মহাবিশ্বের রহস্যের শেষ নেই। আমাদের মিল্কিওয়ে ছায়াপথের (গ্যালাক্সির) প্রতিবেশী স্মল ম্যাগেলানিক ক্লাউড (এসএমসি) নামের একটি ছায়াপথের খোঁজ মিলেছে, যেটি ধীরে ধীরে ভেঙে যাচ্ছে। ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি মহাকাশ যান গাইয়ারের সংগ্রহ করা তথ্য বিশ্লেষণ করে এ তথ্য জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। দ্য অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল সাপ্লিমেন্ট সিরিজ সাময়িকীতে এ বিষয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, পৃথিবী থেকে প্রায় দুই লাখ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত স্মল ম্যাগেলানিক ক্লাউড নামের আকারে ছোট ছায়াপথটি আমাদের মিল্কিওয়ে ছায়াপথের চারপাশে ঘুরছে। তবে ছায়াপথটি বর্তমানে লার্জ ম্যাগেলানিক ক্লাউড (এলএমসি) নামের আরেকটি ছায়াপথের মহাকর্ষীয় আকর্ষণের কারণে ধীরে ধীরে ভেঙে যাচ্ছে। এর ফলে ছায়াপথটি অস্তিত্বের সংকটে পড়তে পারে।

আরও পড়ুনমিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির কেন্দ্রে রহস্যময় শক্তির খোঁজ১৭ মার্চ ২০২৫

জাপানের নাগোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিদ কেনগো তাচিহারা জানিয়েছেন, গভীরভাবে পরীক্ষা করে ছায়াপথটি ভেঙে যাওয়ার তথ্য জানা গেছে। এসএমসি ছায়াপথের বিভিন্ন নক্ষত্র ছায়াপথের উভয় পাশে সরে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে যেন এসব নক্ষত্রকে কেউ টান দিয়ে আলাদা করছে। কিছু নক্ষত্র বড় ছায়াপথের দিকে এগিয়ে আসছে। আবার কিছু দূরে সরে যাচ্ছে। আসলে এলএমসির মহাকর্ষীয় প্রভাবের কারণে এসএমসি ধীরে ধীরে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।

আরও পড়ুনছায়াপথে রহস্যময় বস্তুর সন্ধান, চিন্তায় বিজ্ঞানীরা২০ জুন ২০২৪

বিজ্ঞানীরা আরেকটি চমকপ্রদ আবিষ্কার করেছেন। তাঁরা দাবি করেছেন, এসএমসির মধ্যে থাকা বিশাল নক্ষত্র ছায়াপথের অক্ষের চারপাশে ঘুরছে না। এলএমসি ও এসএমসি আমাদের মিল্কিওয়ে ছায়াপথের প্রতিবেশী ৩০টি ছায়াপথের মধ্যে একটি। ছোট বামন ছায়াপথ হওয়া সত্ত্বেও এসএমসি ভীষণ উজ্জ্বল। দক্ষিণ গোলার্ধ ও বিষুবরেখার কাছাকাছি অঞ্চল থেকে খালি চোখে দেখা যায় ছায়াপথটি।

সূত্র: এনডিটিভি

আরও পড়ুনবিশাল এক ছায়াপথের সন্ধান দিল জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ১৯ মার্চ ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ছ য় পথ র

এছাড়াও পড়ুন:

দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না

মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।

আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।

বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’

এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।

জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।

গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্‌স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ