাতি উৎসর্গের মাধ্যমে এই উৎসব শেষ হবে।
ঢাকা/শংকর/রাজীব